পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

विविध अवक-बश्वबाङ् কিন্তু এখনও শাস্ত্রের মহিমা শেষ হয় নাই। ধর্মশাস্ত্রের প্রধান বিধির উল্লেখ করিতে বাকি আছে। “সদ্যস্ত্বপ্রিয়বাদিনী!”-ভাৰ্য্যা অপ্রিয়বাদিনী হইলে, সদাই অধিবেদন করিবে! আমাদিগের বিশেষ অনরোধ যে, যাঁহার যাঁহারা ভাৰ্য্যা অপ্রিয়বান্দনী, তাঁহারা হিন্দীশাস্ত্রের গৌরববিদ্ধ নাথ সদাই পানন্দবার বিবাহ করান। সত্ৰীলোক স্বভাবতঃ মািখরা, দ্বিতীয়া ভাষাও আপ্রয়বাদিনী হইলে হইতে পারে,-তােহা হইলে আবার তৃতীয় বিবাহ করবেন; তৃতীয়াও যদি আপ্রয়বাদিনী হয় (বাঙ্গালীর মেয়ের মখ ভাল নহে), তবে আবার বিবাহ করবেন-এরাপ “লোকহিতৈষী নিরীহ শাস্ত্রকারদিগের”* অন্যকম্পপায় আপনারা অনন্ত গহণীশ্রেণীতে পােরী শোভিতা করিতে পারবেন। এমন বাঙ্গালীই নাই, যাহাকে একদিন না একদিন সন্ত্রীর কাছে “মািখঝােমটা” খাইতে না হয়। অতএব আমাদিগের ধৰ্ম্মশাস্ত্রের অনন্ত মহিমার গণে সকলেহ অনন্তসংখ্যক গহিণীকর্তৃক পরিবেষ্টিত হইয়া জীবনযাত্রা নিৰ্ম্মবাহ করিতে পরিবে। যাঁহারই সত্ৰী, ননন্দার সহিত বাচসা করিয়া আসিয়া স্বামীর উপর তত্তজন গঙ্গাজন করবেন, তিনিই তৎক্ষণাৎ অন্য বিবাহ করতে পারিবেন। যাঁহারই সত্ৰী, যার তার অঙ্গে নািতন অলঙ্কার দেখিয়া আসিয়া সবামীকে বলবেন, “তোমার হাতে পড়িয়া আমার কোন সখি হইল না", তিনি তৎক্ষণাৎ সেই রাত্র ঘটক ডাকাইয়া সম্প্ৰবন্ধ স্থির করিয়া সদ্যই অন্য দার গ্রহণ করবেন। যাঁহার সত্ৰী, স্বামীর মখে সাবকৃত পাকের নিন্দা শনিয়া বলবেন, “কিছতেই তোমার মন যোগাইতে পারিলাম না-আমার মরণ হয় তা বাঁচি”-তিনি তখনই চেলির কাপড় পরিয়া, সোলার টােপর মাথায় দিয়া, প্রতিবাসীর দ্বারে গিয়া দাঁড়াইয়া বলিবেন, “মহাশয়, কন্যাদান করন।” এত দিনে বাঙ্গালীর ঘরে জন্মগ্রহণ করা সার্থক হইল,-অমল্যধন স্ত্রীরত্ন পৰ্য্যাপ্ত পরিমাণে লাভ করা যাইতে পরিবে। বঙ্গসন্দরীগণ বোধ হয়। ধৰ্ম্মশাস্ত্রপ্রচারের এই নবোদ্যম দেখিয়া তত সম্বুন্ট হইবেন না। কিন্তু তাঁহাদিগের শাসনের যে একটা সদ্যপায় হইতে পরিবে, ইহাতে আমরা বড় সখী। আমাদের এমত ভরসা হইয়াছে যে, অনেক ভদ্রলোক নিখত মক্তা খাজিয়া বেড়াইবার দায় হইতে নিম্প্রকৃতি পাইবেন-কেন না, নথনাড়া দিবার দিন কাল গেল। বিধমখী ঘোষ, সৌদামিনী মিত্র, কামিনী