পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণকাম্ভের উইল না । যখন মানুষে নিজে নিজের মনের ভাব বুঝিতে পারে ন—আমরা কেমন করিয়া বলিব ষে, রোহিণীর মনের ভাব এই । রোহিণী ব্ৰহ্মাননাকে এত ভালবাসিত যে, তাহার সংবাদ লক্টবার জন্য দিগ বিদিক্‌ জ্ঞানশূন্ত হইবে, এমন খবর আমর। রাখি না । বুঝি আরও কিছু ছিল । একটু তাকাতাকি আঁচ-তাচি হইয়াছিল । রোহিণী দেখিয়াছিল যে, নিশাকর রূপবান –পটলচের। চোখ । রোহিণী দেখিয়ছিল যে, মনুষ্যমধ্যে নিশাকর একজন মল্লম্বন্ধে প্রপান । রোহিণীর মনে মনে দৃঢ়সঙ্কল্প ছিল যে, আমি গোবিন্দলালের কাছে বিশ্বাসহৰ্মা গুইব না-—কিন্তু বিশ্বাসহানি এক কথ। --অর এ আর এক কথ। । বুঝি সেই মহাপাপিষ্ঠ মনে করিয়াছিল, “অনবধান মুগ পাইলে কোন বাল বাপ-ব্যবসায়ী হইয়। তাহাকে ল শরসিদ্ধ করিবে ?" ভাবিয়াছিল, “নারী হইয়। জয় পুরুম দেখিলে কোন নারা ন। তাহাকে জয় করিতে কামন! করিবে ?” বাঘ গরু মারে, সকল গরু খায় ন! ! স্ত্রীলোকও পুরুষয়ক জয় করে কেবল জয়পতাক। উড়াইবার জঙ্গ । অনেকে মাছ ধবে কেবল মাছ ধরিবার জন্য. মাছ খায় না, বিল।ইয়! দেয় । অনেকে পার্থী মারে, কেবল মারিধার জন্স-–মারিয়! মলিয়। দেয় । শিকার কেবল শিকারের ক্রেত্য, খাইবার জন্স নহে ৷ জলি ল! ত{হাতে কি রস আছে । রাহিণী ভাবিয়া থাকিবে- “সদি এই আয়তলে{টন মুগ এষ্ট প্রসাদপুবকাননে আসিয়া পড়িয়াছে-ভবে কেন ন! তাহাকে শরসিদ্ধ করিয়া ছাড়িয় দি ক " জ্ঞানি না, এই পাপীয়সার পাপচিত্তে কি উদয় হইয়াছিল--কিন্তু রোহিণী স্বাকৃত ষ্টল ম্ প্রদোসকলে অবকাশ পাইলেক্ট, গোপনে চিলার পাঘাটে একাকিনী সে নিশাকরের নিকট গিয়া খুল্লতাভের সংবাদ শুনিবে । রূপচাদ আসিয়। সে কথ। নিশাকরের কাছে বলিল । নিশাকর শুনিয়া পাবুে ধারে আসিয়। হুর্যোৎফুল্লমনে গারোখান করিলেন । অষ্টম পরিচ্ছেদ রূপে সরিয়া গেলে নিশাকর সোনাকে ডাকিয়। বলিলেন, “তোমরা বাবর কাছে কত দিন আছ ?” সোনা । এই—যত দিন এখানে এসেছেন, তত দিন আছি । নিশা । তবে অল্পদিনই ? পাও কি ? সোনা । তিন টাকা মাহিয়ানা, খোরাকপোষাক । רכ-sס স্বীকার করিয়াছি । 6 S. নিশা । এত অল্প বেতনে তোমাদের মত খানসামার পোষায় কি ? কথাটা শুনিয়| সোন খানসামা গলিয়া গেল, বলিল, “কি করি, এখানে কোথায় চাকরী জোটে ?” নিশা ? চাকরীর ভাবনা কি ? . আমাদের দেশে গেলে তোমাদের লুপে নেয় । পাচ, সাত, দশ টাকা অনায়াসেক্ট মাসে পা ও । সোনা । অল্প গ্ৰহ করিয়া যদি সঙ্গে লইয়া যান । নিশা । নিয়ে গেলে যাবে কি, অমন মুনিবের চাকরী ছাড়বে ? যান । মুনিব মন্দ নয়, কিন্তু মুনিব-ঠাকুরুণ বড় হীরামজাদ । নিশ। । হাতে হাতে তার প্রমাণ আমি পেয়েছি । আমার সঙ্গে তোমার স। ওয়াই স্থির ত ? সামা ; স্থির বৈ কি । নিশ ; তবে যাবার সময় তোমার মুনিবের একটি উপকার করিয়৷ যাও । কিন্তু বড় সাবধানের কাজ, পারলে কি ? সেনি। ভাল কাজ হয় ত পারব না কেন ? নিশা । তামার মুনিবের পক্ষে ভাল, মুনিবনীর পক্ষে বস্তু মন্দ । সোন । তবে এখনই বলুন, বিলম্বে কাজ নাই, তাতে আমি বড় রাজি । নিশা । ঠাকুরুণটি আমাকে বলিয়। পাঠাইয়াছেন, চিত্রার সাধাঘাটে বসিয়! থাকিতে,—-রাত্রে আমার সঙ্গে গোপনে সাক্ষ৷২ করিবেন । বুঝেছ ? আমিও আমার অভিপ্রায় সে, তোমার মুনিবের চোখ ফুটায়ে দিই ! তুমি আস্তে আস্তে কথাটি তোমার মুনিবকে জানিয়ে আসতে পার ? সোন। । এখনি –ও পাপ মলেই বাচি । নিশ। । এখন নয়, এখন আমি ঘাটে গিয়া বসিয়৷ থাকি । তুমি সতর্ক থেকে । যখন দেখবে, ঠাকুরুণটি ঘাটের দিকে চলিলেন, তখন গিয়া তোমার মুনিবকে বলিয়া দিও । রূপে। কিছু জানিতে না পারে । তার পর আমার সঙ্গে জুটে । “ষে আন্দ্রে” বলিয়। সোনা নিশাকরের পায়ের ধূলা গ্রহণ করিল । তখন নিশাকর হেলিতে দুলিতে গজেন্দ্রগমনে চিত্রাতীরশোভী সোপানাবলীর উপর গিয়া বসিলেন । অন্ধকারে নক্ষত্রচ্ছায়াপ্রদীপ্ত চিত্রবারি নীরবে চলিতেছে । চারিদিকে শৃগালকুকুরাদি বহুবিধ রব করিতেছে। কোথাও দূরবর্তী নৌকার উপর বসিয়া ধীবর উচ্চৈঃস্বরে শু্যামাবিষয় গায়িতেছে । তদ্ভিন্ন সেই বিজন প্রাস্তরমধ্যে কোন শব্দ শুনা