পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী পণ্য সবামী ছিল, না কবি এইরুপ সাজাইয়াছেন ? মহাভারতের যে ঐতিহাসিক ভিত্তি আছে, তাহা প্ৰবন্ধান্তরে আমি স্বীকার করিয়াছি ও বক্সাইয়াছি। কিন্তু মহাভারতের ঐতিহাসিক ভিত্তি আছে বলিয়াই যে উহার সকল কথাই ঐতিহাসিক, ইহা সিদ্ধ হয় না। যাহা স্পষ্টতঃ প্রক্ষিপ্ত, তাহা ঐতিহাসিক নহে-এ কথা ত স্বতঃসিদ্ধ। কিন্তু দ্ৰৌপদী-চরিত্র প্রক্ষিপ্ত বলা যায় নাদ্ৰৌপদীকে লইয়াই মৌলিক মহাভারত ! তা হউক।-কিন্তু মৌলিক মহাভারতের যত কথা আছে, সকলই যে ঐতিহাসিক এবং সত্য, ইহা বলাও দঃসাহসের কাজ। যে সময়ে কবিই ইতিহাসবেত্তা, ইতিহাসবেত্তাও কবি, সে সময়ে কাব্যেও ইতিহাস বিমিশ্রণ বড় সহজ। সত্য কথাকে কবির সবকপোলকলিপিত ব্যাপারে রঞ্জিত করা বিচিত্র নহে। দ্ৰৌপদী যধিস্ঠিরের মহিষী ছিলেন, ইহা না হয়। ঐতিহাসিক বলিয়া সম্বীকার করা গেল-তিনি যে পশু পান্ডবের মহিষী, ইহাও কি ঐতিহাসিক সত্য বলিয়া সম্বীকার করিতে হইবে ? এই দ্ৰৌপদীর বহবিবাহ ভিন্ন ভারতবষীয় গ্রন্থসমদ্র মধ্যে ভারতবষীয় আৰ্য্যদিগের মধ্যে স্ত্ৰীগণের বহবিবাহের কোন নিদশন পাওয়া যায় না। বিধবা হইলে সত্ৰীলোক অন্য বিবাহ করিত, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু এক কালে কেহ একাধিক পতির ভাৰ্য্যা ছিল, এমন প্রমাণ পাওয়া যায় না। কখন দেখা গিয়াছে যে, কোন মনষ্যের প্রতি হস্তে ছয়টি করিয়া দাই হন্তে দ্বাদশ অঙ্গলি আছে; কখন দেখা গিয়াছে যে, কোন মনষ্যে চক্ষহীন হইয়া জন্ম গ্রহণ করে। এমন একটি দন্টান্ত দেখিয়া সিদ্ধান্ত করা যায় না যে, মনষ্যেজাতির হাতের আঙ্গল বারটি, অথবা মনকেষ্য অন্ধ হইয়া জন্মে। তেমনি কেবলি দ্রৌপদীর বহবিবাহ দেখিয়া সিদ্ধান্ত করা যায় না যে, পর্বে আৰ্য্যনারীগণ-মধ্যে বহবিবাহ প্রথা প্রচলিত ছিল। আর মহাভারতেই প্রকাশ যে, এরপ প্রথা ছিল না; কেন না, দ্ৰৌপদী সম্পবন্ধে এমন অলৌকিক ব্যাপার কেন ঘটিল, তাহার কৈফিয়ৎ দিবার জন্য মহাভারতকার পর্বজন্মঘটিত নানাবিধ অসম্ভব উপন্যাস রচনা করিতে বাধ্য হইয়াছেন। এখন, যাহা সমাজ মধ্যে একেবারে কোথাও ছিল না, যাহা তাদশ সমাজে অত্যন্ত লোকনিন্দার কারণ সম্বরপ হইত সন্দেহ নাই, তাহা পান্ডবদিগের ন্যায় লোকবিখ্যাত রাজবংশে ঘটিবার সম্ভাবনা ছিল না। তবে কবির এমন একটা কথা, তত্ত্ববিশেষকে পরিস্ফাট করিবার জন্য গড়িয়া লওয়া বিচিত্র নহে। গড়া কথার মত অনেকটা লক্ষণ আছে। দ্ৰৌপদীর পঞ্চ সবামীর ঔরসে পঞ্চ পত্র ছিল। কাহারও ঔরসে দাইটি, কি তিনটি হইল না। কাহারও ঔরসে কন্যা হইল না। কাহারও ঔরস নিস্ফল গেল না। সেই পাঁচটি পত্রের মধ্যে কেহ রােজ্যাধিকারী হইল না। কেহই বাঁচিয়া রহিল। না। সকলেই এক সময়ে অশ্বথামার হস্তে নিধন পাইল। কাহারও কোন কায্যকারিতা নাই। সকলেই কুরক্ষেত্রের যন্দ্ধে এক একবার আসিয়া একত্রে দল বধিয়া যাদ্ধ করিয়া চলিয়া যায়। আর কিছই করে না। পক্ষান্তরে অভিমন্যু, ঘটােৎকচ, বন্দ্ৰবাহন, কেমন জীবন্ত। জিজ্ঞাসা হইতে পারে, যদি দ্ৰৌপদীর পঞ্চ বিবাহ গড়া কথাই হইল, যদি দ্ৰৌপদী একা ॣ, कां छिान. उन हि आद्र प्रति श्राज्या अदिवाइड लिन? ६शन घेउन ভীম ও অজ্ঞজনের অন্য বিবাহ ছিল, ইহা আমরা জানি। কিন্তু সহদেবের অন্য বিবাহ ছিল, এমন কথা মহাভারতে পাই না। পাই না বলিয়াই যে সিদ্ধান্ত করিতে হইবে যে, তাঁহাদের অন্য বিবাহ ছিল না, এমন নহে। মহাভারত প্রধানতঃ প্রথম তিন পান্ডবের অর্থাৎ যধিস্ঠির ও ভীমান্ডজনের জীবনী; অন্য দাই পান্ডব। তাঁহাদের ছায়া মাত্র-কেবল তাঁহাদের সঙ্গে থাকিয়া কাজ করে। তাঁহাদের অন্য বিবাহ থাকিলে সেটা প্রয়োজনীয় কথা নহে বলিয়া মহাভারতকার ছাড়িয়াও যাইতে পারেন। কথাটা তাদশ মারাত্মক নহে। দ্ৰৌপদীর পঞ্চ সবামী হওয়ার পক্ষে আমরা উপরে যে আপত্তি দেখাইয়াছি, তাহা অপেক্ষাকৃত অনেক গরতর। এখন, যদি দ্ৰৌপদীর পণ্যবিবাহ কবিরই কলপনা বিবেচনা করা যায়, তবে কবি কি অভিপ্ৰায়ে এমন বিস্ময়করী কলপনার অন্যবিত্তীর্ণ হইলেন ? বিশেষ কোন গঢ় অভিপ্ৰায় না থাকিলে এমন কুটিল পথে যাইবেন কেন ? তাঁহার অভিপ্রায় কি? পাঠক যদি ইংরেজীদিগের মত বলেন, "Tut! clear case of polyandry!” OCR FIS DESTSI i TNS O Soft AT SGF, GCR ইহার নিগঢ়ি তত্ত্ব অন্যাসন্ধান করিতে হইবে। SSty