পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পরিবেষ্টিত হইয়া পাদ্রীর তনয় বক্‌সাফোর্টের কমাণ্ডাণ্ট আমাদের অভিমুখে আগমন করিতেছেন।

 পাইপটা মুখ হইতে সরাইয়া তিনি হাতে লইলেন এবং মহর্ষির দিকে ফিরিয়া কহিলেন—“জগদীশবাবু, এদের ভিতরে পাঠিয়ে দিন। মালপত্র পরে সার্চ করা যাবে।”

 মহর্ষি কহিলেন—“এঁরা তো চোদ্দজন, কোন নম্বরে পাঠাব?”

 সাহেব জবাব দিলেন—“পাঁচ নম্বরেই পাঠিয়ে দিন।”

 জেলে কোন নূতন আগন্তুক আসিলে অথবা আমরা এক জেল হইতে অন্য জেলে বদলী হইলে জেল কর্তৃপক্ষ আমাদিগকে ভিতরে পাঠাইয়া দিয়া দায়মুক্ত হইতেন। জেলের বন্ধুরাই কে কোথায় থাকিবে তার ব্যবস্থা করিয়া দিতেন। ফলে কাহাকেও ডাঙ্গায় তোলা মাছের মত অসুবিধায় ছটফট করিতে হইত না, আপন আপন বন্ধুদের বা চেনা লোকের পাশে থাকিবার সুযোগ সকলেই পাইত। কিন্তু এখানে দেখিতেছি বিপরীত ব্যবস্থা।

 সুতরাং সবিনয় নিবেদন করিলাম, “আমাদের ভিতরে পাঠাবার বন্দোবস্থ করুন, কে কোন নম্বরে থাকবেন, আমরাই ঠিক করে নেব।”

 সাহেব বলিলেন— “নো, তা হবে না। কে কোন সীটে থাকবে, আমিই ঠিক করে দেই।”

 বেশ, তাই সই,— হুজুরের যেমন আজ্ঞা। একবার ভিতরে যাই তো, তারপর আমরাও আছি, আর হুজুরের ঠিক করাও আছে। বলা বাহুলা কিছুদিনের মধ্যে সাহেবের সমস্ত ঠিক করা ওলট পালট করিয়া আমরা আমাদের সুবিধা ও ইচ্ছামত ব্যবস্থা করিয়া লইয়াছিলাম।

 ফিনী সাহেব এর পূর্বে রাজনৈতিক বন্দীদের লইয়া কারবার করেন নাই, এ বিষয়ে তাঁর কোন অভিজ্ঞতাই ছিল না, এ গেল প্রথম কথা। দ্বিতীয়তঃ তিনি বক্‌সা ফোর্টের কমাণ্ডাণ্টরূপে নিজেকে আমাদের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা

৭০