পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RR তখন দিগ গজের চেতনা হইল । তাড়াতাড়ি আর এক গ্রাস মুখে দিয়া গিলিতে গিলিতে এটো হাতে আশমানীর পারে জড়াইয়া পড়িল ৷ চৰ্ব্বণ করিতে করিতে কাদিয়া বলিল, “আমায় রাখ ; আশমান ! কাহাকেও বলিও না ।" চতুর্দশ পরিচ্ছেদ দিগগজ হরণ এমন সময় বিমলা আসিয়া বহির হইতে দ্বার নাড়িল । বিমলা দ্বারপাশ্ব কষ্টতে অলক্ষ্যে সকল দেখিতেছিল। দ্বারের শব্দ শুনিয়া দিগ গজের মুখ শুকাইল । আশমানী বলিল, “কি সৰ্ব্বনাশ! বিমলা আসিয়াছে—লুকাও - লুকাও ” দিগগজ-ঠাকুর কাদিয়া কহিল,“কোথা লুকাইব ?” আশমানী বলিল, “ঐ অন্ধকার কোণে একটা কেলে হুঁড়ি মাথায় দিয়ে বসে শিশ্না- অন্ধকারে ঠাওর পাইবে না ।” দিগগজ তাঁহাই করিতে গেল —আশমানীর বৃদ্ধির তীক্ষ য়ু বিস্মি ত হইল । দুর্ভাগ্যবশতঃ তাড়াতাড়ি ব্রাহ্মণ একটা অড়হর ডালের ইঁড়ি পাড়িয়া মাথায় দিল --তাহাতে আধ ছাড়ি রাপা অডহর ডাল ড্রিল –দিগগজ যেমন হুঁড়ি উণ্টাইয়া মাথায় দিবেন--অমনি মস্তক হইতে অড়হর ডালের শতধারা বহিল –টিকি দিয়া অড়হর ডালের স্রোতঃ নামিল-স্কন্ধ, রক্ষ, পৃষ্ঠ ও বাহু হইতে অড়হর ডালের ধার পঞ্চবন্ত চাইতে ভূতলগ।মিনী নদী সকলের ন্যায় তরঙ্গে তরঙ্গে নামিতে লাগিল ; উচ্চ নাসিক আড়হরের প্রস্রবণবিশিষ্ট গিরি শৃঙ্গের স্টার শোভা পাইতে লাগিল ! এই সময়ে বিমলা গুহে প্রবেশ করিয়া দিগগজের শোভারাশি সন্দর্শন করিতে লাগিলেন । দিগগজ বিমলাকে দেখিয়! কাদিয়া উঠিল । দেখিয়া বিমলার দয়া শুইল । বিমল। বলিলেন,-"র্কাদিও না । তুমি যদি এই অবশিষ্ট ভাতগুলি খাও, তবে আমরা কাহাবগু সাক্ষলে এ সকল কথা বলিব না। " ব্রাহ্মণ তখন প্রফুল্প হইল ; প্রফুল্ল বদনে পুনশ্চ আহারে বসিল—ইচ্ছা, অঙ্গের অদুকর ডালটুকুও মুছিয়া লয় ; কিন্তু তাহ পারিল না কিংবা সাহস করিল না । আশমানীর জন্ম যে ভাত মাখিয়াছিল, তাহা খাইল । বিনষ্ট অড়হরের জন্ত অনেক পরিতাপ করিল । আহার সমাপনস্তে আশমানী তাহাকে স্বান করাইল । পরে ব্রাহ্মণ স্থির হইলে, বিমল কহিলেন, *রসিক ! একটা বড় ভারি কথা আছে।” বঙ্কিমচন্দ্রের গ্রন্থাৰলী রসিক কহিলেন, কি ?” বি । তুমি আমাদের ভালবাস ? দি । বাসি নে ? বি । দুই জনকেই ? দি । দুই জনকেই । বি । যা বলি, তা পারিবে ? দি । পারিব না ? বি । এখনই ? দি । এখনই । বি । এই দণ্ডে ? দি । এই দণ্ডে । বি । আমির দুজনে কেন এসেছি জান ? দি । না : আশমানী কহিল, “আমরা তোমার সঙ্গে পলাইয়। যাব ।” ব্রাহ্মণ অবাকৃ হইয়। ই করিয়৷ রহিলেন । বিমলা কষ্টে উচ্চ হাসি সংবরণ করিলেন । কহিলেন, “কথা কও না যে ?” “আঁ্যা অ্যা, তা তা ত ভা”—বাঙ নিম্পত্তি হইয়। উঠিল না । অtশমন কহিল, “তবে কি পারিখে না ?” “আঁ্য আঁ্য অ্যা, তা তী—স্বামী ঠাকুরকে বলিয়া আসি ।” বিমল কহিলেন,—“স্বামী ঠাকুরকে আবার বলুবে কি ? এ কি তোমার মাতৃশ্ৰাদ্ধ উপস্থিত যে, স্বামী ঠাকুরের কাছে ব্যবস্থা নিতে যাবে ?” দি । না না, তা যাব না ; তা কবে যেতে হবে ? বি । কবে ? এখনই চল, দেখিতেছ না, আমি গহনাপল ইয়া বাহির হইয়াছি । fw i દ્રશનફે ? fব । এখনই না ত কি ? নহিলে বল, আমরা অন্ত লোকের তল্লাস করি । গজপতি আর থাকিতে পারিলেন না, বলিলেন, “চল, স্বাইতেছি ।" বিমল বলিলেন, “দোছোট লও ” দিগগজ নামাবলী গায়ে দিলেন । বিমল অগ্রে, ব্রাহ্মণ পশ্চাতে যাত্রা করেন, এমত সময়ে দিগগজ বলিলেন, “সুন্দরি !" বি । কি ? দি । আবার আসিবে কবে ? বি । আসিব কি আবার? একেবারে চলিলাম । হাসিতে দিগগজের মুখ পরিপূর্ণ হইল, বলিলেন, —“তৈজসপত্র রহিল যে ?”