পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাধীরাণী & প্তাবধি রুক্মিণীকুমারের একটি মানসিক প্রতিম। গড়িয় আপনার মনে তাহ৷ স্থাপিত করিয়াছে । যেমন দেবতাকে লোকে পূজা করে, রাপারাণী সেই প্রতিম। তেমনি করিয়া প্রত্যহ মনে মনে পূজা করে ; এই পাচ বৎসর রাধারাণী আমাদের বাড়া আসিয়াছে, এই পাঁচ বৎসর এমন দিন প্রায়ই যায় নাই নে, রাধারাণী রুক্মিণীকুমারের কথা আমার সাক্ষাতে একবারও ধলে নাই । আর কেহ রাধীরাণীকে বিবাহ করিলে তাহার স্বামী মুখী হুইবে ন৷ ” কামাখ্যাবাবু মনে মনে ভাবিলেন, “ইহা একট। লাতিক । ইহার একটু চিকিৎস। অবখ্যক । কিন্তু প্রথম চিকিৎসা বোল হয় রুক্মিণীকুমারের সন্ধান করা ৷" কামাখ্য'ব।" রুক্মিণীকুমারের সন্ধানে প্রবৃন্ত হক্টলেন স্বয় কলিকাতায় তাহার অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন । বন্ধুবৰ্গকেও সেই সন্ধানে নিযুক্ত করিলেন ! ,দশে দেশে . আপনার মক্কেলগণকে পর লিখিলেন । প্রতি সংবাদপলে বিজ্ঞাপন দিলেন । সে বিজ্ঞাপন এই রূপ — “পাব রুক্মিণীকুমাব রাধ, নিম্ন স্বাক্ষরকার ব্যক্তির সন্সে সাক্ষাই করিবেন—বিশেষ প্রয়োজন আছে । ইহাতে রুক্মিণীবাবুর সন্তোষের ব্যতীত অসন্তোষের কারণ উপস্থিত হইবে না । ই ভ্যাদি – শ্রী —” কিন্তু কিছুতেই রুক্মিণীকুমারের কোন সন্ধান পা গুর। গেল ন| দিন গেল, মাস গেল, বৎসর গেল, তথাপি কৈ, রুক্মিণীকুমার আসিল না । ঈহর পর রাধারাণীর তার একটি ঘারতর বিপদ উপস্থিত হইল -ক:ম!খাধ।পুর লোক স্তরগতি হইল । রাধারাণী ইহাতে অত্যন্ত শাকাতুর হইলেন ; দ্বিতীয় বার পিতৃহীন ইষ্টলেন মনে করিলেন । কামাখ। বাবুর শ্রাদ্ধাদির পর রাপারাণী আপণ বাটীতে গিয়া বাস করিতে লাগিলেন এবং নিজ সম্পত্তির তত্ত্বাবধান স্বয়ং করিতে লাগিলেন । কামাখ্যাবাবুর বিচক্ষণত হেতু রাধারণীর সম্পত্তি বিস্তর বাড়িয়াছিল । বিষয় হস্তে লইয়। রাধারাণী প্রথমে ই জুই লক্ষ মুদ্র। গবর্ণমেণ্টে প্রেরণ করিলেন । তৎসঙ্গে এই প্রার্থনা করিলেন যে, এই অর্থে তাহার নিজ নামে একটি অনাথনিবাস স্থাপিত হউক । তাহার নাম হউক—“রুক্মিণীকুমারের প্রাসাদ " গবর্ণমেণ্টের কৰ্ম্মচারিগণ প্রস্তাবিত নাম শুনিয়া কিছু বিস্মিত হইলেন, কিন্তু তাহাতে কে কথ। কহিবে ? তানাথনিবাস সংস্থাপিত হুইল । রাধারাণীর মাত দরিদ্রাবস্থায় নিজ গ্রাম ত্যাগ করিয়া ÉŘ :x শ্রীরামপুরে কুটার নির্মাণ করিয়াছিলেন, কেন : যে গ্রামে ধে ধনী ছিল, সে সহসা দরিদ্র হইলে লে; গ্রামে তার বাস করা কষ্টকর হয় । তাহাদিগের নিস্থ গাম ঐরামপুর হইতে কিঞ্চিৎ দূর—আমরা সে: গ্রামকে রাজপুর বলিব । এক্ষণে রাধারাণী রাজপুরেই ; বাস করিতেন । অনাথনিবাসও রাধারাণীর বাড়ীর সম্মুখে, রাজপুরে সংস্থাপিত হইল । নান দেশ হইতে দীন, দুঃখী, অনাথ আসিয়া তথায় বাস করিতে্যু লাগিল । চতুর্থ পরিচ্ছেদ দুষ্ট এক বৎসর পরে এক জন ভদ্রলোক সেই, অনাথনিবাসে আসিয়া উপস্থিত হইলেন । র্তাহার : বয়স ৩৫-৩৬ বৎসর । অবস্থা দেখিয়া অতি ধীর, গষ্ঠার এবং অর্থশালী লোক বোধ হয় । তিনি সেই, “রুক্মিণীকুমারের প্রাসাদের" দ্বারে আসিয়া দাড়াইলেন । রক্ষকগণকে জিজ্ঞাস করিলেন, “এ কাহার বাড়ী ?” তাহার। বলিল, “এ কাহারও বাড়ী নহে, এ স্থানে দুঃখী অনাথ লোক থাকে । ইতাকে ‘রুক্মিণীকুমারের প্রাসাদ বলে ।” আগন্তুক বলিলেন, দেখিতে পারি ?” রক্ষকগণ বলিল, “দীন-দুঃখী লোকেও ইহার ভিতর অনায়াসে যাইতে ড়ে—আপনাকে নিষেধ কি ?” দর্শক ভিতরে গিয়া, সব দেখিয়া, প্রত্যাবর্তন করিলেন । বলিলেন, “বন্দোবস্ত দেখিয়া আমার বড় আহলাদ হইয়াছে । কে এই অন্নসত্ৰ দিয়াছেন ? রুক্মিণীকুমার কি তাহার নাম ?” রক্ষকের বলিল, “এক জন স্ত্রীলোক এই অন্নসত্র দিয়াছেন " দর্শক জিজ্ঞাস করিলেন, “তবে ইহাকে রুক্মিণীং কুমারের প্রাসাদ বলে কেন ?" রক্ষকের বলিল, “তাহ। আমরা কেহ জানি না ।” “রুক্মিণীকুমার কাহার নাম ?” “কাহারও নয় ।” “যিনি অন্নসত্র রক্ষকের সম্মুখে অতি বৃহৎ অট্টালিকা দেখাইয়া দিল । . আগস্তুক জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল, “তোমরা যাহার বাড়ী দেখাইয়া দিলে, তিনি পুরুষমানুষের “আমি ইহার ভিতরে গিয়া দিয়াছেন, র্তাহার নিবাস