পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্রবন্ধ-ৰাঙ্গালার কলঙ্ক হওয়া যায়। সেই সকল গ্রন্থের একটি তালিকা। উইলসন সাহেব প্রচারিত কারিয়াছেন, এবং তৎসঙ্গে উহা হইতে কতকগালি ঐতিহাসিক তত্ত্ব সংগ্ৰহ করিয়া প্রকাশিত করিয়াছেন। ঐ গ্রন্থের ৮২ পাঠায় দেখিবেন, লিখিত আছে যে, গঙ্গারাঢ়ীর অধীশ্বর অনন্তব্যক্ষমা বা কোলাহল কালঙ্গ জয় কারিয়াছিলেন। এ কথা প্রস্তর-শাসনে লিখিত আছে, আমরা গঙ্গারাঢ়ী নাম নািতন গড়ি নাই। তবে অনভিজ্ঞ ইংরাজেরা বাঙ্গালার ইতিহাস লিখিতে প্রবত্ত হওয়ায় আর সেই সকল গ্রন্থ প্রচলিত হওয়ায়, বাঙ্গালার পর্ব গৌরব প্রচ্ছন্ন রাহয়াছে। এহ যে অনন্তবৰ্ম্মমা বা কোলাহল রাজার উল্লেখ করলাম, ইনিও বাঙ্গালীর পািব্ব গৌরবের এক চিরস্মরণীয় প্রমাণ। উড়িষ্যার বিখ্যাত গঙ্গাবংশ নামে যে রাজবংশ, ইনিই তাহার আদিপরষ। কেহ কেহ বলেন যে, গঙ্গাবংশীয়েরা দক্ষিণদেশ হইতে উড়িষ্যায় আসিয়াছিল এবং চৌরঙ্গা বা চোরগঙ্গা নামে একজন দাক্ষিণাত্য রাজা এই বংশ সংস্থাপন করেন। এ কথাঢ়ি মিথ্যা। এই প্রবল প্রতাপশালী মহামহিমময় রাজবংশীয়েরা যে বাঙ্গালী ছিলেন,* এই কথা যাহারা বিশ্বাস করিতে অনিচ্ছােক, তাঁহারই সে পক্ষ সমর্থন করেন। উইলসন সাহেবের কথিত গ্রন্থে কথিত পাঠাতেই যে একখানি শাসনের উল্লেখ আছে, তাহাতে লিখিত আছে, রাঢ়া ফোলাহলাই উড়িষ্যাবজেতা এবং গঙ্গােবংশের আদিপরষ। তামফলক বা প্রস্তর এ বিষয়ে মিথ্যা <था <ादा6द व्ा । ঐতিহাসিক ভারতবর্ষে যে সকল রাজবংশের আবিভােব হইয়াছিল, এই বাঙ্গালী গঙ্গাবংশীয় দগের প্রতাপ ও মাহমা কাহারও অপেক্ষা নতুন ছিল না। পরীর মন্দির ও কোণাকের আশচয্য প্রাসাদাবলী তাহাদিগেরই গঠিত। বাঙ্গালার পাঠানেরা যত বার তাহদের সঙ্গে যাদ্ধে উদ্যত হইয়াছিল, তত বার পরাভূত, তড়িত এবং অপমানিত হইয়াছিল। বরং গঙ্গাবংশীয়েরা তাহ[াদগকে প্রহার করতে করিতে পশ্চাদ্ধাবিত হইয়া তাড়াহয়া লইয়া যাইত। একদা লাঙ্গলায় নরসিংহ নামে একজন গঙ্গাবংশীয় রাজা বাঙ্গালার মসলমান সালতানের ঐরােপ পশ্চাদ্ধাবিত হহয়া, পাঠানীদিগের রাজধানী গৌড় এবং নগর আক্রমণ কারিয়া লািঠপাঠ কারিয়া পাঠানের সব্বস্ব লহিয়া ঘরে ফিরিয়া যান। উদ্ধত মসলমানাদগকে