ৰঙ্কিম রচনাবলী জন্য অন্য কোন কায্যের ক্ষতি নাই। বরং দেখিবে, ঈশ্বরভক্তির সঙ্গে মিলিত হইলে সকল কাৰ্য্যই মঙ্গলপ্রদ, যশস্যকর এবং পরিশদ্ধ হয়। আমি বঝিতে পারিতেছি, অনেকের এ সকল কথা ভাল লাগিতেছে না। তাঁহারা এতক্ষণ বলিতেছেন, তরঙ্গিণী যাবতীর কথা হইতেছিল-হইতে হইতে আবার ঈশ্বরের নাম কেন ? এই মাত্র বাড়া বয়সের ঢেকি পাতিয়া বঙ্গদর্শনের জন্য ধান ভানিতেছিলে—আবার এ শিবের গীত কেন ? দোষ হইয়াছে স্বীকার করি, কিন্তু মনে মনে বোধ হয় যে, সকল কাজেই একটা একটি শিবের গীত ভাল । ভাল হউক বা না হউক, প্রাচীনের জন্য উপায় নাই। তোমার তরঙ্গিণী হেমাঙ্গিনী সরঙ্গিণী কুরঙ্গিণীর দল আর আমার দিকে ঘোষিবে না। তোমার মিল, কোমত, স্পেন্সর, ফয়েরবাক মনোরঞ্জন করিতে পারে না। তোমার দর্শন, বিজ্ঞান, সকলই অসার-সকলই অন্ধের মািগয়া। আজিকার বর্ষার দদিনে-আজি এ কালরাত্রির শেষ কুলগ্নে-এ নক্ষত্রহীন অমাবস্যার নিশির মেঘাগমো-আমায় আর কে রাখিবে ? এ ভবনদীর তপ্ত সৈকতে, প্রখরবাহিনী বৈতরিণীর আবৰ্ত্তভীষণ উপকালে—এ দস্তর পারাবারের প্রথম তরঙ্গমালার প্রঘাতে, আর আমায় কে রক্ষা করিবে ? অতি বেগে প্রবল বাতাস বাহিতেছে-অন্ধকার, প্ৰভো! চারি দিকেই অন্ধকার! আমার এ ক্ষদ্র ভেলা দম্প্রকৃতের ভরে বড় ভারি হইয়াছে। আমায় কে রক্ষা করিবে ? 19भ न९धा-कभवाकाटस्डद्ध विनाश সম্পাদক মহাশয়! বিদায় হইলাম, আর লিখিব না। বনিল না। আপনার সঙ্গে বনিল না, পাঠকের সঙ্গে বনিল না, এ সংসারের সঙ্গে আমার বনিল না। আপনার সঙ্গে আর আমার বনিল না। আর কি লেখা হয় ? বেসরে কি এ বাঁশী বাজে ? বাঁশী বাজি বাজি করে, তব বাজে না-বাঁশী ফাটিয়াছে। আবার বাজ দেখি, হৃদয়ের বংশী! হায়! তুই কি আর তেমনি করিয়া বাজিতে জানিস? আর কি সে তান মনে আছে ? না, তুই সেই আছিস-না। আমি সেই আমি আছি, তুই ঘনে ধরা বাঁশী-আমি ঘনে ধরা-আমি ঘনে ধরা কি, কি ছাই তা আমি জানি না। আমার সে সম্বর নাই—আর বাজাইব কি ? আর সে রস নাই, শনিবে কে ? একবার বাজ দেখি, হৃদয়! এই জগৎ সংসারে—বধির, অর্থ চিন্তায় বিব্রত, মড়ে জগৎ সংসারে, সেইরােপ আবার মনের লকান কথাগলি তেমনি করিয়া বলা দেখি ? বলিলে কেহ শানিবে কি ? তখন বয়স ছিল—ক’ত কাল হইল সে দপ্তর লিখিয়াছিলাম-এখন সে বয়স, সে রস নাই-এখন সে রস ছাড়া কথা কেহ শনিবে কি ? আর সে বসন্ত নাই-এখন গলা-ভাঙ্গা কোকিলের কুহ, রব কেহ শানিবে কি ? ভাই, আর কথায় কাজ নাই-আর বাজিয়া কাজ নাই-ভাঙ্গা বাঁশে মোটা আওয়াজে আর কুক্কার-রাগিণী ভজিয়া কাজ নাই। এখন হাসিলে কেহ হাসিবে না-কাঁদিলে। বরং লোকে হাসিবে। প্রথম বয়সের হাসিকান্নায় সখি আছে-লোকে সঙ্গে সঙ্গে হাসে কাঁদে ;-এখন হাসিকান্না। ছি!--কেবল লোক হাসান! হে সম্পাদককুলশ্রেষ্ঠ ! আপনাকে স্বরপ বলিতেছি-কমলাকান্তের আর সে রস নাই। আমার সে নিসী বাবা নাই—অহিফেনের অনটন-সো প্ৰসন্ন কোথায় জানি না।--তাহার সে মঙ্গলা গাভী কোথায় জানি না। সত্য বটে, আমি তখনও একা-এখনও একা-কিন্তু তখন আমি একায় এক সহস্ৰ—এখন আমি একায় আধখানা। কিন্তু একার এত বন্ধন কেন ? যে পাখীটি পষিয়াছিলাম —কবে মরিয়া গিয়াছে—তাহার জন্য আজিও কাঁদি ; যে ফুলটি ফুটাইয়াছিলাম-কবে শকাইয়াছে, তাহার জন্য আজিও কাঁদি ; যে জলবিম্ব, একবার জলস্রোতে সােয্যরশিম সম্প্রভাত দেখিয়াছিলাম --তাহার জন্য আজিও কাঁদি। কমলাকান্ত অন্তরের অন্তরে সন্ন্যাসী-তাহার এত বন্ধন কেন ? এ দেহ পচিয়া উঠিল-ছাই ভস্ম মনের বাঁধনগলা পচে না কেন ? ঘর পড়িয়া গেল-আগন নিভে না কেন ? পকুর শকাইয়া আসিল-এ 'পণ্ডেক পঙ্কজ ফটে কেন ? ঝড় থামিয়াছেদরিয়ায় তুফান কেন ? ফলে শকাইয়াছে-এখনও-গন্ধ কেন ? সখি গিয়াছে।--আশা কেন ? সন্মতি কেন ? জীবন কেন ? ভালবাসা গিয়াছে-যত্ন কেন ? প্রাণ গিয়াছে’- পিপডদান কেন ? কমলাকান্ত গিয়াছে—যে কমলাকান্ত চাঁদ বিবাহ করিত, কোকিলের সঙ্গে গায়িত, ফলের বিবাহ SOO
পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৩৬
অবয়ব