পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (তৃতীয় ভাগ).djvu/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কপালকুণ্ডল পেষ মন কহিল, “আপনার উদ্দেশু কি ?” লুৎফউন্নিসা কহিলেন, “আপাততঃ কপালকুণ্ডলার সহিত স্বামীর চিরবিচ্ছেদ । পরে তিনি আমার হইবেন ।” - পে । বিবি ! ভাল করিয়া বিবেচনা করুন ; সে নিবিড় বন, রাত্ৰি আগত ; আপনি একাকিনী ! লুৎফউন্নিসা এ কথার কোন উত্তর না করিয়া গুহ হইতে বহির্গত হইলেন । সপ্তগ্রামের ষে জনহীন বনময় উপনগর প্রান্তে নবকুমারের বসতি, সেই দিকে চলিলেন । তৎপ্রদেশে উপনীত হইতে রাত্রি হইয়৷ আসিল । নবকুমারের বাটীর অনতিদূরে এক নিবিড় বন আছে, পাঠক মহাশয়ের স্মরণ হইতে পারে। তাহারই প্রান্তভাগে উপনীত হইয়া এক বৃক্ষতলে উপবেশন করিলেন । কিছুকাল বসিয়া ষে দুঃসাহসিক কার্য্যে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন, t)(که তদ্বিষয়ে চিন্ত করিতে লাগিলেন । ঘটনাক্রমে র্তাহার অননুভূতপূৰ্ব্ব সহায় উপস্থিত হইল । লুৎফউন্নিসা যথায় বসিয়াছিলেন, তথা হইতে এক অনবরত সমানোচারিত মনুষ্যকণ্ঠনির্গত শব্দ শুনিতে পাইলেন । উঠিয়া দাড়াইয়া চারিদিক্‌ চাহিয়৷ দেখিলেন যে, বনমধ্যে একটি আলো দেখা যাইতেছে। , লুৎফউল্লিস। সাহসে পুরুষের অধিক, যথায় আলো জলিতেছে, সেই স্থানে গেলেন । প্রথমে বৃক্ষান্তরাল হইতে দেখিলেন, ব্যাপার কি ? দেখিলেন যে, যে আলো জলিতেছিল, সে হোমের অালে ; যে শব্দ শুনিতে পাইয়াছিলেন, সে মন্ত্রপাঠের শব্দ । মন্ত্রমধ্যে একটি শব্দ বুঝিতে পারিলেন, সে একটি নাম । নাম শুনিবামাত্র লুৎফউন্নিসা হোমকারীর নিকটে গিয়া বসিলেন । এক্ষণে তিনি তথায় বসিয় থাকুন, পাঠক মহাশয় বহুকাল কপালকুণ্ডলার কোন সংবাদ পান নাই, সুতরাং কপালকুণ্ডলার সংবাদ আবখ্যক হইয়াছে।