পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম প্রশ্ন, নাবলী ইন্দ্ৰিয়সংযম হইতে অনেক দারে। যাঁহারা মহামহিঃ ইন্দ্ৰিয়পরিতৃপ্তিতে উদ্যোগী ও কৃতকাৰ্য্য, তাঁহাদিগের হইতে এই ধৰ্ম্মমাত্মাদের প্রভেদ বড় অলপ। উভয়েই তুল্যর পে ইহলোকের নরকের অগ্নিতে দগ্ধ। ইন্দ্ৰিয় পরিতৃপ্ত কর বা না কর, যখন ভ্ৰমেও মনে ইন্দ্ৰিয়পরিতৃপ্তির কথা আসিবে না-যখন রক্ষাৰ্থ বা ধৰ্ম্মমাের্থ ইন্দ্ৰিয় চরিতাৰ্থ করিতে হইলেও তাহা দঃখের বিষয় ব্যতীত সখের বিষয় বোধ হইবে না, তখনই ইন্দ্ৰিয়ের সংযম হইয়াছে। তদভাবে যোগ তপস্যা কঠোর সকলই ব্যথা। এই কথা সম্পাদটীকৃত করিবার জন্য হিন্দ পরাণেতিহাসে ঋষিদিগের সম্পবন্ধে ভুরি ভুরি রহস্যোপন্যাস আছে। সবগ হইতে একজন অপসরা আসিল, আর অমনি ঋষি ঠাকুরের যোগ ভঙ্গ হইল, তিনি অমনি নানাবিধ গোলযোগ উপস্থিত কারণে প্রবত্ত হইলেন। এই সকল উপন্যাস হইতে আমরা এই কয়টি চমৎকার শিক্ষা প্রাপ্ত হই যে, যোগে বা তপস্যায় ইন্দ্ৰিয়সংযম পাওয়া যায় না। কাৰ্য্যক্ষেত্রেই সংসারধমেই ইন্দ্ৰিয়সংযম লাভ করা যায় । প্রত্যহ অরণ্যে বাস করিয়া, ইন্দ্ৰিয়তৃপ্তির উপাদানসকল হইতে দরে থাকিয়া, সকল বিষয়ে নিলিপ্তি হইয়া, মনে করা যায় বটে যে, আমি ইন্দ্ৰিয়জয়ী হইয়াছি; কিন্তু যে মৎপাত্রে অগ্নিসংস্কৃত হয় নাই, সে যেমন সপেশমাত্রে টিকে না, এই ইন্দ্ৰিয়সংযমও তেমনি লোভের সপশমাত্র টিকে না। যে প্রত্যহ ইন্দ্রিয়চারিতাথের উপযোগী উপাদানসমহের সংসগে আসিয়াছে, তাহাদিগের সঙ্গে যাদ্ধ করিয়া কখন জয়ী, কখন বিজিত হইয়াছে, সেই পরিশেষে ইন্দ্রিীয় জয় করিতে পারিয়াছে। বিশ্বামিত্র বা পরাশর ইন্দ্রিীয় জয় করিতে পারেন নাই ৷ ভীস্ম বা লক্ষণ পারিয়াছিলেন। হিন্দধমের এই একটি অতি নিগঢ়ি কথা কহিলাম। কিন্তু ইন্দ্ৰিয়সংযম অপেক্ষাকৃত তুচ্ছ কথা। চিত্তশদ্ধির তাহার অপেক্ষা গরতের লক্ষণ আছে। অনেকের ইন্দ্ৰিয় সংযত, কিন্তু অন্য কারণে তাঁহাদিগের চিত্ত শব্দ্ধ নয়। ইন্দ্ৰিয়সখ ভোগ করিব না, কিন্তু আমি ভাল থাকিব, আমারগালি ভাল থাকিবে, এই বাসনা তাঁহাদের মনে বড় প্রবল। আমার ধন হউক, আমার মান হউক, আমার সম্পদ হউক, আমার যশ সুউক, আমার সৌভাগ্য হউক, আমি বড় হই, আর সবাই আমার অপেক্ষা ছোট হউক, তাঁহারা এই রােপ কামনা করেন। এই