পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্ৰবন্ধ-বাঙ্গালা শাসনের কল* শত ঘর ছিল। ক্ষত্ৰিয় বৈশ্য এখনও যখন অতি অল্পসংখ্যক, তবে তখন যে আরও অল্পসংখ্যক ছিল, তাহাতে সন্দেহ নাই। বল্লালের দেড় শত বৎসর পরে মসলমানগণ বঙ্গজয় করেন। তখন ਅੰ . পনিবেশিক মাত্র। সতরাং সপ্তদশ অশ্বারোহী বঙ্গজয়ের যে কলঙ্ক, তাহা আৰ্য্যদিগের কিছ কমিতেছে বটে। তখন বঙ্গীয় আৰ্য্যগণের অভু্যদয়ের সময় হয় নাই। এখন সে সময় বোধ হয় উপস্থিত। বাহবিলে না হউক, বদ্ধিবলে যে বাঙ্গালী অচিরে পথিবীমধ্যে যশস্বী হইবে, তাহার সময় আসিতেছে। আমরা উপরে ব্রাহ্মণ সম্পবন্ধে যাহা বলিলাম, কায়স্থগণ সম্পবন্ধে তাহা বত্তে। বিদ্যানিধি মহাশয় বলেন, কায়স্থগণ সৎশদ্র অর্থাৎ বণসঙ্কর নহে। আমাদিগের বিবেচনায় তাহারা বৰ্ণসঙ্কর বটে। তদ্বিষয়ে বঙ্গদর্শনে ইতিপবে অনেক বলা হইয়াছে। এক্ষণে আর কিছই বলিবার প্রয়োজন নাই। সঙ্করতা হেতু কায়স্থগণ আৰ্য্যবংশসম্ভূত বটে। আদিশরের সময় পশ্চঃ ব্রাহ্মণের সঙ্গে পাঁচ জন কায়স্থও কান্যকুব্জ হইতে আসিয়াছিলেন। তৎপর্বে যেমন বাঙ্গালায় ব্রাহ্মণ ছিল, সেইরােপ কায়স্থও ছিল, কিন্তু অলপসংখ্যক। এক্ষণে কায়স্থগণ বঙ্গদেশের অলঙ্কারস্বরােপ। बाछावा भाननबू कक्* পািব্ববঙ্গবাসী কোন বর, কলিকাতানিবাসী একটি কন্যা বিবাহ করিয়া গ্যহে লইয়া যান। কন্যাটি পরমাসন্দরী, বদ্ধিমতী, বিদ্যাবতী, কমিঠা এবং সশীলা। তাঁহার পিতা মহা ধনী, দোষ কেহ বাহির করিতে পরিবে না। সঙ্গের লোক ফিরিয়া আসিলে তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেমন হে! বাঙ্গালেরা মেয়ের কোন দোষ বাহির করিতে পারিয়াছে ?” সঙ্গের লোক বলিল, “আন্দ্ৰে হাঁ-দোষ লইয়া বড় গন্ডগোল গিয়াছে।” বাব জিজ্ঞাসা করিলেন- “সে কি ? কি দোষ?” ভূত্য বলিল, “বাঙ্গালেরা বড় নিন্দা করিয়াছে, মেয়ের কপালে উলিক নাই।” আমরা এই বঙ্গদর্শনে কখনও সর জজ কাবেল সাহেব সম্পবন্ধে কোন কথা বলি নাই। যাঁহার নিন্দা তিন বৎসরকােল বাঙ্গালাপত্রের জীবনস্বরপ ছিল, তাঁহার কোন উল্লেখ না থাকাতে আমাদের ভয় করে যে, পাছে কেহ বলে যে, বঙ্গদর্শনের উলিক নাই। আমরা আদ্য বঙ্গদশনিকে উলিক পরাইতে প্রবত্ত হইলাম। তবে এই উলিক বড় সামান্য নহে। যে পত্র বা পত্রিকা (কোনগিলি পত্র আর কোন গলি পত্রিকা, তাহা আমরা ঠিক জানি না-কি করিলে পত্র পত্রিকা হইয়া যায়, তাহাও অবগত নাহি) একবার কপালে এই উলিক পরিয়াছেন, তিনি বঙ্গদেশ মোহিয়াছেন, মন্ধে হইয়া বঙ্গীয় পাঠকগণ তাঁহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ ছটিয়াছে এবং সাম্পবৎসরিক অগ্রিম মল্যে বরণ করিয়া তাঁহাকে ঘরে তুলিয়াছে। যে এই উলিক পরে, তাহার অনেক সখি। এক্ষণে সর জজ কাবেল এতদ্দেশ ত্যাগ করিয়া গিয়াছেন-ইহাতে সকলেই দঃখিত। এ পথিবীতে পরনিন্দা প্রধান সখি-বিশেষ যদি নিন্দিত ব্যক্তি উচ্চশ্রেণীস্থ এবং গণবান হয়, তবে আরও সখি। সারা জজ কাবেল গণবান হউন, বা না হউন, উচ্চশ্রেণীস্থ বটে। তাঁহার নিন্দায় যে সখি, তাহাতে এক্ষণে বঙ্গদেশের লোক বঞ্চিত হইল। ইহার অপেক্ষা আর গারতের দীঘটনা কি হইতে পারে? এই যে গারতের দভিক্ষবাহিতে দেশ দন্ধ হইতেছিল, তাহাতেও আমরা কোন মতে প্ৰাণ ধারণা করিতেছিলাম, খবরের কাগজ চলিতেছিল, বাঙ্গালী বাবা গলেপার মজলিসে অশ্লীল গলপ ছাড়িয়া, সারা জজের নিন্দা করিয়া বোতল শেষ করিতেছিলেন। কিন্তু এক্ষণে ? হায়! এক্ষণে কি হইবে! এইরুপ সৰবজাননিন্দাহ হওয়া সচরাচর দেখা যায় না। অনেকে বলিবেন, সর জজ

  • “সর উইলিয়ম গ্রে ও সারা জজ কাবেল” ইতি শীর্ষক একটি প্রবন্ধ ১২৮২ সালের বঙ্গদর্শনে প্রকাশিত হইয়াছিল। তাহার এক অংশ মাত্র এখানে গহীত হইল।

ܚܩܢܬܐ ORA