পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (তৃতীয় ভাগ).djvu/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૪૭ শৈবলিনী দেখিল, এ কি রূপ ! এই দীর্ঘ, শালতরু নিন্দিত, সুভুজবিশিষ্ট, সুন্দরগঠন, সুকুমারলাবণ্যময় এ দেহ ষে রূপের শিখর । এই ষে ললাট-প্রশস্ত, চন্দন-চচ্চিত, চিস্তারেখHবিশিষ্ট -এ যে সরস্বতীর শষ্যl, ইন্দ্রের রণভূমি, মদনের মুখকুঞ্জ, লক্ষ্মীর সিংহাসন ! ইহার কাছে প্রতাপ ? ছিঃ! ছি:! সমুদ্রের কাছে গঙ্গা ! ঐ যে নয়ন-জলিতেছে, হাসিতেছে, ফিরি তেছে,ভাসিতেছে -দীব, বিস্ফারিভ, তীব্ৰজ্যোতিঃস্থির, স্নেহময় করুণাময়, ঈষৎ রঙ্গপ্রিয়, সৰ্ব্বত্র তত্ত্ব জিজ্ঞাসু --ইহার কাছে কি প্রতাপের চক্ষু ? কেন আমি ভুলিলাম, কেন মঞ্জিলাম,—কেন মপিলাম ? এই যে সুন্দর সুকুমার বলিষ্ঠ দেহ– নবপত্র শাভিত শালতরু, মাধবীজড়িত দেবদারু, কুসুমপরিব্যাপ্ত পৰ্ব্বত, অৰ্দ্ধেক সৌন্দর্য্য, অদক শক্তি—আtধ চন্দ্র, আধ ভান্ত–অ।ধ গেীরা, আপ শঙ্কর –অ!ধ রাধ। BB BBSBB BBSS BB BB SBB BBBBS অlধ ছায়,--আ!ধ বহি, আৰু ধুম –কিসের প্র তাপ ? কেন না দেখিলাম – কেন মঞ্জিলীম –কেন মরিলাম ? সেই যে ভাষা পরিষ্কৃত, পরিস্ফুট হস্তপ্রদাপ্ত ব্যঙ্গরঞ্জিত, স্নেহপরিপ্লুত, মৃগু, মধুর, পরিশুদ্ধ-কিসের প্রতাপ ? কেন মজিলাম কেন মরিলাম –কেন কুল হারাইলাম ? সেই সে হাসি—ঐ পুস্পপারস্থিত মল্লিকারাশিতুলা, মেঘমণ্ডল বিহ্ব্যস্থল,—সুন্দংসরে দুর্গোৎসবতুল্য, আমার মুখস্বপ্নতুল্য – কন দেখিলাম না, কেন মজিলাম, কেন মরিলাম, কেন বুঝিলাম ন! ? সেই যে ভালবাস সমুদ্রতুল - অপার, অপরিমেয়, অতলস্পর্শ, আপনার বলে আপনি চঞ্চল — প্রশান্তভাবে স্থির, গম্ভীর, মধুৰ্যময় -চাঞ্চলে কুলপ্লাব, তরঙ্গভদ ভীষণ, অগম, অজেয়, ভয়ঙ্কর,--কেন বুঝিলাম ন}, কেন হৃদয়ে তুলিলাম না –কেন আপন। খইয়। প্রাপ দিলাম না ? কে আমি ? তাহার কি যোগ্য --বলিক, অজ্ঞান, আনক্ষর, অসৎ ; তাহীর মহিমাজ্ঞানে সশস্ত, তাহার কাছে আমি কে ? সমুদ্রে সুক, কুসুমে কট, চন্দ্রে কলঙ্ক, চরণুে রেণুকণ, তার কাছে আমি কে ? জীবনে কুস্বপ্ন, হৃদয়ে বিস্মৃতি, সুখে বিঘ্ন, আশায় অবিশ্বাস--তার কাছে আমি দুক ? সরোবরে কদম মৃণালে কণ্টক, পবনে ধূলি, অনলে পতঙ্গ, আমি মজিলাম--মরিলাম না কেন ? যে বলিয়াছিল, এইরূপে স্বামী প্যান কর, সে অনন্ত মানব-হৃদয়সমুদ্রের কাণ্ডারী—সৰ জানে । জানে যে, এই মন্ত্রে চিরপ্রবাহিত নদী তাদ্য খাদে চালান যায়—জানে যে, এ বজে