পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&(ు তিনি প্রবৃত্ত—সাভার দিয়া আবার কুল পাইবেন কি ? গঙ্গারাম সাহসে ভর করিয়াও এ কথার কিছু মীমাংসা করিয়া উঠিতে পারিতেছিলেন না। সে ভাবিয়া চিন্তিয়া কিছু স্থির করিতে না পারে, তাহার শেষ ভরস। জগদীশ্বর । সে বলে, “জগদীশ্বর যা করেন ।” কিন্তু গঙ্গারাম তাহাও বলিতে পারিতেছিলেন ন। --যে পাপকৰ্ম্মে প্রবৃত্ত, সে জানে যে, জগদীশ্বর তার বিরুদ্ধ-জগতের বন্ধু তাহার শত্র । অতএব গঙ্গারাম বড় বিষণ্ণ হইয়া চিন্তামগ্র ছিলেন । এমন সময়ে মুরল। আসিয়া দেখা দিল । রমার প্রেরিত সংবাদ তাহীকে বলিল । গঙ্গারাম বলিল, “বলেন ত এখন গিয়া ছেলে নিয়ে আসি ” মুরল। তাহা হইবে না । যখন মুসলমান পুরীতে প্রবেশ করিবে, আপনি তখন গিয়। রক্ষা করিবেন, ইহাই রাণীর অভিপ্রায় । গঙ্গা । তখন কি হইবে, কে বলিতে পারে ? যদি রক্ষার অভিপ্রায় থাকে, তবে এক্ট বেল বালক টিকে আমাকে দিন । মুরলা । আমি তাহাকে লষ্টয়া আসিব ? গঙ্গা । না । আমার অনেক কথ। অ!ছে - মুরল । আচ্ছ।--পৌষ মাসে । এই বলিয়া, মুরল হাসিতে হুসিতে চলরা গেল । কিন্তু গঙ্গারামের গৃহ ইষ্টতে বহির হইয়। রাজপথে উঠিতে না উঠিতে মুরলার সে হাসি হঠাৎ লিবিয়। গেল—ভয়ে মুখ কালি হইয়। উঠিল । দেখিল, সম্মুখে রাজপথে প্রভাত শুক্র তারাবৎ সমুজ্জ্বল ত্রিশূলধারিণী যুগল ভৈরব মুক্তি। মুরল। তাঙ্গদিগকে শঙ্করীর অঙ্গুচারিণী ভাবিয়। ভূমিতে পড়িয়া প্রণাম করিয়া যোড়হত করিয়৷ দাড়াইল । এক জন ভৈরব বলিল, “তুই কে ?” মুরল। কাতরস্বরে বলিল, “আমি মুরল। " ভৈরবী । মুরলা কে ? মুরলা । আমি ছোট রাণীর দাসী । ভৈরবী । নগরপালের ঘরে এত রাত্রিতে কি করিতে আসিয়াছিলি ? মুরলা । মহারাণী পাঠাষ্টয়াছিলেন । ভৈরবী । সম্মুখে এই দেবমন্দির দেখিতেছিল ? মুরলা । আজ্ঞে হঁ। ভৈরবী । আমাদের সঙ্গে উহার উপরে আয় । মুরলা । যে আজ্ঞা । তখন দুই জনে, মুরলাকে দুই ত্রিশূলাগ্ৰ-মধ্যবৰ্ত্তিনী করিয়া মন্দিরমধ্যে লইয়া গেলেন । বঙ্কিমচন্দ্রের গ্রন্থাবলী দ্বাদশ পরিচ্ছেদ চন্দ্রচূড় তর্কালঙ্কারের সে রাত্রিতে নিদ্র নাই । কিন্তু সমস্ত রাত্রি নগর পরিভ্রমণ করিয়া দেখিয়াছেন যে, নগর-রক্ষার কোন উদ্যোগই নাই । গঙ্গারামকে সে কথা বলায়, গঙ্গারাম তাহকে কড়া কথা বলিয়। ষ্টাকাইয়া দিয়াছিল । তখন তিনি অতিশয় অনুতপ্তচিত্তে কুশাসনে বসিয়া সৰ্ব্বরক্ষাকৰ্ত্ত বিপত্তিভঞ্জন মধুসূদনকে চিন্তা করিতেছিলেন । এমন সময়ে চাদশাহ ফকীর অসিয় গঙ্গারামের ভূষণ-গমন বৃত্তীস্ত তাহাকে জানাইল শুনির চন্দ্রচূড় শিহরিয়৷ উঠিলেন । একবার মনে করিতেছিলেন যে, জনকতক সিপাহী লষ্টয় গঙ্গারামকে ধরিয়া, আবদ্ধ করিয়া নগর রক্ষার ভার অত্য লোককে দিবেন, কিন্তু ইহাও ভাবিলেন সে, সিপাহীর তাহার বাধা নন্তে, গঙ্গরামের বাপ । অতএব সে সকল উদ্যম সফল হইবে না। মৃন্ময় থাকিলে কোন গোল উপস্তিত হুইত না. সিপাহার। মুন্ময়ের তাজ্ঞাকারী । মুন্ময়কে বাহিরে পাঠাইল, তিনি এষ্ট সৰ্ব্বনাশ উপস্থিত করিয়াছেন । ষ্টত। বুঝিতে পরিরাষ্ট্র তিনি এত অহুভ{প পীড়িত হুষ্টর নিশ্চেষ্ট্রধং কেবল অসুর নিস্থদন হরির দিস্ত। করিতেছিলেন । তখন সহসা সম্মুখে প্রফুল্লকান্তি বিধূলপারিণী ভৈরর্ণকে দেখিলেন । সবিস্ময়ে জিজ্ঞাস। কবিলেন, “xi, তুমি কে ?" ভৈরবী বলিল, “দাব । শত্র নিকট, এ পুরীর রক্ষার কোন উদ্যোগ নাই কেন ? তাই তোমাকে জিজ্ঞাস; করিতে ত্যাসিয়াছি ।” মুরলীর সঙ্গে কথ। কহিয়াছিল ও দর্টুড়ের সঙ্গে কথা কহিতেছে, স্তরস্তী ! প্রশ্ন শুনিয় চন্দ্রচূড় আরও জিজ্ঞাসা করিলেন, “ম রাজলক্ষ্মী ?" বিস্মিত হইয়। ম, তুমি কি এই নগরের জয়ন্ত । আমি সে ইষ্ট, আমার কথার উত্তর দী ও নহিলৈ মঙ্গল হইবে না । চন্দ্র । মা ! আমার সাধ্য আর কিছু নাই । রাঙ্গা নগররক্ষকের উপর নগররক্ষার ভার দিয়াছিলেন, নগররক্ষক নগর রক্ষা করিতেছে না। সৈন্য আমার বশ নহে । আমি কি করিব, আজ্ঞ করুন । জয়ন্তী । নগররক্ষকের সংবাদ আপনি কিছু জানেন ? কোন প্রকার অবিশ্বাসিত শুনেন নাই ? চন্দ্র । শুনিয়াছি । তিনি তোরাব, গার নিকট গিয়াছিলেন। বোধ হয় তাহাকে নগর সমর্পণ