পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্ৰবন্ধ-বঙ্গদেশের কৃষক পরাণ মন্ডল দিতে পারিল না। কিন্তু তাহার ক্ষেত্রে উত্তম ফসল হইয়াছে। তাহাতে গোমস্তার চোেখ পড়িল। তিনি আট আনার স্ট্যাম্প খরচ করিয়া, উপযক্ত আদালতে “ক্রোক সহায়তার” প্রার্থনায় দরখাস্ত করিলেন। দরখাস্তের তাৎপৰ্য্য এই “পরাণ মন্ডলের নিকট খাজনা বাকি, আমরা তাহার ধান্য ক্রোক করিব। কিন্তু পরাণ বড় দাঙ্গাবাজ লোক, ক্রোক করিলে দাঙ্গা হাঙ্গামা খন জখম করিবে বলিয়া লোক জমায়েত করিয়াছে। অতএব আদালত হইতে পিয়াদা মোকররা হউক।” গোমস্তা নিরীহ ভাল মানষ, কেবল পরাণ মন্ডলেরই যত অত্যাচার। সতরাং আদালত হইতে পিয়াদা নিযক্ত হইল। পিয়াদা ক্ষেত্রে উপস্থিত হইয়াই মায়াময় রৌপ্যচক্রের পাঠাইয়া দিল । ইহার নাম “ক্রোক সহায়তা”। পরাণ দেখিল, সব্বস্ব গেল। মহাজনের ঋণও পরিশোধ করিতে পারিব না, জমীদারের খাজানাও দিতে পারিব না, পেটেও খাইতে পাইব না। এত দিন পরাণ সহিয়াছিল-কুমীরের সঙ্গে বাদ করিয়া জলে বাস করা চলে না। পরাণ মন্ডল শানিল যে, ইহার জন্য নালিশ চলে। পরাণ নালিশ করিয়া দেখিবো। কিন্তু সে ত সোজা কথা নহে। আদালত এবং বারাঙ্গনার মন্দির তুল্য; অৰ্থ নাহিলে প্রবেশের উপায় নাই। চট্যাম্পের মাল্য চাই; উকীলের ফিস চাই; আসামী সাক্ষীর তলাবানা চাই; সাক্ষীর খোরাকি চাই; সাক্ষীদের পারিতোষিক আছে; হয় ত আমীন-খরচা লাগিবে; এবং আদালতের পিয়াদা ও আমলাবগ কিছু কিছর প্রত্যাশা রাখেন। পরাণ নিঃসবে।--তথাপি হাল বলদ ঘটি বাটি বেচিয়া আদালতে নালিশ করিল। ইহা অপেক্ষা তাহার গলায় দাঁড়ি দিয়া মারা ভাল ছিল। অমনি জমীদারের পক্ষ হইতে পালটা নালিশ হইল যে, পরাণ মন্ডল ক্ৰোক অদল করিয়া সকল ধান কাটিয়া লইয়া বিক্রয় করিয়াছে। সাক্ষীরা সকল জমীদারের প্রজা-সতরাং জমীদারের বশীভুত -য়েহে নহে-ভয়ে বশীভুত। সতরাং তাঁহার পক্ষেই সাক্ষ্য দিল। পিয়াদা মহাশয় রৌপ্যমন্ত্রে সেই পথাবত্তীর্ণ। সকলেই বলিল, পরাণ ক্রোক আদলে করিয়া ধান কাটিয়া বেচিয়াছে। জমীদারের নালিশ ডিক্ৰী হইল, পরাণের নালিশ ডিসমিস হইল। ইহাতে পরাণের লাভ প্রথমতঃ, জমীদারকে ক্ষতিপরণ দিতে হইল, দ্বিতীয়তঃ, দই মোকদ্দমাতেই জমীদারের খরচা দিতে হইল, তৃতীয়তঃ, দই মোকদ্দমাতেই নিজের খরচা ঘর হইতে গেল। পরাণের আর এক পয়সা নাই, কোথা হইতে এত টাকা দিবে ? যদি জমী বেচিয়া দিতে পারিল, তবে দিল, নচেৎ জেলে গেল, অথবা দেশত্যাগ করিয়া পলায়ন করিল। আমরা এমত বলি না যে, এই অত্যাচারগালিন সকলই এক জন প্রজার প্রতি এক বৎসর মধ্যে হইয়া থাকে বা সকল জমীদারই এরাপ করিয়া থাকেন। তাহা হইলে, দেশ রক্ষা হইত না। পরাণ মন্ডল কলিপিত ব্যক্তি-একটি কলিপিত প্রজাকে উপলক্ষ করিয়া প্রজার উপর সচরাচর আিম আজি এক জনের উপর একরূপ, কাল অন্য প্রজার উপর অনারূপ পীড়ন য়া থাকে । জমীদারদিগের সকল প্রকার দৌরাত্ম্যের কথা যে বলিয়া উঠিতে পারিয়াছি, এমত নহে। জমীদারবিশেষে, প্রদেশবিশেষে, সময়বিশেষে যে কত রকমে টাকা আদায় করা হয়, তাহার তালিকা করিয়া সমাপ্ত করা যায় না। সব্বত্র এক নিয়ম নহে; এক স্থানে সকলের এক নিয়ম নহে ; অনেকের কোন নিয়মই নাই, যখন যাহা পারেন, আদায় করেন। দাস্টান্তস্বরােপ আমরা SBD DBBBB BDD BDBD DBDBDD BBDD DDDBD DBSBD DBBDBDD যে প্রদেশ গত বৎসর* ভয়ানক বন্যায় ডুবিয়া গিয়াছিল, সেই প্রদেশের একখানি গ্রামে এই ঘটনা হইয়াছিল। গ্রামের নাম যিনি জানিতে চাহেন, তিনি গত ৩১ আগস্টের অবজেকবরের ১৩১ পদ্ঠা পাঠ করবেন। বন্যায় অত্যন্ত জলবদ্ধি হইল। গ্রামখানি সমদ্রমধ্যস্থ দ্বীপের ন্যায় জলে ভাসিতে লাগিল। গ্রামস্থ প্রজাদিগের ধান সকল ডুবিয়া গেল। গোর সকল অনাহারে মরিয়া যাইতে লাগিল। প্ৰজাগণ শশব্যস্ত। সে সময়ে জমীদারের কত্তব্য, অর্থদানে, খাদ্যদানে প্ৰজাদিগের সাহায্য করা। তাহা দরে থােক, খাজনা মাপ করিলেও অনেক উপকার হয় তাহাও al

  • 3 ASSA by

Rà6