পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণকাস্তের উইল আসিলেন । বালিকার অতি সরল যে প্রীতি আকৃত্রিম, উদ্বেলিত, কথায় কথাষ ব্যক্ত, যাহার প্রবাহ দিনরাত্রি ছুটিতেছে, ভ্রমরের কাছে সেই অমূল্য প্রতি পাইয়। গোবিন্দলাল সুখী হইয়াছিলেন, গোবিন্দলালের এখন তাহা মনে পড়িল । মনে পড়িল ষে, যাহা ত্যাগ করিলেন, তাহ। আর পৃথিবীতে পাইবেন না । ভাবিলেন, ষাহা করিয়াছি, তাঙ্গ আর এখন ফিরে ন—এখন ত যাই, এখন যাত্রা করিয়াছি, এখন যাই, বুঝি আর ফেরা হইবে না । যাই হউক, যাত্রা করিয়াছি, এখন যাই । সেই সময় যদি গোবিন্দলাল দুই প। ফিরিয়া গিয়া ভ্রমরের রুদ্ধদ্বার ঠেলিয়া একবার বলিতেন--"ভ্রমর ! so o আমি আবার আসিয়াছি," তবে সকল মিটিত । গোবিন্দলালের অনেকবার সে ইচ্ছা হইয়াছিল। ইচ্ছা! হইলেও তাহা করিলেন না। ইচ্ছা হইলেও একটু লজ্জা করিল । ভাবিলেন, এত তাড়াতাড়ি কি ? যখন মনে করিব, তখন ফিরিব। ভ্রমরের কাছে গোবিন্দলাল অপ রাণী ! আবার ভ্রমরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিতে সাহস । হইল না । যাহা হয়, একটা স্থির করিবার বুদ্ধি হইল না । যে পথে যাইতেছেন, সেই পথে চলিলেন, তিনি চিন্তাকে বর্জন করিয়া বাহিৰ্ব্বাটীতে আসিয়া সজ্জিত অশ্বে আরোহণ পূৰ্ব্বক কশাঘাত করিলেন। পথে যাইতে যাইতে রোহিণীর রূপরাশি হৃদয়মধ্যে ফুটিয়া উঠিল ।