সকল অভীষ্মট যাহাতে সিদ্ধ হয়, চিরকাল অনাদিন সেই চেটায়, সেই উদ্যোগে ব্যস্ত থাকেন। সে জন্য না করেন এমন কাজ নাই, তদ্ভিন্ন মন দেন, এমন বিষয় নাই। যাহারা ইন্দ্ৰিয়াসক্ত, তাহদের অপেক্ষাও ইহারা নিকৃষ্ট। ইহাদের নিকট ধৰ্ম্ম কিছই নহে, কম কিছই নহে, জ্ঞান কিছই নহে, ভক্তি কিছই নহে। তাঁহারা ঈশ্বর মানিলেও কাব্যতঃ তাঁহাদের কাছে ঈশ্বর নাই, জগৎ থাকিলেও তাঁহাদের কাছে জগৎ নাই, কেবল আপনিই আছেন, আপনি ভিন্ন আর কিছই নাই। ইন্দ্ৰিয়াশক্তির অপেক্ষাও এই আত্মাদর, এই সবার্থপরতা, চিত্তশদ্ধির গারতের বিঘা। পরার্থপরতা ভিন্ন চিত্তশদ্ধি নাই। যখন আপনি যেমন, পর তেমন, এই কথা বঝিব, যখন আপনার সখ যেমন খাজিব, পরের সখ তেমনি খাজিব, যখন আপনা হইতে পরকে ভিন্ন ভাবিব না, যখন আপনার অপেক্ষাও পরকে আপনার ভাবিব, যখন ক্রমশঃ আপনাকে ভুলিয়া গিয়া, পরকে সব্বস্ব জ্ঞান করিতে পারিব, যখন পরোতে আপনাকে নিমজিত রাখিতে পারিব, যখন আমার আত্মা এই বিশ্বব্যাপী বিশ্বময় হইবে, তখনই চিত্তশদ্ধি হইবে। তাহা না হইলে ডোরকেীপীন ধারণ করিয়া সমস্ত সংসার পরিত্যাগ করিয়া ভিক্ষাব্যত্তি অবলম্বনপর্বক দ্বারে দ্বারে হরিনাম করিয়া ফিরিলে চিত্তশদ্ধি হইবে না। পক্ষান্তরে, রাজসিংহাসনে হীরকমণিডত হইয়া বসিয়াও যে রাজা জনৈক ভিক্ষক প্রজার দঃখ আপনার দঃখের মত ভাবে, তাহার চিত্তশদ্ধি হইয়াছে। যে ঋষি, বিশ্বামিত্রকে একটি গাভীদান করিতে পারিলেন না, তাঁহার চিত্তশদ্ধি হয় নাই। যে রাজা, অণ্ডকগত কপোতের বিনিময়ে আপনার মাংস কাটিয়া झिझाछिटुब्लन्, उठाँशझशे क्रद्धभर्दाक्ष श्छेशाछल । ইহা অপেক্ষাও চিত্তশদ্ধির গারতের লক্ষণ আছে। যিনি সকল শদ্ধির স্রস্টা, যিনি শদ্ধিময়, যাঁহার কৃপায় শদ্ধি, যাঁহার চিন্তায় শদ্ধি, যাঁহার অন্যকমপো ব্যতীত শদ্ধি নাই, তাঁহাতে গাঢ় ভক্তি চিত্তশদ্ধির প্রধান লক্ষণ। ইন্দ্ৰিয়সংযমই বল, আর পরার্থপরতাই বল, তাঁহার সম্পণে সবভাবের চিন্তা এবং তৎপ্রতি প্রগাঢ় অন্যরাগ ব্যতীত কখনই লব্ধ হইতে পারে না। এই ভক্তি চিত্তশদ্ধির মাল এবং ধম্পেমার মল। চিত্তশদ্ধির প্রথম লক্ষণ সম্পবন্ধে যাহা বলিয়াছি, তাহার স্থলে তাৎপৰ্য্য হৃদয়ে শান্তি। দ্বিতীয় লক্ষণ সম্পবন্ধে যাহা বলিয়াছি, তাহার স্থলে তাৎপৰ্য্য মনষ্যে প্রীতি। তৃতীয় লক্ষণ, SyO