बिबक्ष अवक-छौथनी দায্যোধন, জরাসন্ধ, শিশপাল প্রভৃতি ভুবনপ্রথিত মহাবীর সকল লক্ষ্য বিধিতে যত্ন করিতেছেন। একে একে সকলেই বিন্ধনে অক্ষম হইয়া ফিরিয়া আসিতেছেন। হায়! দ্ৰৌপদীর বিবাহ হয় না। অন্যান্য রাজগণমধ্যে সব্বশ্রেষ্ঠ অঙ্গাধিপতি কণ লক্ষ্য বিধিতে উঠিলেন। ক্ষদ্র কাব্যকার এখানে কি করিতেন বলা যায় না-কেন না, এটি বিষম সঙ্কট। কাব্যের প্রয়োজন, পান্ডবের সঙ্গে দ্ৰৌপদীর বিবাহ দেওয়াইতে হইবে। কণ লক্ষ্য বিধিলে তাহা হয় না। ক্ষদ্র কবি বোধ হয়, কণাকেও লক্ষ্য বিন্ধনে অশক্ত বলিয়া পরিচিত করিতেন। কিন্তু মহাভারতের মহাকবি জাজবল্যমান দেখিতে পাইতেছেন যে, কণের বীৰ্য্য, তাঁহার প্রধান নায়ক অজ্ঞজনের বীয্যের মানদন্ড। কৰ্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী এবং অজ্ঞজনেহন্তে পরাভূত বলিয়াই অজ্ঞজনের গৌরবের এত আধিক্য; কণাকে অন্যের সঙ্গে ক্ষদ্রবীয্য করিলে অজনের গৌরব কোথা থাকে ? এরােপ সঙ্কট, ক্ষদ্র কবিকে বঝাইয়া দিলে তিনি অবশ্য স্থির করিবেন যে, তবে অত হাঙ্গামায় কাজ নাই-কণকে না। তুলিলেই ভাল হয়। কাব্যের যে সব্বাঙ্গসম্পন্নতার ক্ষতি হয়, তাহা তিনি বঝিবেন না-সকল রাজাই যেখানে সব্বাঙ্গসন্দরী লোভে লক্ষ্য বিধিতে উঠিতেছেন, সেখানে মহাবলপরাক্রান্ত কণাই যে কেন একা উঠিবেন না, এ প্রশেনর কোন উত্তর নাই। মহাকবি আশ্চৰ্য্য কৌশলময়, এবং তীক্ষা দহ্মিন্টশালী। তিনি অবলীলাক্রমে কণাকে লক্ষ্যবিন্ধনে উখিত করিলেন, কণ্যের বীয্যের গৌরব অক্ষম রাখিলেন, এবং সেই অবসরে, সেই উপলক্ষে, সেই একই উপায়ে, আর একটি গারতের উদ্দেশ্য সসিদ্ধ করিলেন। দ্ৰৌপদীর চরিত্র পাঠকের নিকটে প্রকটিত করিলেন। যে দিন জয়দ্ৰথ দ্ৰৌপদী কর্তৃক ভূতলশায়ী হইবে, যে দিন দায্যোধনের সভাতলে দ্যুতজিতা অপমানিতা মহিষী সবামী হইতেও সবাতন্ত্র্য অবলম্বনে উন্মাখিনী হইবেন, সে দিন দ্ৰৌপদীর যে চরিত্র প্রকাশ পাইবে, আদ্য সেই চরিত্রের পরিচয় দিলেন। একটি ক্ষদ্র কথায় এই সকল উদ্দেশ্য সফল হইল। বলিয়াছি, সেই প্রচন্ডপ্রতাপসমন্বিতা মহাসভায় কুমারীকুসমে শকাইয়া উঠে। কিন্তু দ্ৰৌপদী কুমারী, সেই বিষয় সভাতলে