পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ধমক দিয়া উঠিলাম—“কি, বাক্য বুঝি কর্ণকুহরে প্রবেশ করল না? যাবি কোথায়? এখানে বসে আছ কোন বুদ্ধিতে? বাঘের পেটে যাবার মতলব করেছ বুঝি?”

 আমার এতগুলি প্রশ্ন উপর্য্যুপরি নিক্ষিপ্ত হইল এবং সামান্য কিছু কাজ হইল, তাহার প্রমাণও পাইলাম। নোংরা ছাতাপড়া দন্তপংক্তির ঈবৎ বিকাশ দেখা গেল এবং সেই ঈষৎ অবকাশের পথে একটি শব্দ নির্গত হইল। সঙ্গে সঙ্গে শ্রীমানের বাঁ হাতটা সম্মুখে প্রসারিত হইল, অর্থাৎ ছেলেটা হাত পাতিল।

 —“কি বলছ ধন, কিছুই যে বুঝতে পারছিনে। সভ্য ভাষায় বল, অন্ততঃ ইংরেজী না হয় হিন্দিতে বল না বাবা।”

 শরৎবাবু হাসিয়া ফেলিলেন।

 কহিলাম—“হাত বাড়িয়েছ কেন, চাঁদ? মতলবখানা কি?”

 বয়স অল্প হইলে কি হয়, বুদ্ধিটি দেখিলাম অল্প নয়। ভাষায় যখন কুলাইল না, তখন ছবির সাহায্য নিল। বাঁ হাতেই একটা কাল্পনিক চুরুট ধরিয়া ধূম্রপানের ও উদ্গীরণের প্রক্রিয়াটা রিহার্সেল দিয়া দেখাইল। আমার মুখের চুরুটটাই শ্রীমানের লোভটাকে চেতাইয়া তুলিয়াছে।

 —“হুঁ, সখ আছে, দেখছি। উঠে আর হারামজাদা।”

 পকেটে হাত দিতে গিয়া দেখি, র‍্যাপারের কটিবন্ধে পকেট চাপা পড়িয়াছে। র‍্যাপারটা ঢিলা করিয়া লইয়া বাক্স বাহির করিলাম। একটি সিগারেট বাহির করিয়া বাক্সটা পুনরার পকেটে রাখিলাম। সিগারেট দেখিয়া ছেলেটার চোখেমুখে আহ্লাদ নাচিয়া উঠিল।

 কহিলাম—“উঠে আয়, পাজি কোথাকার। এই বয়সেই চরিত্রের মাথাটি চর্বণ করে বসেছ?”

 শ্রীমান উঠিয়া কাছে আসিয়া দাঁড়াইল, বিনা বাক্যব্যয়ে বাড়াইয়া দিল।

৪৬