बिबिथ अवक-छेखाकृब्रिक আমরা উত্তরচরিত নাটকের প্রকৃত সমালোচনা করি নাই। পাঠকের সহিত আনপেন্ধিৰ্ব্বক নাটক পাঠ করিয়া যেখানে যেখানে ভাল লাগিয়াছে, তাহাঁই দেখাইয়া দিয়াছি। গ্রন্থের প্রত্যেক অংশ পথক পথক করিয়া পাঠককে দেখাইয়াছি। এরূপে গ্রন্থের প্রকৃত দোষগণের ব্যাখ্যা হয় না। এক একখানি প্রস্তর পথক পথক করিয়া দেখিলে তাজমহলের গৌরব বঝিতে পারা যায় না। একটি একটি বক্ষ পথক পথক করিয়া দেখিলে উদ্যানের শোভা অনভূত করা যায় না। এক একটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বণনা করিয়া মনষ্যমাত্তির অনিববিচনীয় শোভা কণন করা যায় না। কোটি কলস জলের আলোচনায় সাগরমহাত্ম্য অনভূত করা যায় না। সেইরূপ কাব্যগ্রন্থের। এ স্থান ভাল। রচনা, এই স্থান মন্দ রচনা, এইরূপ তাহােয় সব্বাংশের পয্যালোচনা করিলে প্রকৃত গণাগণে বঝিতে পারা যায় না। যেমন অট্টালিকার সৌন্দৰ্য্য বঝিতে গেলে সমােদয় অট্টালিকাটি এককালে দেখিতে হইবে, সাগরগৌরব অনভূত করিতে হইলে, তাহার হে রাজনন্দন! যেহেতু তুমি তোমার এই প্রিয়তমাকে বিশদ্ধা জানিয়াও লোকাপবাদ ভয়ে পরিত্যাগ করিয়াছিলে, তজজন্যই দিব্যজ্ঞানে বিশদ্ধা জানিয়াও এই শপথাৰ্থ আদেশ করিয়াছি। রাম বালিমীকি কৰ্ত্তক এইরপ কথিত হইয়া এবং সেই দেববর্ণিনী জানকীকে দেখিয়া কৃতাঞ্জলিপৰিবাক জগৎ স্থা জনগণের সমীপে এইরূপ বলিতে লাগিলেন। হে ধৰ্ম্মম জ্ঞা! হে মহাভাগ! আপনি যাহা বলিতেছেন, তাহাই সত্য। হে ব্ৰহ্মন! আপনার পবিত্ৰ বাক্যেতেই আমার প্রতায় হইয়াছে, এবং বৈদেহীও লন্ডকামধ্যে পৰবৰ্তীকালে দেবগণ সমীপে প্রত্যয় প্রদান ও শপথ করিয়াছেন, তজজন্যই আমি ইহাকে গহে প্রবিন্স্ট করাইয়াছিলাম। হে ব্ৰহ্মন! এই জানকীকে আমি পবিত্র জানিয়াও শািন্ধ লোকাপবাদভয়ে ত্যাগ করিয়াছি। আর যমল কুশীলব আমারই পত্র, আমি তাহা জানি; কিন্তু আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন। আমি যে কারণে জানকীকে ত্যাগ করিয়াছি, সেই লোকাপবাদ আমার পক্ষে সৰ্ব্ববাপেক্ষা বলবান। জগন্মধ্যে পবিত্ৰা জানকীতে আমার প্রীতি থাকুক। অনন্তর সীতা-শপথ বিষয়ে রামের অভিপ্রায় জানিয়া দেবগণ ব্ৰহ্মাকে পরোেবত্তীর্ণ করিয়া সেই স্থলে সমাগত হইলেন এবং আদিত্যগণ বািসগণ রদ্রগণ বায়গণ বিশ্বদেবগণ সকল সাধ্যগণ দেবগণ সকল পরমষিগণ নাগগণ পক্ষিগণ সকলেই হৃন্টান্তঃকরণ হইয়া সে