পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিছ ভাল লাগে; বিদ্যালয়ের ছাত্ৰগণ প্রায় পরস্পরকে গালি দিয়া থাকে। দীনবন্ধ, চিরকাল রহস্যপ্রয়, এজন্য এটি ঘাঁটিয়াছিল। দীনবন্ধ প্রভাকরে “বিজয়-কাহিনী” নামে একটি ক্ষদ্র উপাখ্যান কাব্য প্রকাশ করিয়াছিলেন। নায়কের নাম বিজয়, নায়িকার নাম কামিনী। তাহার, বোধ হয়, দশ বার বৎসব পরে “নবীন তপস্বিনী" লিখিত হয়। “নবীন তপস্বিনী’র নায়কের নামও বিজয, নায়িকাও কামিনী । চরিত্রগত উপাখ্যান কাব্য ও নাটকের নায়ক নায়িকার মধ্যে বিশেষ প্রভেদ নাই। এই ক্ষদ্র ܬܒܝܠ উপাখ্যান-কাব্যখানি সন্দর হইয়াছিল। দীনবন্ধ হেয়ার স্কুল হইতে হিন্দী কলেজে যান, এবং তাগায় ছাত্রবত্তি গ্রহণ করিয়া কয় বৎসর অধ্যযন করেন। তিনি কলেজের একজন উৎকৃটে ছাত্র বলিয়া গণ্য ছিলেন। দীনবন্ধর পাঠ্যাবস্থােব কথা আমি বিশেষ জানি না, তৎকালে তাঁহার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ •द्विष्रुश छिळ क्षा । বোধ হয়। ১৮৫৫ সালে দীনবন্ধ, কালেজ পরিত্যাগ করিয়া, ১৫০), বেতনে পাটনার পোস্টমাস্টারের পদ গ্রহণ করেন। ঐ কমে তিনি ছয় মাস নিযক্ত থাকিয়া সংখ্যাতি লাভ কবেন। দেড় বৎসর পরেই তাঁহার পদবদ্ধি হইয়াছিল। তিনি উড়িষ্যা বিভাগের ইনস্পেকাটিং পোস্টনাণ্টার হইয়া যান। পদবদ্ধি হইল বােট, কিন্তু ৩খন বেতনবদ্ধি হইল না; প.ে তই নাছিল। এক্ষণে মনে হয়, দীনবন্ধ, চিরদিন দেড় শত টাকার পোস্টমাস্টার থাকতেন, সেও ভাল ছিল, তাঁহার ইনস্পেকটিং পোস্টমাস্টার হওয়া মঙ্গলের বিষম হয নাই। পঝেব এই পদের কায্যের নিষম ছিল যে, ইহাদিগকে অবিরত নানা স্থানে ভ্ৰমণ করিয়া পোল্ট আপিসেব কায । সকলের তত্ত্বাবধারণা করিতে হইবে। এক্ষণে ইহারা ভুষ মাস হেডকোসার্টারে সুপ্ত যি হইতে পারেন। পন্ধেব সে নিয়ম ছিল না। সংবৎসরই ভ্ৰমণ করিতে হইত। কোন স্থানে এক দিন কোন স্থানে দাই দিন, কোন স্থানে তিন দিন- এই রােপ কাল মাত্র অবস্থি৩ি । বৎসর বৎসল ক্রমাগত এইরপ পরিশ্রমে লৌহের শরীরও ভগ্ন হইয়া যায়। নিধাত আবৰ্ত্তনে লোহাব চক্ৰ ক্ষমা প্রাপ্ত হয়। দীনবন্ধর শরীরে আর সে পরিশ্রম সঙ্গিল না, বঙ্গদেশের দরিদ, ঢবশতঃই তিনি ইনস্পেকাটিং পোস্টমাস্টার হইযছিলেন। ইহাতে আমাদের মালধন নস্ট হইয়াছে বটে, কিন্তু কিছ লাভ হয় নাই এমত নহে। উপহাসনিপািণ লেখকের একটি বিশেষ শিক্ষার প্রয়োজন। নানা প্রকার মা, ষ্যের চরিত্রের পৰ্য্যালোচনাতেই সেই শিক্ষা পাওযা যায়। দীনবন্ধ নানা দেশ ভ্ৰমণ করিম নানাবিধ চরিত্রের মনয্যের সংস্পশোঁ আসিমাছিলেন। তত্তজনিত শিক্ষার গণে তিনি নানাবিধ রহস্যজনক চরিত্রসজনে সক্ষম হইয়াছিলেন। তাঁহার প্রণীত নাটক সকলে যেরপ চরিত্রবৈচিত্ৰ্য আছে, তাহা बाश्क्राळला जाछ८ऊ, त्रिद्धळ । উড়িষ্যা বিভাগ হইতে দীনবন্ধ নদীয়া বিভাগে প্রেরিত হয়েন, এবং তথা হইতে ঢাকা বিভাগে গমন করেন। এই সমযে নীলবিষয়ক গোলযোগ উপস্থিত হয়। দীনবন্ধ নানা স্থানে পরিভ্রমণ করিয়া নীলকরদিগের দৌরাত্ম্য বিশেষরপে অবগত হইয়াছিলেন। তিনি এই সময়ে “নীল-দপণ” প্রণয়ন কবিয়া বঙ্গীস প্ৰজাগণকে অপরিশোধনীক ঋণে বদ্ধ করিলেন। দীনবন্ধ বিলক্ষণ জানিতেন যে তিনি যে নীল-দপণেল প্রণেতা, এ কথা ব্যক্ত হইলে, তাহার অনিন্ট ঘটিবার সম্ভাবনা। যে সকল ইংরেজের অধীন হইয়া তিনি কাম করিতেন, তাহারা নীলকরের সহৃদ। বিশেষ, পোস্ট আপিসের কাস্যে নীলকর প্রভৃতি অনেক ইংরেজের সংস্পর্শে সব্বদা আসিতে হয়। তাহারা শত্ৰতা করিলে বিশেষ অনিলন্ট করিতে পারকে না পারক, সম্পর্বেদা উদ্বিগ করিতে পারে; এ সকল জানিযাও দীনবন্ধ, নীল-দপািণ-প্রচারে পরামখ হয়েন নাই। নীল-দপণে গ্রন্থকারের নাম ছিল না বটে, কিন্তু গ্ৰন্থকারের নাম গোপন করিবার জন্য দীনবন্ধ অন্য কোন প্রকার যত্ন করেন নাই। নীল-দপািণ-প্রচারের পরেই বঙ্গদেশের সকল লোকেই কোন প্রকারে না কোন প্রকারে জানিয়াছিল যে, দীনবন্ধ, ইহার প্রণেতা। দীনবন্ধ পরের দঃখে নিতান্ত কাতর হইতেন, নীল-দপণ এই গণের ফল। তিনি বঙ্গদেশের প্রজাগণের দঃখ সহৃদয়তার সহিত সম্পণেরপে অনভূত করিয়াছিলেন বলিয়াই নীলদপািণ প্রণীত ও প্রচারিত হইয়াছিল। যে সকল মনষ্যে পরের দঃখে কাতর হন, দীনবন্ধ তাহার মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন। তাঁহার হৃদয়ের অসাধারণ গণ এই ছিল যে, যাহার দঃখ, সে যেরপ է: Հd: