পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী এই রচনা অতি মনোমোহিনী। রামায়ণের রাম ক্ষত্রিয়, মহােজ্ঞজৰালকুলাসম্ভত, মহাতেজস্বী। তিনি পৌরাপবাদ শ্রবণে, হৃদ্ধিদ্ধ সিংহের ন্যায় রোষে দঃখে গজন করিয়া উঠিলেন। ভবভূতির রামচন্দ্র তৎপরিবত্তে সত্ৰীলোকের মত পা ছড়াইয়া কাঁদিতে বসিলেন। তাঁহার ক্ৰোিন্দনের কিয়দংশ পব্বেই উদ্ধত করিয়াছি। রামায়ণের সঙ্গে তুলনা করিবার জন্য অবশিস্টাংশও উদ্ধত করিলাম। রাম। হা কষ্টমাতিবীভৎসকৰ্ম্মমা নািশংসোহসিম সংবত্তঃ শৈশবাৎ প্রভৃতি পোষিতাং প্রিয়াং সৌহৃদাদপথগাশিয়ামিমাম। ছদ্মনা পরিদদামি মতবে সৌনিকো গহশকুন্তিকামিব। তৎ কিমন্সপশনীয়ঃ পাতকী দেবীং দােষষামি। [ সীতায়াঃ শিরঃ স্বৈরমান্নময্য বাহামাকৰ্ষন ] অপব্বকৰ্ম্মমচাগডালময়ি মন্ধে বিমঞ্চ মাম। শ্রিতাসি চন্দনদ্ৰান্ত্যা দাব্বিপাকং বিষ্যদ্রমেম৷ করিয়া, দঃখিত রাঘবকে প্রত্যুত্তরে কহিল, “এইরােপই বটে-সংশয় নাই।” তখন শত্ৰদমন রামচন্দ্ৰ সকলের এই কথা শনিয়া বয়স্যাবগকে বিদায় দিলেন। বন্ধবগকে বিদায় দিয়া, বদ্ধির দ্বারা অবধারিত করিয়া সমীপে আসীন দৌবারিককে এই কথা বলিলেন যে, শািভলক্ষণ সমিত্ৰা-নন্দন লক্ষণকে ও মহাভাগ ভরতকে ও অপরাজিত শত্ৰাঘকে শীঘ্ন আন। * * * তাঁহারা রামের মাখ, রাহগ্ৰস্তু চন্দ্রের ন্যায় এবং সন্ধ্যাকালীন আদিত্যের ন্যায় প্রভাহীন দেখিলেন। ধীমান রামচন্দ্রের নয়নযগল বাল্পপণ্য এবং মাখ হতশোেভ পন্মের ন্যায় দেখিলেন। তাঁহারা ত্বরিত তাঁহার অভিবাদন করিয়া এবং তাঁহার পদযািগল মন্তকে ধারণ করিয়া সকলে “ সমাহিত হইয়া রহিলেন। রাম অশ্রপাত করিতে লাগিলেন। উপবেশন কর।” এই বলিয়া কহিতে লাগিলেন, “হে নরেশ্বরগণ ! আমার সব্বস্ব তোমরা; তোমরা আমার জীবনী; তোমাদিগের কৃত রাজ্য আমি পালন করি। তোমরা শাস্ত্রার্থ অবগত; এবং তোমাদের বদ্ধি পরিামাজিত করিয়াছ। হে নরেশ্বরগণ, তোমরা মিলিত হইয়া, যাহা বলি তাহার অর্থানসন্ধান কর।” রামচন্দ্ৰ এই কথা বলিলে অবধানপরায়ণ ভ্ৰাতৃগণ, “রাজা কি বলেন” ইহা ভাবিয়া উদ্বিগ্নচিত্ত হইয়া রহিলেন। তখন সেই দীনচেতা উপবিন্স্ট ভ্রাতৃগণকে পরিশম্পকমখে রামচন্দ্ৰ বলিতে লাগিলেন, “তোমাদিগের মঙ্গল হউক! আবার সীতার সম্পবন্ধে পৌরজনমধ্যে যেরপ কথা বত্তিয়াছে, তাহা শািন—মন অন্যথা করিও না। জনপদে এবং পৌরজনমধ্যে আমার সমহান অপবাদরােপ বীভৎস কথা রাঁটিয়াছে, আমার তাহাতে মন্মচ্ছেদ করিতেছে। আমি মহাত্মা ইক্ষবাকুদিগের কুলে জন্মিয়াছি, সীতাও মহাত্মা জনকরাজের সৎকুলে জন্মিয়াছেন। আমার অন্তরাত্মাও জানে যে, যশস্বিনী সীতা শব্দ্ধচরিত্রা। তখন আমি বৈদেহীকে গ্রহণ করিয়া অযোধ্যায় আসিলাম। এক্ষণে এই মহান অপবাদে আমার হৃদয়ে শোক বত্তিতেছে। পৌরজনমধ্যে এবং জনপদে সমহান অপবাদ হইয়াছে। লোকে যাহার অকীৰ্ত্তি গান করে, যাবৎ সেই অকীৰ্ত্তি লোকে প্রকীৰ্ত্তিত হইবে, তাবৎ সে অধমলোকে পতিত থাকিবে। দেবতারা অকীৰ্ত্তির নিন্দা করেন, এবং কীৰ্ত্তিই সকল লোকে পাজনীয়া। সকল মহাত্মা ব্যক্তিদের যত্ন হে পরিষষভগণ, আমি অপবাদভয়ে ভীত হইয়া জীবন ত্যাগ করিতে পারি, সীতার V5 অতএব তোমরা দেখ, আমি কি শোকসাগরে পতিত হইয়াছি! আমি ইহার অধিক দঃখ জগতে আর দেখি না। অতএব হে সৌমিত্রে ? তুমি কল্য প্ৰভাতে সমন্ত্ৰাধিস্ঠিত রথে সীতাকে আরোপণ করিয়া স্বয়ং আরোহণ করিয়া, তাঁহাকে দেশান্তরে ত্যাগ করিয়া আইস। গঙ্গার অপর পারে তমসা নদীর তীরে মহাত্মা বালিমীকি মানির সবগতুিল্য আশ্রম। হে রঘানন্দন! সেই বিজনদেশে তুমি ইহাকে ত্যাগ করিয়া শীঘ্র আইস,-আমার বচন রক্ষা কর-সীতাপরিত্যাগ বিষয়ে ইহার প্রতিবাদ কিছই করিও না। অতএব হে সৌমিত্রে! যাও—এ বিষয়ে আর কিছ বিচার করিবার প্রয়োজন নাই। তুমি যদি ইহার বারণ কর, তবে আমার পরমাপ্রীতিকর হইবে। আমি চরণের পশে এবং জীবনের দ্বারা তোমাদিগকে শপথ করাইতেছি যে, যে ইহাতে আমাকে অনানয় করিবার জন্য কোনরপে কোন কথা বালিবে, আমার অভীস্টহানি হেতুক তাহার শত্র খ্যাতি নিত্য বত্তি বে। যদি আমার আজ্ঞাবহ থাকিয়া, তোমরা আমাকে সম্পমান করিতে চাও, তোমরা তবে আমার বচন রক্ষা কর, অদ্য সীতাকে লইয়া যাও। 为心心