(ke রোহিণীর মত সকল কথা দাড়াইয়। শুনিতেছিল। নিশাকর উঠিয় গেলেই রোহিণী পর্দার পাশ হইতে মুখ বাহির করিয়া আঙ্গুলির ইসারান্ন রূপোকে ডাকিল ৷ রূপে। কাছে আসিলে তাহাকে কনে কানে বলিল, “ষ বলি, তা পারবি ? বাবুকে সকল কথা লুকাইতে হুইবে । বাহু করিবি, তাহ যদি বাবু কিছু না জানিতে পারেন, তবে তোকে পাচ টাক বক্শিস দিব ।” রূপে মনে ভাবিল, আজ ন জানি উঠিয়া কার মুখ দেখিয়াছিলমে—আজ ত দেখছি, টাক। রেজি গারের দিন, গরিব মানুষের দুই পয়স। এলেই ভাল, প্রকাশ্যে বলিল, “য বলিবেন, তাই পারিব । কি আজ্ঞা করুন |" • রো। ঐ বাবুর সঙ্গে সঙ্গে নামিয়া যা, উনি আমার বাপের বাড়ীর দেশ থেকে এসেছেন । সেখান কার কোন সংবাদ আমি কখনও পাই না, –তার জষ্ঠ কত কাদি । যদি দেশ থেকে একটি লোক এসেছে, তাকে একবার আপনার জনের ফুটে খবর জিজ্ঞাসা করবে। বাবু ত রেগে ওকে উঠিয়ে দিলেন । তুই গিয়ে তাকে বসা । এমন জায়গায় বসা, যেন বাবু নীচে গেলে না দেখিতে পান । আর কেহ ন দেখিতে পায়। আমি একটু নিরিবিলি পেলেই যাব । যদি বসতে না চায়, তবে কাকুতি-মিনতি করিস।” রূপে বকৃশিসের গন্ধ পাইয়াছে –“যে তাজ্ঞ।" বলিয়া ছুটিল । নিশাকর কি অভিপ্রায়ে গোবিন্দলালকে ছলিতে আসিয়াছিল, তাহ বলিতে পারি না । কিন্তু তিনি নীচে আসিয়া যেরূপ আচরণ করিতেছিলেন, তাহ। বুদ্ধিমানে দেখিলে তাহাকে বড় অবিশ্বাস করিত । তিনি গৃহপ্রবেশদ্বারের কবীট, খিল, কক্স প্রভৃতি পৰ্য্যবেক্ষণ করিয়া দেখিতেছিলেন । এমন সময়ে রূপো খানসাম! আসিয়া উপস্থিত হইল । রূপে বলিল, “তামাকু ইচ্ছা করিবেন কি ?” নিশা । বাবু ত দিলেন না, ঢাকরের কাছে খাব কি ? রূপে। । অজ্ঞ, তা নয় - একটা নিরিবিলি কথা আছে। একটু নিরিবিলিতে আসুন । রূপে নিশাকরকে সঙ্গে করিয়| আপনার নির্জন ঘরে লইয়া গেল । নিশাকরও বিন ওজর-আপত্তিতে গেলেন । সেখানে নিশাকরকে বসিতে দিয়া, যাহ। রোহিণী বলিয়াছিল, রূপচাদ তাহ বলিল । নিশাকর আকাশের চাদ হাত বাড়াইয়। পাইলেন । নিজ অভিপ্রায়সিদ্ধির অতি সহজ উপায়ু বঙ্কিমচন্দ্রের গ্রন্থাবলী দেখিতে পাইলেন । বলিলেন, “বাপু, ভোমার মুনিব ত আমায় তাড়িয়ে দিয়েছেন, আমি তার বাড়ীতে লুকাইয়। থাকি কি প্রকারে ?” রূপে। । আজ্ঞে, তিনি কিছু জানিতে পারিবেন এ ঘরে তিনি কখনও আসেন না । নিশা । না আসুন, কিন্তু যখন তোমার মাতাঠাকুরাণী নীচে আসবেন, তখন যদি তোমার বাবু ভাবেন, কোথায় গেল দেখি ? যদি তাই ভাবিয়া পিছু পিছু আসেন ; কি কোন রকমে যদি আমার কাছে তোমার মাঠাকুরাণীকে দেখেন, তবে আমার দশাট কি হবে বল দেখি? রূপচাদ চুপ করিয়া রহিল ; নিশাকর বলিতে লাগিলেন, “এই মাঠের মাঝখানে ঘরে পুরিয়। আমাকে পুন করির এই বাগানে পুতিয়া রাখিলেও আমার মা বলতে নাই, বাপ বলুতেও নাই । তখন তুমিষ্ট আমাকে ’ঘ। লাঠি মারিবে -অতএব এমন কাজে আমি নাই ! তোমার মাকে বুঝাইয়। বলিও যে, আমি ইঙ্গ। পারিব না, আর একটি কথ। বলিও । न { । তাহার খুড়। আমাকে কতকগুলি অতি ভারি কথা বলিতে বলিয়। দিয়াছিল । আমি তোমার মাতাঠাকুরাণীকে সেই কথা বলিবার জন্য বড়ষ্ট ব্যস্ত ছিলাম ; কিন্তু তোমার বাধু আমাকে তাড়াইল্লা দিলেন । আমার বলা হইল না, আমি ঢলিলাম।” রূপে দেখিল, পাঁচ টাকা হাতছাড়া হয় । বলিল, “আচ্ছ, তা এখানে ন বসেন, বাহিরে একটু তফাতে বসিতে পারেন না ?” নিশা । আমি ও সেই কথা ভাবিভেছিলাম । আসিবার সময় তোমাদের কুঠীর নিকটে নদীর ধারে একটা ধাপ। ঘাট, তাহার কাছে গুষ্টট বকুলগাছ দেখিয়| আসিয়াছি । চেন সে জায়গা ? রূপে। । চিনি । নিশা । আমি গিয়! সেইখানে বসিয়া থাকি ] সন্ধা! তইয়াছে রাশি ইষ্টলে, সেখানে বসিয়া থাকিলে বড় কেহু দেখিতে পাইবে না । তোমার মাতাঠাকুরাণী যদি সেইখানে অসিতে পারেন, তবেই সকল সংবাদ পাইবেন । ভেমন তেমন দেখিলে আমি পলাইয় প্রাণরক্ষা করিতে পারিব । ঘরে পুরিয়৷ ষে আমাকে কুকুরমার করিবে, আমি তাহাতে বড় রাজি নহি । অগত্যা রূপে। চাকর রোহিণীর কাছে গিয়া, নিশাকর যেমন বলিল, তাহা নিবেদন করিল। এখন রোহিণীর মনের ভাব কি, তাহা আমরা বলিতে পারি
পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/১৩০
অবয়ব