রাজমন্ডলী, বীরমন্ডলী, ঋষিমন্ডলীমধ্যে, দ্রুপদরাজিতুল্য পিতার, ধন্টদ্যু ভ্ৰাতার অপেক্ষা না করিয়া, কণীকে বিন্ধনোদ্যত দেখিয়া বলিলেন, “আমি সতপত্রকে বরণ করিব না।” এই কথা শ্রবণমাত্র কণা সামৰ্ষ হাস্যে সহেযািসন্দশ নপািব্বক শরাসন পরিত্যাগ করিলেন। এই কথায় যতটা চরিত্র পরিসফট হইল, শত পঠা লিখিয়াও ততটা প্রকাশ করা দঃসাধ্য। এস্থলে কোন বিস্তারিত বর্ণনার প্রয়োজন হইল না-দ্ৰৌপদীকে তেজস্বিনী বা গৰিবােতা বলিয়া ব্যাখ্যাত করিবার আবশ্যকতা হইল না। অথচ রাজদহিতার দদািমনীয় গব্ব নিঃসঙ্কোচে বিসফারিত হইল। এবং বলধারী ভীমাজন দ্যুতমখে বিসজিত হইয়াও কোন কথা কহেন নাই, শত্রর দাসত্ব নিঃশব্দে স্বীকার করিলেন। এস্থলে তাঁহাদিগের অন্যগামিনী দাসীর কি করা। কৰ্ত্তব্য ? সবমিকর্তৃক দন্তমখে সমাপিত হইয়া সর্বামিগণের ন্যায় দাসীত্ব স্বীকার করাই আৰ্য্যনারীর স্বভাবসিদ্ধ। দ্ৰৌপদী কি করিলেন ? তিনি প্রাতিকামীর মাখে দাতবাৰ্ত্তা এবং দর্য্যোধনের “হে সতিনন্দন! তুমি সভায় গমন করিয়া যাধিস্ঠিরকে জিজ্ঞাসা কর, তিনি আগ্নে আমাকে, কি আপনাকে দ্যুতমখে বিসর্জন করিয়াছেন। হে সন্তাত্মজা! তুমি যধিস্ঠিরের নিকট এই বত্তান্ত জানিয়া এস্থানে আগমনপকেবািক আমাকে লইয়া যাইও । ধৰ্ম্মরাজ কিরাপে পরাজিত হইয়াছেন, জানিয়া আমি তথায় গমন করিব।” দ্ৰৌপদীর অভিপ্রায়, দাসত্ব স্বীকার করবেন না। দ্ৰৌপদীর চরিত্রে দাইটি লক্ষণ বিশেষ সম্পািন্ট-এক ধৰ্ম্মাচরণ, দ্বিতীয় দীপ। দীপ, ধর্মের কিছ বিরোধী, কিন্তু এই দাইটি লক্ষণের একাধারে সমাবেশ অপ্রকৃত নহে। মহাভারতকার এই দাই লক্ষণ অনেক নায়কে একত্রে সমাবেশ করিয়াছেন; ভীমসেনে, অর্জনে, অশ্বথামায়, এবং সচরাচর ক্ষত্ৰিয়চরিত্রে। এতদভয়কে মিশ্ৰিত করিয়াছেন। ভীমসেনে দপ পণ্যমাত্রায়, এবং অজ্ঞজনে ও অশ্বখামায় অন্ধমাত্রায় দেখা যায়। দীপ শব্দে এখানে আত্মশ্লাঘাপ্রিয়তা নিন্দেশ করিতেছি না; মানসিক তেজস্বিতাই আমাদের নিদ্দেশ্য। এই তেজস্বিতা দ্ৰৌপদীতেও পণ্যেমাত্রায় ছিল। অতীজনে এবং অভিমন্যুতে ইহা আত্মশক্তি নিশ্চয়তায় পরিণত হইয়াছিল; ভীমসেনে ইহা বলবদ্ধির কারণ হইয়াছিল; দ্ৰৌপদীতে ইহা ধৰ্ম্মবদ্ধির কারণ হইয়াছে। ఏసి