পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बस्किब ब्रष्नावली দেশপব্যািটনানিস্তর শেষে তিনি দ্বারকায় উপস্থিত হয়েন। তথায় যাদবেরা তাঁহার বিশেষ সমাদর ও সৎকার করেন। অতীজনে কিছ দিন সেখানে অবস্থিতি করেন। একদা যাদবেরা রৈবতক পঞ্চবতে একটা মহান উৎসব আরম্ভ করেন। সেখানে যাদবীরেরা ও বন্দকুলাঙ্গনাগণ সকলেই উপস্থিত হইয়া আমোদ আহমাদ করেন। অন্যান্য সত্ৰীলোকদিগের মধ্যে সভদ্ৰাও উপস্থিত ছিলেন। তিনি কুমারী ও বালিকা। অজ্ঞজনে তাঁহাকে দেখিয়া মন্বন্ধ হইলেন। কৃষ্ণ তাহা জানিতে পারিয়া অজ্ঞজনকে বলিলেন, “সখে! বনাচর হইয়াও অনঙ্গশরে চঞ্চল হইলে ?” অজান অপরাধ স্বীকার করিয়া, সভদ্ৰা যাহাতে তাঁহার মহিষী হন, তদ্বিষয়ে কৃষ্ণের পরামর্শ জিজ্ঞাসা করিলেন। কৃষ্ণ যে পরামর্শ দিলেন তাহা এই :- হে অঙ্গজােন! স্বয়ংবরই ক্ষত্ৰিয়দিগের বিধেয়, কিন্তু সন্ত্রীলোকের প্রবত্তির কথা কিছুই বলা যায় না, সতরাং তদ্বিষয়ে আমার সংশয় জন্মিতেছে। আর ধৰ্ম্মশাস্ত্রকারেরা কাহেন, বিবাহোদেশে বলপৰিবাক হরণ করাও মহাবীর ক্ষত্ৰিয়দিগের প্রশংসনীয়। অতএব স্বয়ংবরকাল উপস্থিত হইলে তুমি আমার ভগিনীকে বলপাকবািক হরণ করিয়া লইয়া যাইবে; কারণ, স্বয়ংবিরকালে সে কাহার প্রতি অন্যরক্ত হইবে, কে বলিতে পারে ? এই পরামশের অন্যবিত্তী হইয়া অন্যজন প্রথমতঃ যধিষ্ঠির ও কুন্তীর অন্যািমতি আনিতে দত প্রেরণ করেন। তাঁহাদিগের অনািমতি পাইলে, একদা, সভদ্রা যখন রৈবতক পব্বতিকে প্রদক্ষিণ করিয়া দ্বারকাভিমখে যাত্রা করিতেছিলেন তখন তাঁহাকে বলপািব্বক গ্রহণ করিয়া রথে তুলিয়া অজ্ঞজনে প্রস্থান করিলেন। এখন, আজিকালিকার দিনে যদি কেহ বিবাহোদেশে কাহারও মেয়ে বলপ কবক কাড়িয়া লইয়া প্ৰস্থান করে, তবে সে সমাজে নিন্দিত এবং রাজদান্ডে দণিডত হইবার যোগ্য সন্দেহ নাই। এবং এখনকার দিনে কেহ যদি অপর কাহাকে বলে, “মহাশয়! যখন আমার ভগিনীকে বিবাহ করিতে আপনার ইচ্ছা হইয়াছে, তখন আপনি উহাকে কাড়িয়া লইয়া পলায়ন করান, ইহাই আমার পরামর্শ", তবে সে ব্যক্তিও জনসমাজে নিন্দনীয় হইবে, তাহার সন্দেহ নাই। অতএব প্রচলিত নীতিশাস্ত্রানসারে (সে নীতিশাস্ত্রের কিছমাত্র দোষ দিতেছি না) কৃষ্ণাক্তজনে উভয়েই