۳ مه ۲: به ع
- ১২
আচ্ছা, মুদি মনের বাসনা পূরিবার মতনই হয়, * তবে শেষ কথাটা কে বলিবে ? এই ভাবিয়া রাধারাণী আপুন আপনি হাসিয়া লুটপাট হইল। “অ, ছি ছি! তাত আমি পারিব না । বসন্তকে যদি জানাইতাম ! ভাল, উহাকে এখন ছুদিন রাখিয়ু বসন্তকে আনাইতে পারিব না ? উনি না হয় সেই দুই দিন আমার লাইব্রেরী হইতে বহি লইয়। পড়ুন না ! পড়াশুনা করেন ন! কি ? ওঁরই জন্য ত লাইব্রেরী করিয়া রাখিয়াছি । তা যদি দুই দিন থাকিতে রাজি না হন ? উহার যদি কাজ থাকে, তবে কি হইবে ? ওঁতে আমাতেই সে কথাটা কি হবে ? ক্ষতি কি, ইংরেজের মেয়ের কি হয় ? অামাদের দেশে তাতে নিন্দ আছে, তা আমি দেশের লোকের নিন্দার ভয়ে কোন কাজই না করি ? এই যে উনিশ বৎসর বয়স পর্যন্ত আমি বিয়ে কবৃলেম নী, এতে কে না কি বলে ? এত বয়স পর্য্যস্ত কুমারী -ত। এ কাজটাও ন হয় ইংরেজের মেয়ের মত হইল।” তার পর রাধারাণী বিষণ্ণ-মনে ভাবিল, “ত যেন হলো ; তাতেও বড় গোল ! মম-বাতিতে গড় মেয়েদের মাঝখানে প্রথাট। এই যে, পুরুষ-মানুষেই কথাটা পড়িবে । ইনি যদি কথা ন পাড়েন ? না পাড়েন, তবে—হে ভগবান ! বলিয়া দাও, কি করিব ! লজ্জাও তুমি গড়িয়াছ—যে আগুনে আমি পুড়িতেছি, তাহাও তুমি গড়িয়াছ ! এ এ আগুনে সে লজ্জা কি পুড়িবে না ? তুমি এই সহায়হীন অনা থাকে দয়া করিয়। পবিত্রতার আবরণে আমাকে আবুত করিয়া লজ্জার আবরণ কাড়িয়| লও। তোমার কৃপায় ঘেন আমি এক দণ্ডের জন্য মুখর হুই ।” সপ্তম পরিচ্ছেদ ভগবান বুঝি সে কথাও শুনিলেন । শুদ্ধচিত্তে যাহ। বলিবে, তাহাই বুঝি তিনি শুনেন । রাধারাণী মৃঢ় হাসিতে হাসিতে গজেন্দ্রগমনে রুক্মিণীকুমারের নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলেন । রুক্মিণীকুমার তখন বলিলেন, “আপনি আমাকে বিদায় দিয়াও যান নাই, আমি যে কথা জানিবার জন্য আসিয়াছি, তাহাও জানিতে পারি নাই । তাই এখনও যাই নাই ।” রাধ। আপনি রাধারাণীর জন্ত আসিয়াছেন, তাহা আমারও মনে আছে। এ বাড়ীতে এক জন - বঙ্কিমচন্দ্রের গ্রন্থাবলী রাধারাণী আছে, সত্য বটে। সে আপনার নিকট পরিচিত হইবে কি না, সেই কথাটা ঠিক করিতে গিয়াছিলাম । - রু । তার পর ? রাধারাণী তখন অল্প একটু হাসিয়া একবার আপনার পায়ের দিকে চাহিয়া, আপনার হাতের অলঙ্কার খুটিয়া সেই ঘরে বসান একটা প্রস্তরনিৰ্ম্মিত Niolo প্রকৃতি পানে চাহিয়া রুক্মিণীকুমারের পানে না চাহিয়া বলিল—“আপনি বলিয়াছেন, রুক্মিণীকুমার আপনার যথার্থ নাম নহে। রাধারাণীর যে আরাধ্য দেবতা, তাহার নাম পর্য্যস্ত এখনও শুনিতে পাই নাই ।” রুক্মিণীকুমার বলিলেন, “আরাধ্য দেবতা কে বলিল ?” রাধারাণী কথাট। অনবধানে বলিয়া ফেলিয়াছিলেন, এখন সামলাইতে গিয়া বলিয়। ফেলিলেন, “নাম ঐরূপে জিজ্ঞাসা করিতে হয় ” রুক্মিণীকুমার বলিল, “আমার নাম দেবেন্দ্রনারায়ণ রায় " রাধারাণী গুপ্তভাবে দুই হাত যুক্ত করিয়া মনে মনে ডাকিল, “জয় জগদীশ্বর ! তোমার কৃপা অনন্ত ” প্রকাশ্বে বলিল, “রাজা দেবেন্দ্রনারায়ণের নাম শুনিয়াছি।” দেবেন্দ্রনারায়ণ বলিলেন, “অমন সকলেই রাজ৷ কবলায় । আমাকে যে কুমার বলে, সে যথেষ্ট সন্মান করে " রা। এক্ষণে আমার সাহস বাড়িল । জানিলাম যে, আপনি আমার স্বজাতি । এখন স্পৰ্দ্ধ হইতেছে, আজি আপনাকে আমার আতিথ্য স্বীকার করাই । দেবেন্দ্র । সে কথ। পরে হবে । রাধারাণী কে ? র। ভোজনের পর সে কথা বলিব । দে । মনে তঃখ থাকিলে ভোজনে তৃপ্তি হয় না । র। । রাধারাণীর জন্য এত দুঃখ ? কেন ? দে । তা জানি না, বড় দুঃখ—আট বৎসরের দুঃখ—তাই জানি । র। হঠাৎ রাধারাণীর পরিচয় দিতে আমার কিছু সঙ্কোচ হইতেছে । আপনি রাধারাণীকে পাইলে কি করিবেন ? দে । কি আর করিব ? একবার দেখিব । রা। একবার দেখিবার জন্য এই আট বৎসর . এত কাতর ? - দে রকম রকমের মানুষ থাকে । র। আচ্ছা, আমি ভোজনের পর আপনাকে আপনার রাধারাণী দেখাইব । ঐ বড় আয়না দেখিতে