পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बिबिथ अबक—र्गबानीऊ e. खाटनब ভারতবষীয়েরা শেষে আসিয়া একটি এমন প্রদেশ অধিকার করিয়া বসতি স্থাপন করিয়াছিলেন যে, তথাকার জল বায়ার গণে তাঁহাদিগের স্বাভাবিক তেজ লিপ্ত হইতে লাগিল। তথাকার তাপ অসহ্য, বায় জল বাল্পপণ্য, ভূমি নিম্পনা এবং উৰুবরা, এবং তাহার উৎপাদ্য অসার, তেজোহানিকারক ধান্য। সেখানে আসিয়া আৰ্য্যতেজ অন্তহিত হইতে লাগিল, আৰ্য্যপ্রকৃতি কোমলতাময়ী, আলস্যের বশবৰ্ত্তিনী, এবং গহসখাভিলাষিণী হইতে লাগিল। সকলেই বঝিতে পারিতেছেন যে, আমরা বাঙ্গালার পরিচয় দিতেছি। এই উচ্চাভিলাষশনা, অলস, নিশ্চেন্ট, গহসখপরায়ণ চরিত্রের অন্যাকরণে এক বিচিত্র গীতিকাব্য সন্ট হইল। সেই গীতিকাব্যও উচ্চাভিলাষশন্য, অলস, ভোগাসক্ত, গহসখপরায়ণ। সে কাব্যপ্রণালী অতিশয় কোমলতাপািণ, অতি সমধরি, দম্পতিপ্ৰণয়ের শেষ পরিচয়। অন্য সকল প্রকারের সাহিত্যকে পশ্চাতে ফেলিয়া, এই জাতিচরিত্রানকারী গীতিকাব্য সাত আট শত বৎসর পর্যন্ত বঙ্গদেশে জাতীয় সাহিত্যের পদে দাঁড়াইয়াছে। এই জন্য গীতিকাব্যের এত বাহল্য। বঙ্গীয় গীতিকাব্যলেখকদিগকে দই দলে বিভক্ত করা যাইতে পারে। এক দল, প্রাকৃতিক শোভার মধ্যে মনীষাকে স্থাপিত করিয়া তৎপ্রতি দলিট করেন; আর এক দল, বাহ্য প্রকৃতিকে দরে রাখিয়া কেবল মনষাহাদয়কেই দলিট করেন। এক দল মানবহৃদয়ের সন্ধানে প্রবত্ত হইয়া বাহ্যপ্রকৃতিকে দীপা করিয়া তদালোকে অন্বেষ্য বস্তুকে দীপ্ত এবং প্রসফট করেন; আর এক দল, আপনাদিগের প্রতিভাতেই সকল উক্তজবল করেন, অথবা মনষ্যচরিত্র-খনিতে যে রত্ন মিলে, তাহার দীপ্তির জন্য অন্য দীপের আবশ্যক নাই, বিবেচনা করেন। প্রথম শ্রেণীর প্রধান জয়দেব, দ্বিতীয় শ্রেণীর মািখপাত্র বিদ্যাপতিকে ধরিয়া লওয়া যাউক। জয়দেবাদির কবিতায় সতত মাধবী যামিনী, মলয়সমীর, ললিতলতা, কুবলয়দলশ্রেণী, স্ফুটিত কুস্যম, শরচ্চন্দ্র, মধকরবন্দ, কোকিলাকুজিত কুঞ্জ, নবজলধর, এবং তৎসঙ্গে কামিনীর মখমন্ডল, ভ্ৰাবল্লী, বাহলতা, বিস্বৌদ্ঠ, সরসীরহালোচন, অলস নিমেষ, এই সকলের চিত্র, বাতোলমথিত তটিনীতিরঙ্গবৎ সতত চাকচিক্য সম্পাদনা করিতেছে। বাস্তবিক এই শ্রেণীর কবিদের কবিতায় বাহ্য প্রকৃতির প্রাধান্য। বিদ্যাপতি যে শ্রেণীর কবি, তাঁহাদিগের কাব্যে বাহ্য প্রকৃতির সম্প্ৰবন্ধ নাই, এমত