পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बश्कअ ब्राष्मावली এই মত প্রকৃত হইলে, স্বীকার করিতে হয় যে, আদৌ পথিবী ছিল না। সয্যাঙ্গ হইতে পথিবী বিক্ষিপ্ত হইয়াছে। পথিবী যখন বিক্ষিপ্ত হয়, তখন ইহা বাপরাশি মাত্র-নিহিলে বিক্ষিপ্ত হইবে না। অতএব পথিবীর প্রথমাবস্থা, উত্তপ্ত বালপীয় গোলক। একটি উত্তপ্ত বাপীয় গোলক-আকাশ-পথে বহন কাল বিচরণ করিলে কি হইবে ? প্রথমে তাহার তাপহানি হইবে। যেখানে তাপের আধার মাত্র নাই-সেখানে তাপ-লেশ নাই; তাহা অচিন্তনীয় শৈত্যবিশিষ্ট। আকাশে তাপাধার কিছ নাই—অতএব আকাশমাগা অচিন্তনীয় শৈত্যবিশিস্ট। এই শৈত্যবিশিষ্ট আকাশে বিচরণ করতে করিতে তপ্ত বালপীয় গোলকের অবশ্য তাপক্ষয় হইবে। তাপক্ষয় হইলে কি হইবে ? জলের উত্তপ্ত বাপ সকলেই দেখিয়াছেন। সকলেই দেখিয়াছেন যে, ঐ বাপ শীতল হইলে জল হয়। আরও শীতল হইলে, জল বরফ হয়। সকল পদার্থের এই নিয়ম। যাহা উত্তপ্ত অবস্থায় বাষ্পপকৃত, তাপক্ষয়ে তাহা গাঢ়তা এবং কঠিনত্ব প্রাপ্ত হয়। অতএব বাপীয় গোলকাকৃতি পথিবীর তাপক্ষয় হইলে, কালে তাহা এক্ষণকার গাঢ়তা এবং কঠিনাবস্থা প্রাপ্ত হইবে। পথিবী কঠিনত্ব প্রাপ্ত হইয়াও কিছকাল অগ্নিতাপ্ত ছিল, বিবেচনা হয়। অপেক্ষাকৃত শীতলতা ঘটিলেই কঠিনতা জন্মিবে, কিন্তু কঠিনতা জন্মিলেই তাহার সঙ্গে জীবাবাসযোগ্য শীতলতা ছিল বিবেচনা করা যায় না। সেও কালে ঘাঁটিয়াছিল। তােপক্ষতি হেতু যে শীতলতা, তাহা উপরিভাগেরই প্রথমে ঘটে, উপরিভাগ শীতল হইলেও, ভিতর তপ্ত থাকে। পথিবীর অভ্যন্তরে অদ্যাপি বিষম তাপ আছে। ভূতত্ত্ববিদেরা ইহা পািনঃ পািনঃ প্রমাণীকৃত করিয়াছেন। সেই উত্তপ্ত আদিমাবস্থায়, পথিবীতলে কোন জীব বা উদ্ভিদের বাসের সম্ভাবনা ছিল না। উত্তপ্ত বাস্পীয় গোলক জীবাবাসোপযোগী শীতলতা এবং কঠিনতা প্রাপ্ত হইতে লক্ষ লক্ষ যােগ অতিবাহিত হইয়াছিল, সন্দেহ নাই।-কেন না, আমাদের দধের বাটি জড়াইতে যে কালবিলম্ব হয়, তাহাতেই আমাদের ধৈৰ্য্যচুতি জন্মে। অতএব পথিবীর উৎপত্তির লক্ষ লক্ষ যােগ পরেও জীব বা উদ্ভিদের সন্টি হয় নাই। যাঁহারা ভূতত্ত্বের কিছমাত্র জানেন, তাঁহারাও অবগত আছেন যে, পথিবীর উপরে নানাবিধ মাত্তিকা এবং প্রস্তর স্তরে স্তরে সন্নিবেশিত আছে। এইরপে সতরসন্নিবেশ কিয়দার মাত্র পাওয়া যায়, তাহার পরে যে সকল প্রস্তর পাওয়া যায়, তাহা স্তরত্বশািন্য। নীচে স্তরত্বশান্য প্রস্তর, তদপেরি স্তরে স্তরে নানাবিধ প্রস্তর, গৈরিক বা মাত্তিকা। এই সকল স্তরনিবদ্ধ প্রস্তর, গৈরিক বা মাত্তিকাভ্যন্তরে এমত অনেক প্রমাণ পাওয়া যায় যে, তাহা এক কালে সমদ্রতলে ছিল। এমন কি, অনেকগলি স্তর কেবল ক্ষদ্র ক্ষদ্র সমদ্রচর জীবের শরীরের সমষ্টি মাত্র। চাখড়ি নামে যে গৈরিক বা প্রস্তর প্রচলিত, তাহা ইউরোপখন্ডের অধিকাংশের এবং আশিয়ার কিয়দংশের নিম্পেন্ন স্তরনিবদ্ধ আছে। এক্ষণে বর্তমান অনেকগালি পৰ্ব্ববত কেবল চাখড়ি। এই চাখড়ি কেবল এক প্রকার ক্ষদ্র ক্ষদ্র সমদ্রতলচর জীবের (Globigerinae) মত দেহের সমষ্টি মাত্র। অতএব এই সকল গৈরিকস্তর এক কালে সমদ্রতলস্থ ছিল। ভূভাগের কোন স্থান কখন সমদ্রতলস্থ হইতেছে; আবার কাল সহকারে সমদ্র সে স্থান হইতে সরিয়া যাইতেছে, সমদ্রতল শম্পক ভূমিখণ্ড হইতেছে। ভূগৰভস্থ রদ্ধবায় বা অন্য কারণে কোথাও ভূমি কাল সহকারে উন্নত, কাল সহকারে অবনত হইতেছে। যেখানে ভূমি উন্নত হইল, সেখান হইতে সমদ্র সরিয়া গেল, যেখানে অবনত হইল, তাহার উপরে সাগরজলেরাশি আসিয়া পড়িল। তাহার উপরে সমদ্রবাহিত মাত্তিকা, জীবদেহাদি পতিত হইয়া একটি নািতন স্তর সন্টি হইল। মনে কর, আবার কালে সমদ্র সরিয়া গোল—সমদ্রের তল শক ভূমি হইল—তাহার উপর বক্ষাদি জন্মিয়াজীবসকল জন্মগ্রহণ করিয়া বিচরণ করিল। আবার যদি কখন উহা সমদ্ৰগৰভি স্থ হয়, তবে তদাপরি নাতন স্তর সংস্থাপিত হইবে, এবং তথায় যে সকল জীব বিচরণ করিত, তাহাদিগের দেহাবশেষ সেই স্তরে প্রোথিত হইবে। জীবের অস্থিা ধবংসপ্রাপ্ত হয় না-কিন্তু অতি দীঘকাল প্রোথিত থাকিলে একরােপ প্রস্তরত্ব প্রাপ্ত হয়। এইরূপ অস্থ্যাদিকে “ফসিল” বলা যায়। পাতুরিয়া কয়লা, ফসিল কাঠ। যে কয়টি কথা উপরে বলিলাম, তাহাতে বাবা যাইতেছে যে১। সন্বনিম্পেন্ন স্তরত্নশন্য প্রস্তর। তদপরি অন্যান্য গৈরিকাদি স্তরে স্তরে সন্নিবিন্ট। 冷8翰·