পাষাণ ভাঙ্গে, এ গধুৰে সমুদ্র শুষ্ক হয়, এ মন্ত্রে বায়ু স্তম্ভিত হয় । শৈবলিনার - -- চিত্তে চিরপ্রবাহিত নদী ফিরিল, পাহাড় ভাঙ্গিল, সমুদ্র শোষিল, বায়ু স্তম্ভিত হইল । শৈবলিনী প্রতাপকে ভুলিয়। চন্দ্রশেখরকে ভালবাসিল । মনুষ্যর ইন্দ্রিয়ের পথ রোধ কর—ইন্দ্রিয় বিলুপ্ত কর —মনকে বাধ -বাধিয়। একটি পথে ছাড়িয়া দাও —অদ্য পথ বন্ধ কর-মনের শক্তি অপহৃত কর –মন কি করিবে ? সেই এক পথে যাইবে—তাহাতে স্থির হুইবে--তাহাতে মজিবে । শৈবলিনী পঞ্চম দিবসে আহরিত ফলমূল খাইল না—যষ্ঠ দিবসে ফল মূল আহরণে গেল না—সপ্তম দিবসে প্রাতে ভাবিল, স্বামিদর্শন পাই ন পাই—অদ্য মরিব । সপ্তম রাত্রে মনে করিল, হৃদয়মধ্যে পদ্মফুল ফুটিয়াছে—তাহাতে চন্দ্রশেখর যোগাসনে বসিয়া আছেন, শৈবলিণী ভ্রমর হইয়া পাদপদ্মে গুন গুন করিতেছে । সপ্তম রাত্রে সেই অন্ধকার নীরব শিলাককশ গুহামলো, একাকী স্বামিধান করিতে করিতে শৈবলির্মী ঢ়ে হন। সরাইল । সে ননি। বিধয় স্বপ্ন দেখিতে লাগিল । কখনও দখল, সে ভয়ঙ্কর নরকে ভুধিরাছে অগণিত শতগুস্তপরিমিত সৰ্পগণ অস্ত ক্ষণ বিস্তার করির। শৈবলিনাকে জড়াইয়। বীরতেছে ; অসুত মুণ্ডে মুখবাদান করিয়৷ শৈবলিনাকে গিলিতে আসিতেছে ; সকলের মিলি ই লিখসে প্রবণ বা তiার দ্যায়ু শব্দ ইষ্ট: গু:ছ । চন্দ্রশেখর আসিয়া, এক বুহুং সৰ্পের ফণায় চরণস্থাপন করিয়া দাড়াইলেন ; তখন সৰ্পসকল বঙ্গার জলের স্থায় সরিয়া গেল । কখন ও পখিল, এক অনস্ত কুণ্ডে পদ তাকার অগ্নি - -سیس - ششم ت: .V - - -- ے ۔۔۔۔ -۔ ٤ সলিতেছে ; আকাশে তাই1র শিখ। উঠিতেছে ; শৈবলিন ত{হার মধ্যে দ’ হইতেছে ; এমন সময়ে bন্দ্র শখর আসর। সেই অগ্নিপদী তধ্যে এক গধুষ জল নিক্ষেপ করিলেন, ‘আমনি অধিরাশি নিবিয়া গেল ; শীতল পবন বহিল ; কুণ্ডমপে স্বচ্ছসলিল শুরুতরবহুিল নদী বহিল ; ওরে কুসুমসকল বিকসিত হইল । নদীজলে বড় বড় পদ্মফুল ফুটিল-চন্দ্রশেখর তাহার উপর পাড়াইয়। ভাসিয়। যাইতে লাগিলেন । কখনও দেখিলেন, এক প্রক।ণ্ড ব্যাঘ্ৰ আসিয়। শৈবলিনাকে মুখে করিয়া তুলিয়। পৰ্ব্বতে লইয়। দৃষ্টিতেছে ; চন্দ্রশেখর আসিয়। পুঞ্জার পুষ্পপার হইতে একটি পুষ্প লইয়া ব্যাসকে ফেলিয়। মারিলেন, ব্যাঘ্র তখনই ভিন্নশিরা কৃষ্টয় প্রাণত্যাগ করিল। শৈবলিনী দেখিল, তাহার মুখ ফষ্টরের মুখের স্তায় । রাত্রিশেষে শৈবলিনা দেখিলেন, শৈবলিনীর মৃত্যু হইয়াছে ; অথচ জ্ঞান আছে । দেখিলেন, পিশাচে তাহার দেহ লইয়। অন্ধকারে শূন্তপথে উড়িতেছে ।