গঙ্গাবংশীয়েরা তিন শত বৎসর ধারয়া যেরপ শাসিত রাখিয়াছিলেন, সেরােপ চিতোরের রাজবংশ ভিন্ন আর কোন হিন্দ,রাজবংশ পারেন নাহ। তাহারা যেমন বাঙ্গালায় মাসলমানাদগকে শাসনে রাখিয়াছিলেন, দক্ষিণাত্যের হিন্দ,রাজাদিগকেও তেমনি শাসিত রাখিয়াছিলেন। এই সকল কথার পয্যালোচনা করিয়া, হন্টর সাহেব সেকালের উড়িয়া-সৈন্যের অনেক প্রশংসা কারিয়াছেন। সে প্রশংসা উড়িয়া-সেনার প্রাপ্য নহে, গঙ্গাবংশীয়দিগের স্বদেশী রাঢ়াসৈন্যের প্রাপ্য। সকলেই জানেন যে, উড়িষ্যার গঙ্গাবংশীয়দিগের সাম্রাজ্য গোদাবরী হইতে সরস্বতী পৰ্য্যন্ত অর্থাৎ বাঙ্গালায় ত্ৰিবেণী পৰ্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এক্ষণে যাহা মেদিনীপর জেলা এবং হাবরা জেলা, তাহার সমাদয় এবং যাহা বদ্ধমান ও হগলি জেলার অন্তগত, তাহার কিয়দংশ। ঐ সাম্রাজ্যভুক্ত ছিল। ইহাই গঙ্গাবংশীয়দিগের পৈতৃক রাজ্য। যেমন নম্পমান উহালয়ম ইংলন্ড জয় করিয়া নম্পমােন্ডর রাজধানী পরিত্যাগপৰ্ব্বক ইংলন্ডের রাজধানীতে গিয়া বাস করিতে লাগিলেন, তেমনি গঙ্গাবংশীয়েরা উড়িষ্যা জয় করিয়া, আপনাদিগের প্রাচীন রাজধানী পরিত্যাগপৰ্ব্বক উড়িষ্যায় বাস করতে লাগিলেন বটে, কিন্তু তাঁহারা পৈতৃক রাজ্য ছাড়েন নাই। উহাও তাঁহাদিগের রাজ্যভুক্ত রহিল, ইহাই সম্ভব। সেই জন্যহ ত্ৰিবেণা পয্যন্ত উড়িষ্যার অধিকার ছিল। বাঙ্গালার মসলমানেরা গঙ্গাবংশীয়দিগকে আক্রমণ কারলে, কাজেই প্রথমে এই রাঢ়দেশ আক্রমণ করিত, এবং এই রাঢ়ীগণ কর্তৃকই পািনঃ পািনঃ পরাভূত হইত। এক্ষণে অনেকে জিজ্ঞাসা করিতে পারেন যে, রাঢ়ী বাঙ্গালীরা যদি এত বলবিক্রমযক্তি ছিল, তবে অন্যান্য বাঙ্গালীরা এত হীনবীৰ্য্য কেন ? আমাদিগের উত্তর যে, অন্য বাঙ্গালীরা রাঢ়ীদিগের অপেক্ষা হীনবীৰ্য্য ছিল, এমন বিবেচনা করিবার কোন কারণ নাই। বরং এই রাঢ়ীরাও অন্য বাঙ্গালীদিগের দ্বারা পরাভূত হইয়াছিল, ইহাও বিবেচনা করিবার কারণ আছে। রাঢ়দেশের

  • “বমা” শব্দে বাবাইতেছে যে, উহারা ক্ষত্ৰিয় ছিলেন। ক্ষত্ৰিয় হইলে বাঙ্গালী হইল না, ভরসা। করি, এ আপত্তি কেহ করবেন না। বাঙ্গালার ক্ষত্রিয়কে বাঙ্গালী বলিব না, তবে বাঙ্গালার রাহ্মণকেই दा बाश्कोव्ी दक्लिब का?

99.