পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী মহাভারতেও সাংখ্যোর উল্লেখ আছে, কিন্তু মহাভারতের কোন অংশ নিতেন, কোন অংশ পর্যাতন, তাহা নিশ্চিত করা ভার। কুমারসম্ভবের দ্বিতীয় সগে যে ব্ৰহ্মস্তোত্র আছে, তাহা সাংখ্যানকারী। সাংখ্য-প্রবচনে বিষ্ণ, হরি, রুদ্রাদির উল্লেখ নাই। পরাণে আছে, পৌরাণিকেরা নিরীশ্বর সাংখ্যকে আপন মনোমত করিয়া গড়িয়া লইয়াছেন। bङ्थ* ब्रिहणछल-निब्रौशब्रडा সাংখ্যদশান নিরীশ্বর বলিয়া খ্যাত; কিন্তু কেহ কেহ বলেন যে, সাংখ্য নিরীশ্বর নহে। ডাক্তার হল একজন এই মতাবলম্বী। মক্ষমােলর এই মতাবলম্পবী ছিলেন, কিন্তু এক্ষণে তাঁহার মত পরিবত্তানের লক্ষণ দেখা গিয়াছে। কুসমাঞ্জলিকত্তা উদয়নাচায্য বলেন যে সাংখ্যমতাবলম্পবীরা আদিবিদ্বানের উপাসক। অতএব তাঁহার মতেও সাংখ্য নিরীশ্বর নহে। সাংখ্যপ্রবচনের ভাষ্যকার বিজ্ঞানভিক্ষও বলেন যে, ঈশ্বর নাই, এ কথা বলা কাপিলা সত্রের উদ্দেেশ্য নহে। অতএব সাংখ্যদর্শনকে কেন নিরীশ্বর বলা যায়, তাহার কিছু বিস্তারিত লেখা সাংখ্য-প্রবচনের প্রথমাধ্যায়ের বিখ্যাত ৯২ সােত্র এই কথার মল। সে সত্রে এই-- “ঈশ্বরাসিদ্ধেঃ।” প্রথম এই সত্রটি ববক্সাইব । সত্রকার প্রমাণের কথা বলতেছিলেন। তিনি বলেন, প্রমাণ ত্ৰিবিধ; প্রত্যক্ষ, অনমান এবং শব্দ। ৮৯ সন্ত্রে প্রত্যক্ষের লক্ষণ বললেন, “যৎ সম্প্ৰবন্ধসিদ্ধং তদাকারোল্লেখি বিজ্ঞানং তৎ প্রত্যক্ষম।” অতএব যাহা সম্প্ৰবন্ধ নহে, তাহার প্রত্যক্ষ হইতে পারে না। এই লক্ষণ প্রতি দাইটি দোষ পড়ে। যোগিগণ যোগবলে অসম্প্ৰবন্ধও প্রত্যক্ষ করিতে পারেন। ১৯o । ৯১ সন্ত্ৰে সন্ত্রকার সে দোষ অপনীত করিলেন। দ্বিতীয় দোষ, ঈশ্বরের প্রত্যক্ষ নিত্য, তৎসম্পবন্ধে সম্পবিন্ধ কথাটি ব্যবহার হইতে পারে না। সত্রিকার তাহার এই উত্তর দেন যে, ঈশ্বর সিদ্ধ, নহেন- ঈশ্বর আছেন, এমত কোন কোন প্রমাণ নাই; অতএব তাঁহার প্রত্যক্ষ সম্পবন্ধে না বত্তিলে এই লক্ষণ দম্পটি হইল না। তাহাতে ভাষ্যকার বলেন যে, দেখ, ঈশ্বর অসিদ্ধ, ইহা উক্ত হইয়াছে, কিন্তু ঈশ্বর নাই, এমত কথা বলা হইল না। না হউক, তথাপি এই দশানকে নিরীশ্বর বলিতে হইবে। এমত নাস্তিক বিরল, যে বলে যে, ঈশ্বর নাই। যে বলে যে, ঈশ্বর আছেন, এমত কোন প্রমাণ নাই, তাহাকেও নাস্তিক বলা ३ ।। যাহার অস্তিত্বের প্রমাণ নাই, এবং যাহার অনস্তিত্বের প্রমাণ আছে, এই দাইটি পথক বিষয়। রক্তবর্ণ কাকের অস্তিত্বের কোন প্রমাণ নাই, কিন্তু তাহার অনস্তিত্বেরও কোন প্রমাণ নাই। কিন্তু গোলাকার ও চতুষ্মেকাণের অনস্তিত্বের প্রমাণ আছে। গোলাকার চতুলে কাণ মানিব না, ইহা নিশ্চিত; কিন্তু রক্তবাণ কাক মানিব কি না ? তাহার অনস্তিত্বেরও প্রমাণ নাই বটে, কিন্তু তাহার অহিন্তত্বেরও প্রমাণ নাই। যেখানে অস্তিত্বের প্রমাণ নাই, সেখানে মানিব না। অনস্তিত্বের প্রমাণ নাই থােক, যতক্ষণ অস্তিত্বের প্রমাণ না পাইব, ততক্ষণ মানিব না। অস্তিত্বের প্রমাণ পাইলে তখন মানিব। ইহাই প্রত্যয়ের প্রকৃত নিয়ম। ইহার ব্যত্যয়ে যে বিশ্বাস, তাহা ভ্ৰান্তি। “কোন পদার্থ আছে, এমত প্রমাণ নাই বটে, কিন্তু থাকিলে থাকিতে পারে,” ইহা ভাবিয়া যে সেই পদার্থের অস্তিত্ব কলপনা করে, সে ভ্রান্ত। অতএব নাস্তিকেরা দই শ্রেণীতে বিভক্ত হইলেন। যাঁহারা কেবল ঈশ্বরের অস্তিত্বের ारौँ–ठाँदल्ला বলেন, ঈশ্বর থাকিলে থাকিতে পারেন,-কিন্তু আছেন, এমত কোন 22ध नाइये । অপর শ্রেণীর নাস্তিকেরা বলেন যে, ঈশ্বর আছেন, শািন্ধ, ইহারই প্রমাণাভাব, এমত নহে, ঈশ্বর যে নাই, তাহারও প্রমাণ আছে। আধনিক ইউরোপীয়েরা কেহ কেহ এই মতাবলম্বী। একজন ফরাসিস লেখক বলিয়াছেন, তোমরা বল, ঈশ্বর নিরাকার, অথচ চেতনাদি মানসিক বত্তিবিশিস্ট। কিন্তু কোথায় দেখিয়াছ যে, চেতনাদি মানসিক বত্তিসকল শরীর হইতে বিষাক্ত ? যদি তাহা কোথাও দেখা নাই, তবে ঈশ্বর সাকার, নয়। তিনি নাই। সাকার ঈশ্বর, এ কথা তোমরা মানিবে না, অতএব ঈশ্বর নাই, ইহা মানিতে হইবে। ইনি দ্বিতীয় শ্রেণীর নাস্তিক। 良总块