পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গে দেবীপজ্যো-প্রতিবাদ নিমিত্ত বাঙ্গালা বিখ্যাত, তাহা এই দেবতাদিগের প্রসাদাৎ।” ইত্যাদি। পত্তিলপজা ভিন্ন যে ভক্তাদি গাহস্থিা ধন্মের অন্য মল নাই, এ কথা এরূপ অমলেক এবং আশ্রদ্ধেয় যে ইহার প্রতিবাদ अभिक कद का । আমি সংক্ষেপতঃ দেখাইলাম যে, শ্ৰীঃ বঙ্গীয় দেবতাগণকে যে কয়েক বিষয়ে উপকারক মনে করেন, তাহা কেবল তাঁহার ভ্রান্তি। সকল ভ্ৰান্তি দেখাইতে গেলে, তিন নম্বর ভ্রমর আমাকেই ইজারা করিতে হইবে। কিন্তু বিচারার্থ আমি স্বীকার করিতে প্ৰস্তৃত আছি যে, কোন কোন বিষয়ে সাকার-পাঁজা উপকার করে। তাই বলিয়া কি সাকার পজা অবলম্বনীয় ? এ জগতে এমন অপকৃষ্ট সামগ্রী কি আছে যে, তদ্দ্বারা কোন না কোন উপকার নাই। মদ্য উৎকৃষ্ঠািট ঔষধ; অনেক বিষে উৎকৃষ্ট ঔষধ প্ৰস্তুত হয়; তাই বলিয়া কি মদ্য এবং বিষ নিত্য সেবা কল্প কত্তব্য ? কয়েদী জেলে গিয়া, পরের খরচে খাইতে পায়, তাই বলিয়া কি কারাবাস কামনীস টু অপত্রকের ব্যয় অলপ, সেই জন্য কি আপত্রিকতা কামনীয় ? অনেক সত্ৰীলোক অসতী হইয়াই পত্রিবতী হইয়াছে; তাহাতে কি অসতীত্ব ইন্টবস্তু হইল ? সাকার পজায় কিছ বি'ছ উপকার আছে বলিয়াই কি সাকার পজা প্রচলনীয় বলিয়া সিদ্ধ হইল ? সকলেবই কিছ, শাভ ফল আছে, সকলোতেই কিছ, অশাভ ফল আছে। শািভাশাভের তারতম্য বিচার করিয়া, কোনটি কামিনীয়; কোনটি পরিহায্য মনয্যে বিচার করে। একটি গেল, তাহার স্থানে আর একটি হইল; যেটি ছিল, তাহার যে সকল শাভ ফল, তাহা আর রহিল না, কিন্তু যেটি হইল, তাহার জন্য নতন কতকগলি শাভ ঘাঁটবে। এইগলি যদি পঞ্চেব শাভের অপেক্ষা গরতের হয় তবে ইহাই বাঞ্ছনীয়। সাকার পজায় শাভ ফল অনেক থাকিতে পারে, কিন্তু নিরাকার পশুবে শািভফল যে তদপেক্ষা গরতের নহে, তাহার আলোচনায় শ্ৰীঃ একেবারে প্রবত্ত হয়েন নাই। যখন এদেশে রেলের গাড়ি ছিল না, তখন ভ্ৰমণ পদব্রজে, নৌকায়, বা পালকীতে করিতে হইত। নৌকা বা পালকীতে যাতায়াতের দই একটি সফল ছিল-তােহা বাষ্পীয় যানে নাই। নৌকাযাত্রা স্বাস্থ্যকর। যেদেশ দিয়া রেইল গাড়িতে যাও তাহার কিছই দেখা হয় না, গড়গড় করিয়া তাহা পার হইয়া যাও। পালকীতে বা পদব্ৰজে গেলে, সকল দেশ দেখিয়া যাওয়া যায়; তাহাতে বহদ্দশিতা এবং কৌতহল নিবারণ লাভ হয়। তাই বলিয়া যে বলিবে রেইলগাড়ি উঠাইয়া দাও, দেশের সব্বনাশ হইতেছে, তাহাকে শ্ৰীঃ কিরােপ বোদ্ধা বলিয়া গণ্য করবেন ? নিরাকারভক্তও তাঁহাকে সেইরােপ বোদ্ধা বলিয়া মনে করিতে পারে। তিনি সাকার পজার গণ কতকগলি দেখাইয়াছেন; দোষ একটিও দেখান নাই। তাহার দই একটি অশভ ফলের উল্লেখ করা প্রয়োজনীয় হইতেছে। উল্লেখমাত্র করিব। প্রথম, সাকার ধৰ্ম্মম, বিজ্ঞানবিরোধী। যেখানে সাকার ধৰ্ম্মম প্রচলিত, সেখানে জ্ঞানের উন্নতি হয় না। সেখানে সকল প্রশেনরই এক উত্তর-“দেবতায় করেন।” অন্য উত্তরের সন্ধান হয় না। অতএব সাকার পজা। জ্ঞানোন্নতির কণ্টক। যদি কেহ বলেন যে, অনেক যনানী এবং অনেক আৰ্য্য পন্ডিত জ্ঞানের উন্নতি করিয়াছিলেন, তাঁহারাই কি সাকারবাদী ছিলেন না ? উত্তর, না-কেহই না। যােনানী তত্ত্বজ্ঞ দার্শনিক এবং বিজ্ঞানবেত্ত্বগণ, এবং আর্য্য মহর্ষিীরা, যাঁহারা কিছ জ্ঞানের উন্নতি করিয়াছিলেন, সকলেই নিরাকারবাদী ছিলেন। সাকারবাদী কর্তৃক জ্ঞানের উন্নতি প্রায় দেখা যায় না। দ্বিতীয়। সাকার পজা, সবানবত্তিতার বিরোধী। চারিদিকে মনষ্যচিত্তকে বাঁধিয়া, মনীষাচরিত্রের সাফত্তি, উন্নতি এবং বিস্তুতি লোপ করে। তৃতীয়। জ্ঞান এবং সাবানবৰ্ত্তিতার গতি রোধ করিয়া, এবং অন্যান্য প্রকারে সাকার পজা। সমাজের গতিরোধ করে। পক্ষান্তরে, ইহা স্বীকার করিতে হয় যে, সাকার পাজার একটি গারতের সফল আছে, শ্ৰীঃ তাহা ধরেন নাই। সাকার পজা কাব্য এবং সক্ষম শিলেপির অত্যন্ত পন্টিকারক। সাকারবাদীদিগের প্রধান কবিদিগের তুল্য কবি, নিরাকারবাদীদিগের মধ্যে একজন মাত্র আছেন-একা সেক্ষপিয়র। কঙ্গদেশেও, সাকার পজার ফল, বৈষ্ণব কবিদিগের অপদেব গীতিকাব্য। শ্ৰীঃ সাকার নিরাকারের মধ্যে কোনটি প্রকৃত ঈশ্বরোপাসনা তাহার মীমাংসা করেন নাই; আমিও তােহা করিব না। বাকি বিচার করিতে গেলে, দায়ের একটিও টিকিবে না। ভক্তিতে bSk