অতিশয় নিন্দনীয় কাৰ্য্য করিয়াছিলেন, সন্দেহ নাই। লোকের চক্ষে ধােলা দিয়া কৃষ্ণকে বাড়ান। যদি আমার উদ্দেশ্য হইত, তবে সভদ্ৰাহরণপববাধ্যায় প্রক্ষিপ্ত বলিয়া, কিবা এমনই একটা কিছর জয়াচুরি করিয়া, এ কথাটা বাদ দিয়া যাইতাম। কিন্তু সে সকল পথ আমার অবলম্বনীয় নহে। বুলু ভূমধ্য প্রশংসায়, কাহারও মহিমা বাড়িতে পারে না এবং ধর্মের অবনতি ভিন্ন 23 ना । কিন্তু কথাটা একটি তলাইয়া ব্যঝিতে হইবে। কেহ কাহারও মেয়ে কড়িয়া লইয়া গিয়া বিবাহ করিলে, সেটা দোষ বলিয়া গণিতে হয় কেন ? তিন কারণে। প্রথমতঃ, অপহৃতা কন্যার উপর অত্যাচার হয়। দ্বিতীয়তঃ, কন্যার পিতা মাতা ও বন্ধবেগের উপর অত্যাচার। তৃতীয়তঃ, সমাজের উপর অত্যাচার। সমাজরক্ষার মািলসত্ৰ এই যে, কেহ কাহারও উপর অবৈধ বলপ্রয়োগ করিতে পরিবে না। কেহ কাহারও উপর অবৈধ বলপ্রয়োগ করিলেই সমাজের স্থিতির উপর আঘাত করা হইল। বিবাহাথিকৃত কন্যাহরণকে নিন্দনীয় কাৰ্য্য বিবেচনা করিবার এই তিনটি গারতের কারণ বটে, কিন্তু তদ্ভিন্ন আর চতুৰ্থ কারণ কিছ নাই। এখন দেখা যাউক, কৃষ্ণের এই কাজে এই তিন জনের মধ্যে কে কতদর অত্যাচার প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। প্রথমতঃ, অপহৃতা কন্যার উপর কতদর অত্যাচার হইয়াছিল দেখা যাক। কৃষ্ণ তাঁহার জ্যোিঠ ভ্ৰাতা এবং বংশের শ্রোিঠ। যাহাতে সভদ্রার সব্বতোভাবে মঙ্গল হয়, তাহাই তাঁহার কৰ্ত্তব্য-তাহাই তাঁহার ধৰ্ম্ম-উনবিংশ শতাব্দীর ভাষায় তাহাই তাঁহার ‘Duty” এখন সন্ত্রীলোকের পক্ষে প্রধান মঙ্গল -সব্বাঙ্গীণ মঙ্গল বলিলেও হয়-সৎপাত্রস্থ হওয়া। অতএব সভাদ্রার প্রতি কৃষ্ণের প্রধান “ডিউটি”-তিনি যাহাতে সৎপাত্ৰস্থা হয়েন, তাহাই করা। এখন, অতীজনের ন্যায়। সৎপাত্র কৃষ্ণের পরিচিত ব্যক্তিদিগের মধ্যে ছিল না, ইহা বোধ হয় মহাভারতের পাঠকদিগের নিকট কািট পাইয়া প্রমাণ করিতে হইবে না। অতএব তিনি যাহাতে অল্পজনের পত্নী হইবেন, ইহাই সভদ্রার মঙ্গলাৰ্থ কৃষ্ণের করা কীৰ্ত্তব্য। তাঁহার যে উক্তি উদ্ধত করিয়াছি, তাহাতেই তিনি দেখাইয়াছেন, বলপক্ষািবক হরণ ভিন্ন অন্য কোন প্রকারে এই কৰ্ত্তব্য সাধন হইতে পারিত কি না, তাহা সন্দেহস্থল। যেখানে ভাবিফল চিরজীবনের মঙ্গল, সেখানে Gt()