বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দুর্গেশনন্দিনী y কার্য্যে প্রস্তুত, এখন কাহাকে রাখিযু কাহীকে "ז ללן" এক জন পারিষদ সহস্তে কহিল, “মহারাজ ! অনেকে ষে এ কাৰ্য্যে উদ্যত হইয়াছেন, সে ভালই হইয়াছে । এই উপলক্ষে সেনাব্যয়ের অল্পতা করিতে পারিবেন । ধিনি সৰ্ব্বাপেক্ষ ক্ষুদ্র সেনা লইয়া ষাইতে স্বীকৃত হয়েন, র্তাহাকেই রাজকাৰ্য্যসাধনের ভার দিউন " রাজা কছিলেন, “এ উত্তম পরামর্শ ” পরে প্রথম উদ্যমকারীকে জিজ্ঞাস করিলেন, “তুমি কতসংখ্যক সেনা লইয়া যাইতে ইচ্ছা কর ?” সেনাপতি কহিলেন, “পঞ্চদশ সহস্ৰ -পদাতিবলে রাজকাৰ্য্য উদ্ধার করিব ” রাজা কহিলেন, "এ শিবির হইতে পঞ্চদশ সহস্ৰ ভগ্ন করিলে অপিক থাকে না । কোন বীর দশ সহস্ৰ লইয়। খুদ্ধে যাত্রা করিতে চাহে ?” সেনাপতিগণ নীর স্ব রহিলেন । পরিশেযে রাজার প্রিয়পাত্র যশোবন্তসিংহ নামক রাজপুত যোদ্ধ রাজদেশ পালন করিতে অনুমতি প্রাথিত হইলেন । রাজা হৃষ্টচিত্তে সকলের প্রতি দৃষ্টপাত করিতে লাগিলেন । কুমার জগংসিংহ তাহার দৃষ্টি অভিলাষী হইয়া দাড়াইলেন, তৎপ্রতি রাজার দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত হুইবামাত্র তিনি বিনীতভাবে কহিলেন, “মহারাজ ! রাজপ্রসাদ হইলে এ দাস পঞ্চ সহস্ৰ সহায়ে কতলু খাকে সুবর্ণরেখা-পারে রাখিয়া আইসে ” রাজা মানসিংহ অবাক হইলেন, সেনাপতিগণ কানাকানি করিতে লাগিলেন । ক্ষণে ক্ষ পরে রাজা কহিলেন,—“পুল ! আমি জানি যে, তুমি রাজপুতকুলের গরিম ; কিন্তু তুমি অন্যায় সাহস করিতেছ ” জগতসিংহ বন্ধঃঞ্জলি হইয়া কহিলেন,—“ঘদি প্রতিজ্ঞাপালন না করিয়া বাদশাহের সেনাবল অপচয় করি, তবে রাজদণ্ডে দণ্ডনীয় হইব ।” রাজা মানসিংহ কিয়ৎক্ষণ চিন্তা করিয়া কহিলেন; —“আমি তোমার রাজপুতকুলধৰ্ম্ম-প্রতিপালনের ব্যাঘাত করিব না ; তুমিই এ কার্য্যে যাত্রা কর /* এই বলিয়া রাজকুমারকে বাষ্পাকুললোচনে গাঢ় আলিঙ্গন করিয়া বিদায় করিলেন । সেনাপতিগণ স্ব স্ব শিবিরে গেলেন । ३ङ्ग-२ পঞ্চম পরিচ্ছেদ । 3ళ్ల গণ্ডু মাiনfারণ ষে পথে বিষ্ণুপুর প্রদেশ হইতে জগৎসিংহ জাহানীবাদে প্রত্যাগমন করিয়াছিলেন, সেই পথের চিহ্ন অছাপি বর্তমান আছে । তাহার কিঞ্চিৎ দক্ষিণে মান্দারণ গ্রাম । মান্দারণ এক্ষণে ক্ষুদ্র গ্রাম, কিন্তু তৎকালে ইহা সৌষ্ঠবশালী নগর ছিল । যে রমণীদিগের সহিত জগৎসিংহের মন্দিরমধ্যে সাক্ষাৎ হয়, র্তাহারা মন্দির হইতে যাত্র করিয়া এই গ্রামাভিমুখে গমন করেন । গড়মান্দারণে কয়েকটি প্রাচীন দুর্গ ছিল । এই জন্যই তাহার নাম গড়ামান্দারণ হইয়া থাকিৰে । নগরমধ্যে আমোদর নদী প্রবাহিত ; এক স্থানে নদীর গতি এতাদৃশ বক্রতা প্রাপ্ত হইয়াছিল ষে, তদ্বারা পাশ্বস্থ এক খণ্ড ত্রিকোণ ভুমির দুই দিক্‌ বেষ্টিত হইয়াছিল ; তৃতীয় দিকে মানবহুস্ত নিখাত এক গড় ছিল ; এই ত্রিকোণ-ভূমিখণ্ডের অগ্রদেশে যথায় নদীর বক্রগতি আরস্ত হইয়াছে, তথায় এক বৃহৎ দুর্গ জল হইতে আকাশপথে উত্থান করিয়া বিরাজমান ছিল। অট্টালিকা আমূলশিরঃ কৃষ্ণপ্রস্তরনিৰ্ম্মিত ; দুই দিকে প্রবল নদীপ্রবাহ দুর্গমূল প্ৰহত করিত । অদ্যপি পর্যাটক গড়-মান্দারণ গ্রামে এই আয়াসলজ্য দুর্গের বিশাল স্ত,প দেখিতে পাইবেন। দুর্গের নিম্নভাগমাত্র এক্ষণে বর্তমান আছে ; অট্টালিকা কালের করাল স্পর্শে ধূলিরাশি হইয়া গিয়াছে : তদুপরি তিন্তিড়ী, মাধবী প্রভৃতি বৃক্ষ ও লতাসকল কাননাকারে বহুদুর ভুজঙ্গ-ভলুকাদি হিংস্র পশুগণকে আশ্রয় দিতেছে । নদীপারে অপর কয়েকটা দুর্গ ছিল । বাঙ্গালার পাঠান সম্রাট্রদিগের শিরোভূষণ হোসেন শাহার বিখ্যাত সেনাপতি ইসমাইল গাজি এই দুর্গ নিৰ্ম্মাণ করেন । কিন্তু কালক্রমে জয়ধরসিংহ নামে এক জন হিন্দু সৈনিক ইহা জায়গীর পান । এক্ষণে বীরেন্দ্ৰসিংহনামা জয়ধর সিংহের এক জন উত্তরপুরুষ এখানে বসতি করিতেন । যৌবনকালে বীরেন্দ্রসিংহের পিতার সহিত সম্প্রীতি ছিল না । বীরেন্দ্ৰসিংহ স্বভাবতঃ দাম্ভিক এবং অধীর ছিলেন, পিতার আদেশ কদাচিৎ প্রতিপালন করিতেন, এ জন্ত পিতাপুত্ৰে সৰ্ব্বদা বিবাদ-বচল হইত। পুত্রের বিবাহাৰ্থ বৃদ্ধ ভূস্বামী নিকটস্থ স্বজাতীয় অপর কোন ভূস্বামি-কন্যার সহিত সম্বন্ধ স্থির করি । লেন । কন্যার পিতা পুত্রহীন, এ জন্য এই বিৰাজে