নহে-বাহ্য প্রকৃতির সঙ্গে মানবহৃদয়ের নিত্য সম্প্ৰবন্ধ, সতরাং কাব্যেরও নিত্য সম্প্ৰবন্ধ; কিন্তু তাঁহাদিগের কাব্যে বাহ্য প্রকৃতির অপেক্ষাকৃত অস্পষ্টতা লক্ষিত হয়, তৎপরিবত্তে মনষ্যহীদয়ের গঢ়ি তলচারী ভাবসকল প্রধান স্থান গ্রহণ করে। জয়দেবাদিতে বহিঃপ্রকৃতির প্রাধান্য, বিদ্যাপতি প্রভৃতিতে অন্তঃপ্রকৃতির রাজ্য। জয়দেব, বিদ্যাপতি উভয়েই রাধাকৃষ্ণের প্রণয়কথা গীত করেন। কিন্তু জয়দেব যে প্রণয় গীত করিয়াছেন, তাহা বহিরিান্দ্রিয়ের অনগামী। বিদ্যাপতি প্রভৃতির কবিতা, বিশেষতঃ চন্ডীদাসাদির কবিতা বহিরিান্দ্ৰিয়ের অতীত। তাহার কারণ কেবল এই বাহ্য প্রকৃতির শক্তি। স্থল প্রকৃতির সঙ্গে স্থলে শরীরেরই নিকট সম্প্রবন্ধ, তাহার আধিক্যে কবিতা একটি ইন্দ্ৰিয়ানসারিণী হইয়া পড়ে। বিদ্যাপতির দল মনষাহাদয়কে বহিঃপ্রকৃতি ছাড়া করিয়া, কেবল তৎপ্রতি দণ্টি করেন; সতরাং তাঁহার কবিতা, ইন্দ্ৰিয়ের সংস্রবশন্য, বিলাসশান্য পবিত্র হইয়া উঠে। জয়দেবের গীত, রাধাকৃষ্ণের বিলাসপণ; বিদ্যাপতির গীত রাধাকৃষ্ণের প্রণয়পর্ণে। জয়দেব ভোগ; বিদ্যাপতি আকাঙ্ক্ষা ও সমিতি। জয়দেব সখি, বিদ্যাপতি দঃখ। জয়দেব বসন্ত, বিদ্যাপতি বিষা। জয়দেবের কবিতা, উৎফল্লিকমলজলশোভিত, বিহঙ্গমাকুল, স্বচ্ছ বারিবিশিষ্ট সন্দের সরোবর; বিদ্যাপতির কবিতা দরগামিনী বেগবতী তরঙ্গসংকুলা নদী। জয়দেবের কবিতা সকণােহার, বিদ্যাপতির কবিতা রদ্রোক্ষমালা। জয়দেবের গান, মরজীবীণাসঙ্গিনী স্ত্রীকণ্ঠগীতি; বিদ্যাপতির গান, সায়াহসমীরণের নিশ্বাস। আমরা জয়দেব ও বিদ্যাপতির সম্পবন্ধে যাহা বলিয়াছি, তাঁহাদিগকে এক এক ভিন্নশ্রেণীর গীতিকবির আদর্শস্বরপ বিবেচনা করিয়া তাহা বলিয়াছি। যাহা জয়দেব সম্পবন্ধে বলিয়াছি, তাহা ভারতচন্দ্র সম্পবন্ধে বত্তে, যাহা বিদ্যাপতি সম্পবন্ধে বলিয়াছি, তাহা গোবিন্দদাস চশডীদাস প্রভৃতি বৈষ্ণব কবিদিগের সম্প্রবন্ধে বেশী খাটে, বিদ্যাপতি সম্পবন্ধে তাঁত খাটে না। আধনিক বাঙ্গালি গীতিকাব্যলেখকগণকে একটি তৃতীয়শ্রেণীভুক্ত করা যাইতে পারে। তাঁহারা আধনিক ইংরাজি গীতিকবিদিগের অনগামী। আধনিক ইংরাজি কবি ও আধনিক বাঙ্গালি কবিগণ সভ্যতা বদ্ধির কারণে স্বতন্ত্র একটি পথে চলিয়াছেন। পর্বােব-কবিগণ, কেবল আপনাকে চিনিতেন, আপনার নিকটবত্তী যাহা, তাহা চিনিতেন। যাহা আভ্যন্তরিক বা নিকটস্থ Sసిఏ