পাতা:বঙ্কিম চন্দ্রের দীনবন্ধু-জীবনী.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিবেদন । ১২৮৩ সনে, পিতৃদেবের গ্ৰন্থাবলীর প্রথম সংস্করণ প্ৰকাশিত হয় । এই সংস্করণের জন্য, বঙ্কিমচন্দ্ৰ, পিতৃদেবের একটি ক্ষুদ্র জীবন-চরিত লিখিয়া দেন। পরে, এই রচনার স্বস্তু আমাদিগকে দান করিয়া, উহা স্বতন্ত্র পুস্তকাকারে প্রকাশ করিতে অনুমতি করেন। তদবধি জীবন-চরিত আমাদের কত্ত্বক প্ৰকাশিত হইতেছে । ১২৯৩ সনে, পিতৃদেবের বাল্য-রচনা-সংযুক্ত গ্ৰস্তাবলীর আর একটি সংস্করণ প্ৰকাশিত হয় । এই সংস্করণের জন্য, বঙ্কিমচন্দ্ৰ, ‘দীনবন্ধু মিত্রের কবিত্ন” শীৰ্ষক একটি সমালোচনী লিখিয়া দেন । জীবনীর ইদানীন্তন সংস্করণে ইহাও সন্নিবিষ্ট আছে । এই দুই মহাপুরুষের বন্ধুত্ব, সাহিত্যের অঙ্গীভূত বলিয়া বৰ্ণনা করা যাইতে পারে । কিন্তু, বঙ্কিমচন্দের প্রণয়ের পরিচয় কেবল মাত্ৰ সাহিত্যে পাওয়া যায়, এমন নহে। কাৰ্য্যতঃ, তিনি ১াহার রচনার উপস্বত্ব ভোগ করিতে দিয়া, স্বীয় পরলোক গত বন্ধর সস্তানগণের প্রতি আন্তরিক স্নেহ ও দয়ার মধুর নিদর্শন দেখাইয়াছেন । তাহার ঋণ আমাদিগের পরিশোধ করা অসাধ্য । কিন্তু আমরা তাহ। স্বীকার করিতে বাধ্য । ইহাদের বন্ধ স্ব সম্বন্ধে, আর একটি কথা বলিবার আছে । পিতৃদেব স্বীয় নবীন তপস্বিনী বঙ্কিমচন্দ্ৰকে উৎসগ করেন । বঙ্কিমচন্দ্ৰ তাহাকে মৃণালিনী উৎসর্গ করেন । কিন্তু পিতৃদেবের মৃত্যুর সময় বঙ্কিমচন্দ্ৰ বঙ্গদর্শনে কিছুই লেখেন নাই । ইহাতে অনেকে বিস্থিত হইয়াছিলেন । সেই নিমিত্ত বঙ্কিমচন্দ্ৰ “বঙ্গদর্শনের বিদায় গ্ৰহণ”এ ইহার এইরূপ কৈফিয়ত দিয়াছিলেন--“আমার আর একজন সহায় ছিলেন, সাহিত্যে আমার সহায়, সংসারে আমার সুখ দুঃখের ভাগ, তাহার নাম উল্লেখ করিব মনে করিয়াও উল্লেখ করিতে পারিতেছি না । এই বঙ্গদর্শনের বয়ঃক্ৰম অধিক হইতে না হইতেই, দীনবন্ধু আমাকে পরিত্যাগ করিয়া গিয়াছিলেন । তঁহার জন্য তখন বঙ্গসমাজ রোদন করিতেছিল, কিন্তু এই বঙ্গদর্শনে আমি তাহার নামোল্লেখ করি নাই কেন, তাহ কেহ বুঝে না । আমার যে দুঃখ, কে তাহার ভাগী হইবে। কাহার কাছে দীনবন্ধুর জন্য কঁাদিলে প্ৰাণ জুড়াইবে । অন্যের