গাঙ্গালী প্রভৃতি দেশের শ্ৰীবদ্ধির পতাকাবাহিনীগণ, বোধ হয় পতাকা ফেলিয়া দিয়া, ফিরে বাঙ্গালীর মেয়ে সাজিয়া, স্বামীর শ্ৰীচরণ মাত্র ভরসা। মনে করিয়া, বিবিয়ানা চাল খাট করিয়া আনিবেন। কালভুজঙ্গিনী কুলকামিনীগণ এখন হইতে মাখের বিষ হৃদয়ে লকাইয়া, কেবল কটাক্ষ-বিষকে সংসারজয়ের একমাত্র সম্পবল করিবেন। তাঁহাদিগের মনে থাকে যেন, “সদ্যস্ত্বপ্রিয়বাদিনী!”-বিদ্যাসাগর মহাশয়-প্রণীত বহবিবাহ নিবারণবিষয়ক 'দ্বিতীয় পান্তকে এ ব্যবস্থা খাজিয়া পাইয়াছি। বিদ্যাসাগর মহাশয় বহ-বিবাহ নিবারণ জন্য এই পান্তক লিখিয়াছিলেন, কিন্তু বাঙ্গালীর অদম্পন্ট সম্প্রসন্না-আমাদিগের পািৰবজন্মাডিজত পণ্য অনন্ত। সেই পন্তকোদ্ধত ধৰ্ম্মশাস্ত্রের বলে বাঙ্গালী মাত্রেই অসংখ্য বিবাহ করিতে পরিবেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় যে শাস্ত্রকারদিগকে “লোকহিতৈষী” বলিয়াছেন, তাহা সাৰ্থক বটে। এরপ শাস্ত্রের দোহাই দিয়া কি ফল ! এ শাস্ত্রানসারে লোককে কাৰ্য্য করিতে বলিলে বহবিবাহ নিবারণ হয়, না বদ্ধি হয় ? কিন্তু বোধ হয়, শাস্ত্রাবলম্বনপর্বক বহবিবাহ পরিত্যাগ করিতে বলা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রকৃত উদ্দেশ্য নহে। বিদ্যাসাগর মহাশয় এবং তাঁহার সহিত যাঁহারা একমতাবলম্বী, তাঁহাদের মােখ্য উদ্দেশ্য এই যে, বহবিবাহ নিবারণ জন্য রাজব্যবস্থা প্রচার হউক। দ্বিতীয় পর্যন্তকে সে কথা কিছই নাই, কিন্তু প্ৰথম পািন্তকে আছে। সেই উদ্দেশ্যে প্রবত্তিদােয়কবরপ বহবিবাহের অশাস্ত্রীয়তা প্রমাণ করিবার জন্য যত্ন করিয়াছেন। নচেৎ শাস্ত্রের নামে ভয় পাইয়া হিন্দ বহিবিবাহ বা কোন চিরপ্রচলিত প্রথা হইতে নিবত্ত হইবেক, এমত ভরসা বিদ্যাসাগর মহাশয় করিবেন, বোধ হয় না। কিন্তু রাজব্যবস্থার পক্ষে প্রবত্তিদায়ক বলিয়াও এ বিষয়ে ধৰ্ম্মশাস্ত্রের সাহায্য অবলম্বন করা আমাদগের উপযক্ত বোধ হয় না। এ বিষয়ে রাজবিধি প্রণীত করিতে গেলে, তাহা কি শাস্ত্রানমিত হওয়া আবশ্যক ? না শাস্ত্রবিরাদ্ধ হইলেও ক্ষতি নাই ? যদি তাহা শাস্ত্রানমিত হওয়া আবশ্যক হয়, তবে “সদস্প্রিয়বাদিনী”, “ক্ষত্রবিটশদ্রেকন্যান্ধু*** বিবাহ্যাঃ কচিদেব তু” প্রভৃতি কথাগালিও বিধিবদ্ধ করিতে হইবে। আর যদি তােহা শাস্ত্রবিরদ্ধ হইলেও

  • বহবিবাহ, দ্বিতীয় পান্তক, ২৫২ পঃ।

8ኃSዓ