পাতা:বঙ্কিম চন্দ্রের দীনবন্ধু-জীবনী.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিশিষ্ট । দীনবন্ধুর কাব্যের অনুশীলন। একে ত কবি দীনবন্ধু মিত্রের গ্রন্থাবলীর সহিত বঙ্গদেশের সেকালের ও একালের সকল পাঠকই সুপরিচিত, তাহার উপর আবার কবির কৃতী পুত্ৰগণ যে সুলভ সংস্করণ প্রচার করিয়াছেন, তাহাতে দরিদ্র বাঙ্গালী পাঠকের গৃহে গৃহে ঐ গ্রন্থাবলী দেখিতে পাওয়া যায়। কাজেই পাঠকেরা অতি সহজেই আমার বক্তব্য গুলির দোষ গুণ বিচার করিতে পরিবেন । যখন ঐ সুলভ সংস্করণ প্রথম প্রকাশিত হয়, তখন ( ১২৮৩ সালে ) কবির বন্ধু ও একালের বঙ্গসাহিত্যের নবজীবনদাতা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, একটি ক্ষুদ্র জীবনচরিত ও কাব্য-সমালোচনায় কবি সম্বন্ধে অনেক জ্ঞাতব্য ও শিক্ষাপ্রদ কথা লিখিয়াছেন । বন্ধুর কাব্য-সমালোচনায় পাছে পক্ষপাত ঘটে, এই ভয়ে বঙ্কিমচন্দ্ৰ, দীনবন্ধুর কোনও কোনও ক্রেটার কথা বিশেষ ভাবেই উল্লেখ করিয়াছিলেন। পক্ষপাত অতিক্রম করিবার প্রয়াসে যে কখনও কখনও সুধীদিগের বিচার অতিমাত্রায় কঠোর হইয়া দাড়ায়, এ সংসারে এ দৃষ্টান্তের অভাব নাই। আমার মনে হইয়াছে যে, বঙ্কিমবাবুর কয়েকটি মন্তব্য তেমন সুবিচারিত নহে। বঙ্কিমবাবুর সমালোচনা অবলম্বন করিয়াই কবি দীনবন্ধুর কাব্যের অনুশীলন করিব । ১ । নীলদর্পণ ।-বঙ্কিমবাবুর সমালোচনায় অবগত হই যে, ১৮৫৯ সালে /“পুরাণ দলের শেষ কবি ঈশ্বরচন্দ্ৰ গুপ্ত অস্তমিত", এবং “নূতনের প্রথম কবি মধুসূদনের অভু্যদয়।” এ কথাও লিখিত আছে যে, যে বৎসর মধুসূদনের প্ৰথম বাঙ্গাল কাব্য “তিলোত্তমাসম্ভব” প্ৰকাশিত হইতেছিল, “তার পর বৎসর দীনবন্ধুর প্রথম গ্ৰন্থ নীলদর্পণ প্ৰকাশিত হয় ।” আমার মনে হয় যে, কবির এই প্রথম কাব্য, বঙ্গ সাহিত্যের নবযুগের এই প্ৰথম প্রচারিত দৃশ্যকাব্য অতি অসাধারণ গ্ৰন্থ। ইহাও মনে করি যে, আজ পৰ্যন্ত “অঙ্ক” শ্রেণীর দৃশ্যাকাব্যে এমন একখানি কাব্যও প্রকাশিত হয় নাই, যাহা উহার সহিত প্রতিযোগিতা করিতে পারে। নীলদর্পণের মহাত্ম্য ও সৌন্দৰ্য্য ব্যাখ্যা করিবার পুর্বে একবার বঙ্কিমবাবুর মন্তব্যটুকু বুঝিয়া লইবার চেষ্টা করি। A