পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী গগনপয্যটন পরাণ ইতিহাস্যাদিতে কথিত আছে, পৰ্ব্বকালে ভারতবষীয় রাজগণ আকাশ-মাগে রথ চালাইতেন। কিন্তু আমাদের পবিবর্ণপরিষদিগের কথা স্বতন্ত্র, তাঁহারা সচরাচর এপাড়া ওপাড়ার ন্যায়, সবগ লোকে বেড়াইতে যাইতেন ; কথায় কথায় সমদ্রকে গন্ডষে করিয়া ফেলিতেন; কেহ। জগদীশ্বরকে অভিশপ্ত করিতেন, কেহ তাঁহাকে যদুদ্ধে পরাস্ত করিতেন। প্রাচীন ভারতবষীয়দিগের কথা স্বতন্ত্র; সামান্য মনষ্যদিগের কথা বলা যাউক । সামান্য মনষ্যের চিরকাল বড় সাধ গগন পৰ্য্যটন করে। কথিত আছে, তারান্তম নগরবাসী আকৰ্ণাইতস নামক এক ব্যক্তি ৪০০ খ্রীস্টাব্দে, একটি কাঠের পক্ষী প্রস্তুত করিয়াছিল; তাহা কিয়ৎক্ষণ জন্য আকাশে উঠিতে পারিয়াছিল। ৬৬ খ্রীস্টাবেদ, সাইমন নামক এক ব্যক্তি রোম নগরে প্রাসাদ হইতে প্রাসাদে উড়িয়া বেড়াইবার উদ্যোগ পাইয়াছিল। এবং তৎপরে কনস্তান্তিনোপল নগরে একজন মসলমান ঐরােপ চেন্টা করিয়াছিল। পঞ্চদশ শতাব্দীর দান্তে নামক একজন গণিতশাস্ত্রবিৎ পক্ষ নিশ্চমাণ করিয়া আপন অঙ্গে সমাবেশ করিয়া গ্রাসিমীন হ্রদের উপর উঠিয়া গগনমাগে পরিভ্রমণ করিয়াছিলেন। ঐরাপ করিতে করিতে একদিন এক উচ্চ আট্টালিকার উপর পাড়িয়া তাঁহার পদ ভগ্ন হয়। মামসাবরিনিবাসী আলিবর নামক একজন ইংরেজেরও সেই দশা ঘটে। ১৬৩৮ সালে গোলডউইন নামক এক ব্যক্তি শিক্ষিত হংসদিগের সাহায্যে উড়িতে চেন্টা করেন। ১৬৭৮ সালে বেনিয়র নামক একজন ফরাসী পক্ষ প্রস্তুতপকেবািক হস্ত পদে বধিয়া উড়িয়াছিল। ১৭১০ সালে লরেন্ত দে গজমান নামক একজন ফরাসী দারনিমিত বায়াপণ পক্ষীর পঠে আরোহণ করিয়া আকাশে উঠিয়াছিল। মাকুইস দে বাকবিল নামক একজন আপন আটালিকা হইতে উড়িতে চেষ্টা করিয়া নদীগকেভ পতিত হন। বানাসাডেরও এই দশা इाध्व्न ! ১৭৬৭ সালে বিখ্যাত রসায়নবিদ্যার আচাৰ্য্য ডাক্তার বাক প্রচার করেন যে, জলজন বায়পরিপািণ পাত্র আকাশে উঠিতে পারে। আচাৰ্য্য কাবালো ইহা পরীক্ষার দ্বারা প্রমাণীকৃত করেন, কিন্তু তখনও ব্যোমযানের কলপনা হয় নাই। ব্যোমযানের সন্টিকত্তা মোনগোলাফীর নামক ফরাসী। কিন্তু তিনি জলজন বায়ার সাহায্য অবলম্বন করেন নাই । তিনি প্রথমে কাগজের বা বস্ত্রের গোলক নিম্পমাণ করিয়া তন্মধ্যে উত্তপ্ত বায় পরিতেন। উত্তপ্ত হইলে বায় লঘােতর হয়, সতরাং তৎসাহায্যে গোলকসকল উদ্ধেৰ উঠিত। আচাৰ্য্য চালােস প্রথমে জলজন বায় পরিত ব্যোমযানের সন্টি করেন। গ্লোব নামক ব্যোমযানে উক্ত বায় পণ করিয়া প্রেরণ করেন; তাহাতে সাহস করিয়া কোন মনষ্যে আরোহণ করে নাই। রাজপরিষেরাও প্রাণিহত্যার ভয়প্রযক্ত কাহাকেও আরোহণ করিতে দেন নাই। এই ব্যোমযান কিয়ন্দর উঠিয়া ফাটিয়া যায়, জলজন বাহির হইয়া যাওয়ায়, ব্যোমযান তৎক্ষণাৎ ভূপতিত হয়। গোনেশ নামক ক্ষদ্র গ্রামে উহা পতিত হয়। অদম্পটপ কব খেচর দেখিয়া, গ্রাম্য লোকে ভীত হইয়া, মহা কোলাহল আরম্ভ করে। অনেকে একত্রিত হইয়া গ্রাম্য লোকেরা দেখিতে আইল যে, কিরােপ জন্তু আকাশ হইতে নামিয়াছে। দই জন ধৰ্ম্মযাজক বলিলেন যে, ইহা কোন অলৌকিক জীবের দেহাবশিষ্ট চলম | শনিয়া গ্রামবাসিগণ তাহাতে ঢিল মারিতে আরম্ভ করিল, এবং খোঁচা দিতে লাগিল। তন্মধ্যে ভূত আছে, বিবেচনা করিয়া, গ্রাম্য লোকেরা ভূত শান্তির জন্য দলবদ্ধ হইয়া মন্ত্র পাঠপর্ববক গ্রাম প্ৰদক্ষিণ করিতে লাগিল, পরিশেষে মন্ত্রবলে ভূত ছাড়িয়া পলায় কি না দেখিবার জন্য, আবার ধীরে ধীরে সেইখানে ফিরিয়া আসিল। ভূত তথাপি যায় না-বায় সংস্পশোঁ নানাবিধ অঙ্গভঙ্গী করে। পরে একজন গ্রাম্য বীর, সাহস করিয়া তৎপ্রতি বন্দকে ছাড়িল। তাহাতে ব্যোমযানের আবরণ ছিদ্রবিশিষ্ট হওয়াতে, বায় বাহির হইয়া, রাক্ষসের শরীর আরও শীশ হইল। দেখিয়া সাহস পাইয়া, আর একজন বীর গিয়া তাহাতে অস্ত্রাঘাত করিল। তখন ক্ষতমখ দিয়া বহল পরিমাণে জলজন নিৰ্গত হওয়ায়, বীরগণ তাহার দােগন্ধে ভয় পাইয়া রণে ভঙ্গ দিয়া পলায়ন করিল। কিন্তু এ জাতীয় রাক্ষসের শোণিত ঐ বায়। তাহা ক্ষতমখে নিগত হইয়া গেলে, রাক্ষস ছিন্নমন্ডি ছাগের ন্যায় “ধড়ফড়" করিয়া মরিয়া গেল। তখন বীরগণ প্রত্যাগত হইয়া তাহাকে অশ্বপচ্ছে বন্ধনপৰিবাক লইয়া গেলেন। এদেশে হইলে সঙ্গে সঙ্গে Sలి