دهد . হি। মহারাজ ! আপনি সৰ্ব্বজ্ঞই বটে, পত্ৰাৰ্দ্ধ আমার গৃহে আছে । র । তুমি শিবিকারোহণে পুনশ্চ গৃহে গিয়া সেই পত্ৰাৰ্দ্ধ লইয়া আইস । তুমি আসিলে আমি সকল কথা বলিব । দশম পরিচ্ছেদ হিরন্ময়ী রাজার আজ্ঞায় শিবিকারোহণে স্বগৃহে প্রত্যাগমন করিলেন এবং তথা হইতে সেই পূৰ্ব্ববর্ণিত পত্রাদ্ধ লইয়া পুনশ্চ রাজসন্নিধানে আসিলেন। রাজ সেই পত্রাদ্ধ দেখিয়া আর একখানি পত্রাদ্ধ কোঁটা হইতে বাহির করিয়া হিরন্ময়ীকে দিলেন । বলিলেন, “উভয় অৰ্দ্ধকে মিলিত কর।” হিরন্ময়ী উভয়াৰ্দ্ধ মিলিত করিয়া দেখিলেন, মিলিল । রাজা কহিলেন, উভয়াৰ্দ্ধ একত্রিত করিয়া পাঠ কর । তখন হিরন্ময়ী নিম্নলিখিতমত পাঠ করিলেন । (জ্যোতিষী গণনা করিয়া দেখিলাম) যে, তুমি ষে কল্পনা করিয়াছ, তাহী কর্তব্য নন্থে । ( হিরন্ময়ী তুল্য সোণার পুত্তলিকে ) কখন চিরবৈধব্যে নিক্ষিপ্ত করা যাইতে পারে না । তাহার (বিবাহ হইলে ভয়ানক বিপদ ) । তাহার চিরবৈধব্য ঘটিবে, গণনা দ্বারা জানিয়াছি। তবে পঞ্চবৎসর ( পৰ্য্যন্ত পরম্পরে ) যদি দম্পতি মুখদর্শন না করে, তবে এই গ্ৰহ হইতে ষাহাতে নিস্কৃতি (হইতে পারে, ) তাহার বিধান আমি করিতে পারি । পাঠ সমাপন হইলে, রাজা কহিলেন, “এই লিপি আনন্দ স্বামী তোমার পিতাকে লিখিয়াছিলেন ।” হি। তাহা এখন বুঝিতে পারিতেছি । কেন না, আমাদিগের বিবাহকালে নয়নাবৃত হইয়াছিল— কেনই বা গোপনে সেই অদ্ভুত বিবাহ হইয়াছিল— কেনই বা পঞ্চবৎসর অঙ্গুরীয়-ব্যবহার নিষিদ্ধ হইয়াছে, তাহা বুঝিতে পারিতেছি ; কিন্তু আর ত কিছু বুঝিতে পারিতেছি # } রাজা। আর ত অবশু বুঝিয়াছ যে, এই পত্র পাইয়াই তোমার পত পুরন্দরের সহিত সম্বন্ধ রহিত করিলেন । পুরন্দর সেই দুঃখে সিংহলে গেল । এদিকে আনন্দ স্বামী পাত্রানুসন্ধান করিয়া একটি পাত্র স্থির করিলেন । পাত্রের কোষ্ঠী গণনা করিয়া জানিলেন যে, পাত্রটির অশীতি বৎসর পরমায়ু। তবে অষ্টাবিংশতি বৎসর বয়স অতীত হইবার পূৰ্ব্বে মৃত্যুর এক সম্ভাবনা ছিল। গণিয়া দেখিলেন যে, ঐ বয়স বঙ্কিমচন্দ্রের গ্রন্থাবলী । 党。 অতীত হইবার পুৰ্ব্বে এবং বিবাহের পঞ্চ বৎসরমধ্যে পত্নীশয্যায় শয়ন করিয়া তাহার প্রাণত্যাগ কারবার সম্ভাবনা । কিন্তু যদি কোনরূপে পঞ্চবৎসর জীবিত থাকেন, তবে দীর্ঘজীবী হুইবেন । অতএব পাত্রের ত্রয়োবিংশতি বৎসর অতীত হইবার সময়ে বিবাহ দেওয়া স্থির করিলেন । কিন্তু এত দিন অবিবাহিত থাকিলে পাছে তুমি কোন প্রকার চঞ্চল হও বা গোপনে কাহাকে বিবাহ কর, এই জন্য ১ তোমাকে ভয় দেখাইবার কারণে এই পত্রার্ক তোমার অলঙ্কারমধ্যে রাখিয়াছিলেন । তৎপরে বিবাহ দিয়া পঞ্চবৎসর সাক্ষাৎ না হয়, তাহার জন্য যে ষে কৌশল করিয়াছিলেন, তাহা জ্ঞাত অtছ। সেই জন্যই পরস্পরের পরিচয়মাত্র পাও নাই । কিন্তু সম্প্রতি কয়েক মাস হইল, বড় গোলযোগ হইয়া উঠিয়াছিল। কয়েক মাস হইল, আনন্দ স্বামী এ নগরে আসিয়া তোমার দারিদ্র্য শুনিয়া নিতাস্ত দুঃখিত হইলেন । তিনি তোমাকে দেখিয়া আসিয়াছিলেন, কিন্তু সাক্ষাৎ করেন নাই । তিনি আসিয়া আমার সহিত সাক্ষাৎ করিয়! তোমার বিবাহ-বৃত্তাস্ত আনুপূৰ্ব্বিক কহিলেন। পরে কহিলেন, “আমি যদি জানিতে পারিভাম যে, হিরণায়ী এরূপ দারিদ্র্যাবস্থায় আছে, তাহা হইলে আমি উহা মোচন করিতাম । এক্ষণে আপনি উহার প্রতীকার করিবেন। এ বিষয়ে আমাকেই আপনার ঋণী জানিবেন । আপনার ঋণ আমি পরিশোধ করিব । সম্প্রতি আমার আর একটা অনুরোধ রক্ষা করিতে হইবে। হিরণায়ীর স্বামী এই নগরে বাস করিতেছেন। উহাদের পরস্পর সাক্ষাৎ না হয়, ইহা আপনি দেখিবেন। এই বলিয়া তোমার স্বামীর পরিচয়ও আমার নিকট দিলেন । সেই অবধি আমলা যে অর্থব্যয়ের দ্বারা তোমার দারিদ্র্যদুঃখ মোচন করিয়া আসিতেছে, তাহা অামা হইতে প্রাপ্ত । আমি তোমার পিতৃগৃহ ক্রয় করিয়া তোমাকে বাস করিতে দিয়াছিলাম। হার আমি পাঠাইয়াছিলাম। সে-ও তোমার পরীক্ষার্থ। হি। তবে আপনি এ অঙ্গুরীয় কোথায় . পাইলেন ? কেনই বা আমার নিকট স্বামিরূপে পরিচয় দিয়া আমাকে প্রতারিত করিয়াছিলেন ? পুরন্দরের গৃহে বাস করিতেছি বলিয়া কেনই বা অনুযোগ করিতেছিলেন ? রাজা । ষে দণ্ডে আমি আননা স্বামীর অনুজ্ঞা পাইলাম, সেই দণ্ডেই আমি তোমার প্রহরায় লোক নিযুক্ত করিলাম। সেই দিনই অমলা দ্বারা তোমার