পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बाँच्क्भ রচনাবলী জৈবনিক তাহার পদ্বেগামী। “অন্যথা সিদ্ধিশান্যস্য নিয়তা পৰিববিত্তিতা কারণত্বং” এ কথা যদি সত্য হয়, তবে জৈবনিকই জীবনের কারণ। জৈবনিক ভিন্ন জীবন কুত্ৰাপি সিদ্ধ নহে এবং জৈবনিক জীবনের নিয়ত পদ্ধবািবত্তীর্ণ বটে। অতএব আমাদের এই চাঞ্চল, সখদঃখবহল, বহ। রেহাপদ জীবন, কেবল জৈবনিকের ক্রিয়া, রাসায়নিক সংযোগসমবেত জড় পদার্থের ফল। নিউটনের বিজ্ঞান, কালিদাসের কবিতা, হাম্পেবালট বা শঙ্করাচাষ্যের পান্ডিত্য-সকলই জড় পদার্থের ক্রিয়া; শাক্যসিংহের ধৰ্ম্মমাজ্ঞান, আকবরের শৌষ্য, কোমতের দশনবিদ্যা সকলই জড়ের গতি। তোমার বনিতার প্রেম, বালকের অমত ভাষা, পিতার সদপদেশ-সকলই জড় পদার্থের আকুশ8ন সম্প্রসারণ মাত্র-জৈবনিক ভিন্ন ভিতরে আর ঐন্দ্রজালিক কেহ নাই। যে যশের জন্য তুমি প্ৰাণপাত করিতেছ, সে এই জৈবনিকের ক্রিয়া-যেমন সমদ্রগািড়জন এক প্রকার জড়পদার্থকৃত কোলাহল, যশ তেমনি জড়পদার্থকৃত অন্য প্রকার কোলাহল মাত্র। এই সব্বকত্তা জৈবনিক অম্লজান, জলজান, অঙ্গারজান এবং যবক্ষারজানের রাসায়নিক সমষ্টি। অতএব এই চারিটি ভৌতিক পদার্থই ইচ্ছাময়ের ইচ্ছায় সর্বকত্তা। ইহারা প্রকৃত ভূত, এবং এই ভূতের কান্ডসকল আশ্চৰ্য্য বটে। পাঠক দেখিবেন যে, আমাদিগের পঞ্চােব পরিচিত পঞ্চ ভূত হইতে এই আধনিক ভূতগণের যে প্রভেদ, তাহা কেবল প্রমাণগত। নচেৎ উভয়েরই ফল প্রকৃতিবাদ (Matcrialism), সাংখ্যার প্রকৃতিবাদ হইতে আধনিক প্রকৃতিবাদের প্রভেদ, প্রধানতঃ প্রমাণগত। তবে আধনিক বলেন, ক্ষিত্যাদি ভূত নহে, আমাদিগের পরিচিত এই ভূতগলিই ভূত। যেই ভূত হউক, তাহাতে আমাদের বিশেষ ক্ষতি নাই,-কেন না, মনষ্যেজাতি ভূত ছাড়া হইল না। নাই হউক-স্মরণ রাখিলেই হইল, ভূতের উপর সব্বভূতময় এক জন আছেন। তাঁহা হইতে ভূতের এ খেলা। পরিমাণ-রহস্য আমাদের সকল ইন্দ্রিয়ের অপেক্ষা চক্ষর উপর বিশ্বাস অধিক। কিছতে যাহা বিশ্বাস না করি, চক্ষে দেখিলেই তাহাতে বিশ্বাস হয়। অথচ চক্ষের ন্যায় প্রবণগুক কেহ নহে। যে সংয্যের পরিমাণ লক্ষ লক্ষ যোজনে হয় না, তাহাকে একখানি সবণ থালির মত দেখি। প্রকাশড বিশ্বকে একটি ক্ষদ্র নক্ষত্ৰ দেখি। যে চন্দ্রের দীরতা সয্যের দরতার চারি শত ভাগের এক ভাগও নহে, তাহা সায্যের সমদারবত্তীর্ণ দেখায়। যে পরমাণতে এই জগৎ নিৰ্ম্মিত, তাহার একটিও দেখিতে পাই না। আণবিীক্ষণিক জীব জৈবনিকাদি কিছই দেখিতে পাই না। এই অবিশ্বাস-যোগ্য চক্ষকেই আমাদের বিশ্বাস। দশানেন্দ্রিয়ের এইরপে শক্তিহীনতার গতিকে আমরা জগতের পরিমাণবৈচিত্ৰ্য কিছই বাঝিতে পারি না। জ্যোতিপ্ৰকাদি অতি বহৎ পদার্থকে ক্ষদ্র দেখি, এবং অতি ক্ষদ্র পদাৰ্থসকলকে একেবারে দেখিতে পাই না। ভাগ্যক্রমে, মন বাহ্যোন্দ্ৰিয়াপেক্ষা দরিদশী ; আদর্শনীয়ও বিজ্ঞান দ্বারা মিত হইয়াছে। সে পরিমাণ অতি বিস্ময়কর। দই একটা উদাহরণ দিতেছি। সকলে জানেন যে, পথিবীর ব্যাস ৭০৯১ মাইল। যদি পথিবীকে এক মাইল দীঘ, এক মাইল প্রস্থ, এমত খন্ডে খন্ডে ভাগ করা যায়, তাহা হইলে উনিশ কোটি ছয়ষট্টি লক্ষ ছাব্বিশ হাজার এইরপ বগমাইল পাওয়া যায়। এক মাইল দীঘে এক মাইল প্রস্থে, এবং এক মাইল উদ্ধেৰ এরপ, ২৫৯.৮oo.oooooo ঘন মাইল পাওয়া যায়। ওজনে পথিবী যত টন হইয়াছে, তাহা অঙ্কের দ্বারা লিখিলাম-৬.o৬৯,ooo,ooooooooooooooo । এক টন সাতাইশ মণের অধিক।।* এই আকার কি ভয়ানক, তাহা মনে কলপনা করা যায় না। সমগ্র হিমালয় পৰ্ব্ববত ইহার নিকট বালকাকণার অপেক্ষাও ক্ষদ্র। কিন্তু এই প্রকাশন্ড পথিবী সংয্যের আকারের সহিত তুলনায় বালকমাত্র। চন্দ্র একটি প্রকান্ড উপগ্রহ, উহা পথিবী হইতে ২৪oooo মাইল দরে অবস্থিত। সােয্য এ প্রকার প্রকাশন্ড পদাৰ্থ যে, তাহা অন্তঃশান্য করিয়া পথিবীকে চন্দ্রসমেত তাহার মধ্যস্থলে স্থাপিত করিলে, চন্দ্ৰ এখন ষেরপ দরে থাকিয়া পথিবীর পাশ্বে বৰ্ত্তন করে,

  • আশচষ্য সৌরোৎপাত দেখ।

Sct R