স্থলে আগমন করিলেন। রাম সমাগত সেই সকল দেবগণ ঋষিগণকে দেখিয়া পনবার বাল্মীকিকে সম্বোধন করিয়া বলিতে লাগিলেন। হে মানিশ্রেষ্ঠ ! পবিত্ৰ ঋষিবাক্যে আমার প্রত্যয় আছে। জগতে বিশদ্ধশালিনী সীতার প্রতি আমার প্রীতি থাকুক; কিন্তু সীতাশপথ দশ নজন্য কৌতহলাক্রোন্ত হইয়া সকলে সমাগত হইয়াছেন। তখন দিব্য গন্ধবিশিস্ট মনোহর এবং সব্বপাপপণ্য-সাক্ষী পবিত্র বায় প্রবাহিত হইয়া সেই জনবন্দকে আহমাদিত করিল। পািব্বকালে সত্যযাগের ন্যায়। সেই আশ্চৰ্য্য অচিন্তনীয় ব্যাপার, সকল রাষ্ট্ৰ হইতে সমাগত জনমণ্ডলী সমাহিত হইয়া দেখিতে লাগিল। কাষায়-বস্ত্রপরিধােনা সীতা সকলকে সমাগত দেখিয়া অধোমখী, অধোদটি এবং কৃতাঞ্জলি হইয়া এইরাপ কহিতে লাগিলেন। যদি আমি মনেতেও রাম ভিন্ন অন্য চিন্তা না করিয়া থাকি, তবে পথিবীদেবী আমাকে বিবর প্রদান করুন। যদি আমি কায়মনোবাক্যে রামাচ্চন করিয়া থাকি, তবে পথিবীদেবী আমাকে বিবর প্রদান করুন। “আমি রাম ভিন্ন জানি না,” আমার এই বাক্য যদি সত্য হয়, তবে পথিবীদেবী আমাকে বিবর প্রদান করবেন। বৈদেহী এইরূপ শপথ করিলে, তখন অমিতবিক্রম, দিব্য রত্নালঙ্কৃত নাগগণ কর্তৃক মস্তকে বাহিত, দিব্যাকান্তি, দিব্য সিংহাসন রসাতল হইতে সহসা আবিভূতি হইল এবং সেই স্থলে পথিবীদেবী দই বুকুর, সাঁতাকে গ্রহণ করিয়া এবং স্বাগত প্রত্রে অভিনন্দন করিয়া সেই উত্তমাসনে উপবেশন সিংহাসনারাঢ়া সেই সীতাকে রসাতলে প্রবেশ করিতে দেখিয়া তদ্যুপরি সবগ হইতে পাপবনিট হইতে লাগিল এবং দেবগণের অতি বিপল সাধাবাদ হঠাৎ উখিত হইল। সীতার রসাতল প্রবেশ দেখিয়া অন্তরীক্ষগত দেবগণ হৃস্টান্তঃকরণ হইয়া, “সীতা সাধ সীতা সাধ, যাঁহার এইরূপ চরিত্র” ইত্যাদি নানাপ্রকার বাক্য কহিতে লাগিলেন। যজ্ঞস্থলগত সেই সকল মনিগণ ও মনষ্যেশ্রেষ্ঠ রাজগণ এই অদ্ভুত ঘটনাহেতু বিস্ময় হইতে বিরত হইতে পারিলেন না। তৎকালে আকাশে, ভূতলে স্থাবর জঙ্গম পদার্থ ও মহাকায় দানবগণ এবং পাতালে নাগগণ সকলেই হৃস্টান্তঃকরণ হইয়াছিলেন। তাঁহাৱা হৃস্টমনে শব্দ করিতে লাগিলেন; কাহারা বা ধ্যানস্থ হইলেন, কাহারাও বা রামকে দেখিতে লাগিলেন, এবং কেহ কেহ।। বা নিঃসংজ্ঞা হইয়া সীতাকে অবলোকন করিতে লাগিলেন। এইরূপে সমাগত সেই সকল ঋষি প্রভৃতির সীতার রসাতল প্রবেশ দেখিয়া এই প্রকার সমাগম হইয়াছিল এবং সেই মহত্তে সমদায় জগৎ সমকালেই মোহিত হইয়াছিল। SS
