পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

琴 曼 গ্রেহপূর্ণ স্থিরদৃষ্টি, প্রমত্ত চক্ষু দেখিয়া ভ্রমর ভাবিত, ধুৰি, এ সমুদ্র আমার ইহজীবনে আমি সাতার দিয়া পিার হইতে পারিব ন—ষে চাহনি দেখিয়া গোবিন্দ লৈাল ভাবিয়া ভাবিয়া এ সংসার সকল ভুলিয়া যাইত, সে চাহনি আর নাই । সে সকল প্রিয় সম্বোধন আর নাই—সে “প্ৰমর”, “ভোমরা”, “ভোমর”, “ভোম”, “ভুমরি”, “ভূমি”, “ভূম”, “ভো” “ভোং”-সে সব নিত্য নুতন, নিত্য স্নেহপূর্ণ, রঙ্গপূর্ণ, মুখপূর্ণ সম্বো ধন আর নাই। সে কালো, কাল, কলার্চাদ, কেলেসোনা, কালোমাণিক, কালিন্দী, কালিয়ে—সে প্রিয়সম্বোধন আর নাই । সে ও, ওগে, ওহে, ওলো, —লে প্রিয়সম্বোধন আর নাই । সে মিছামিছি ডাকাডাকি আর নাই। সে মিছামিছি বকীবকি আর নাই । সে কথা কহার প্রণালী আর নাই । আগে কথা কুলাইত না-এখন তাহা খুজিয়৷ জানিতে হয় । যে কথা অৰ্দ্ধেক ভাষায়, অৰ্দ্ধেক নয়নে নয়নে, অধরে অধরে প্রকাশ পাইত, এখন *সে কথা উঠিয়া গিয়াছে। যে কখ। বলিবার প্রয়োজন নাই, কেবল উত্তরে কণ্ঠস্বর শুনিবার .প্রয়োজন এখন সে কথ। উঠিয়। গিয়াছে। আগে যখন গেবিন্দলাল ভ্রমর একত্র থাকিত, তখন গোবিন্দলালকে ডাকিলে কেহ সহজে পাইত নভ্রমরকে ডাকিলে একেবারে পাইত না । এখন ডাকিতে হয় না-হয় “বড় গরমি", নয় “কে ডাকি তেছে” বলিয়। এক জন উঠিয়া যায়। সে সুন্দর পূর্ণিম মেঘে ঢাকিয়াছে। কাৰ্ত্তিক রাকায় গ্রহণ লাগিয়াছে, কে খাটী সোনায় দস্তার খাদ মিশাইয়াছে, কে স্বরবাধ যন্ত্রের তার কাটিয়াছে । আর সেই মধ্যাহ্নরবিকরপ্রফুল্ল হৃদয়মধ্যে অন্ধকার হইয়াছে । গোবিন্দলাল সে অন্ধকারে আলো করিবার জন্য ভাবিত রোহিণী, ভ্রমর সে ঘোর, মহাঘোর অন্ধকারে আলো করিবার জন্য ভাবিত—ষম ! নিরাশ্রয়ের আশ্রয়, অগতির গতি, প্রেমশূন্যের প্রতিস্থান তুমি যম! চিত্তবিনোদন, দুঃখবিনাশন, বিপদ ভঞ্জন দীনরঞ্জন তুমি যম । আশাশূন্যের আশা, ভালবাসাশূন্যের ভালবাসা, তুমি যম! ভ্রমরকে গ্রহণ কর, হে যম ! অষ্টাবিংশতিতম পরিচ্ছেদ তার পর কৃষ্ণকান্ত রায়ের ভারি শ্রাদ্ধ হইয়া গেল। শত্রুপক্ষ বলিল যে, “হা, ঘট হইয়াছে বটে, পাচ সাত দশ হাজার টাকা ব্যয় হইয়া গিয়াছে।” 氮、唱:·°,- و شاید هدیه - ۰ - * * * * * * * * به ی » * ها و الهه **ی :భ్మి:P4. . . - ' ' on - - |1 § - ----- মিত্রপক্ষ বলিল, “লক্ষ টাকা খরচ হইয়াছে", কৃষ্ণকাস্তের উত্তরাধিকারিগণ মিত্রপক্ষের নিকটে গোপনে বলিল, “আন্দাজ পঞ্চাশ হাজার টাকা ব্যয় হইয়াছে।” আমরা খাত দেখিয়াছি, মোট ব্যয় ৩২৩৫৬/১২॥ । যাহা হউক, দিনকতক বড় হাঙ্গাম! গেল । হরলাল শ্রদ্ধাধিকারী, আসিয়া শ্রাদ্ধ করিল। দিনকতক মাছির ভম্‌ভনানিতে, তৈজসের ঝনঝনানিতে, কাঙ্গালীর কোলাহলে নৈয়ায়িকের বিচারে গ্রামে কান পাতা গেল না । সন্দেশ-মিঠাইয়ের আমদানী, কাঙ্গালীর আমদানী, টিকি-নামাবলীর আমদানী, কুটুম্বের কুটুম্ব, তস্ত কুটুম্বের আমদানী। ছেলেগুলে মিহিদান সীতাভোগ লইয়া ভাট খেলাইতে আরম্ভ করিল ; মাগীগুলা নারিকেলতৈল মহার্ঘ্য দেখিয়৷ মাথায় লুচি-ভাজ। ঘি মাখিতে আরম্ভ করিল, গুলীর দোকান বন্ধ হইল, সব গুলীখোর ফলাহারে । মদের দোকান বন্ধ হইল, সব মাতাল টিকি রাখিয় নামাবলী কিনিয়া উপস্থিত পত্রে বিদায় লইতে গিয়াছে । চাল মহাৰ্ঘ্য হইল, কেন না, কেবল অন্নব্যয় নয়, এত ময়দ খরচ যে আর ঢালের গুড়িতে কুলান যায় না । এত স্বতের খরচ যে, রোগীর। আর কাষ্টর অয়েল পায় ন ; গোয়ালার কাছে ঘোল কিনিতে গেলে তাহার। বলিতে আরম্ভ করিল, “আমার ঘোলটুকু ব্রাহ্মণের আশীৰ্ব্বাদে দই হইয়া গিয়াছে ” কোনমতে শ্রাদ্ধের গোল থামিল । শেষ উইল পড়ার মন্ত্রণ। আরম্ভ করিল ! উইল পড়িয়৷ হরলাল দেখিলেন, উইলে বিস্তর সাক্ষী, কোন গোল করিবার সম্ভাবন নাই । হরলাল শ্রাদ্ধাস্তে স্বস্থানে গমন করিলেন । উইল পড়িয়া আসিয়৷ গোবিন্দলাল ভ্রমরকে বলিলেন, “উইলের কথা শুনিয়াছ ?” ভ্র । কি ? গো । তোমার অৰ্দ্ধাংশ । ভ্র । আমার না তোমার ? গো । এখন আমার তোমার একটু প্রভেদ হইয়াছে । আমার নয়,– তোমার । ভ্র । তাহ হইলেই তোমার । গো । তোমার বিষয় আমি ভোগ করিব না। ভ্রমরের বড়ই কান্না আসিল ; কিন্তু ভ্রমর অহঙ্কারের বশীভূত হুইয়। রোদন সংবরণ করিয়া বলিল, “তবে কি করিবে ?” গে| যাহাতে দুই পয়সা উপার্জন করিয়া দিনপাত করিতে পারি, তাহাই করিব । ভ্র । সে কি ?