পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

विविध अवक-वाक्राणान हेडिशन नम्बक कामकई कथा করিতেন ? আমি যতদর ঐতিহাসিক অন্যাসন্ধান করিয়াছি, তাহাতে আমার এই বিশ্বাস আছে যে, পাঠানেরা কস্মিন কালে প্রকৃতপক্ষে বাঙ্গালা অধিকার করেন নাই। স্থানে স্থানে তাঁহারা সৈনিক উপনিবেশ সংস্থাপন করিয়া উপনিবেশের পাশ্ববত্তী স্থান সকল শাসন করিতেন মাত্র। তাঁহাদিগের আমলে বাঙ্গালীই বাঙ্গালা শাসন করিত। হিন্দরাজগণের অধিকার-সময় হইতে ওয়ারেন হেস্টিংসের সময় পৰ্য্যন্ত ক্ষদ্র ক্ষমাদ্র হিন্দ,রাজগণ বাঙ্গালাদেশ অধিকার কারিত; যেমন বিষ্ণপরের রাজা, বদ্ধমানের রাজা, বীরভূমের রাজা ইত্যাদি। ইহারাই দীনদনিয়ার মালিক ছিলেন। ইহারাই রাজস্ব আদায় করিতেন, শান্তিরক্ষা করিতেন, দন্ডবিধান করিতেন এবং সব্বপ্রকার রাজ্যশাসন করিতেন। মসলমান সমাটেরা বড় বড় লড়াই পড়িলে লড়াই করতেন অথবা করিতেন না। অধীনস্থ রাজগণের নিকট করা লইতেন অথবা পাইতেন না। ইউরোপের মধ্যকালে ফ্রান্সরাজ্যের রাজার সহিত বরগান্ডী, আজ প্রবেন্স প্রভৃতি পারিপাশ্বিক প্রদেশের রাজগণের যে সম্পবিন্ধ, মসলমানের সহিত বাঙ্গালার রাজগণের সেই সম্পবিন্ধ ছিল। অর্থাৎ তাহারা একজন SuZerain মানত। কখন কখন মানিত না। তদ্ভিন্ন স্বাধীন ছিল। এ বিষয়ে যত দর অন্যসন্ধান করিতে পাের, কর । কোন রাজবংশ কোন কোন প্রদেশ। কত কাল শাসন কারিয়াছিলেন, তাহার সন্ধান কর। তাঁহাদিগের সবিস্তৃত ইতিহাস লেখা। ইউরোপ সভ্য কত দিন ? পঞ্চদশ শতাব্দীতে অর্থাৎ চারি শত বৎসর পকেব। ইউরোপ আমাদিগের অপেক্ষাও অসভ্য ছিল। একটি ঘটনায় ইউরোপ সভ্য হইয়া গেল। অকস্মাৎ বিনস্ট বিস্তৃত অপরিজ্ঞাত গ্ৰীকসাহিত্য ইউরোপ ফিরিয়া পাইল। ফিরিয়া পাইয়া যেমন বর্ষার জলে শীণা স্রোতস্বতী কালপরিপ্লাবিনী হয়, যেমন মািমষ রোগী দৈব ঔষধে যৌবনের বলপ্রাপ্ত হয়, ইউরোপের অকস্মাৎ সেইরােপ আভু্যুদয় হইল। আজ পেত্রাক, কাল লাথর, আজ গেলিলিও, কাল বেকন; ইউরোপের এইরুপ অকস্মাৎ সৌভাগ্যোেচ্ছবাস হইল। আমাদিগেরও একবার সেই দিন হইয়াছিল। অকস্মাৎ নবদ্বীপে চৈতন্যচন্দ্রোদয়; তার পর রপসনাতন প্রভৃতি অসংখ্য কবি ধৰ্ম্মমতত্ত্ববিৎ পন্ডিত। এ দিকে দশনে রঘনাথ শিরোমণি, গদাধর, জগদীশ; সমতিতে রঘানন্দন, এবং তৎপরগামিগণ। আবার বাঙ্গালা কাব্যের জলোচ্ছবাস। বিদ্যাপতি, চন্ডীদাস, চৈতন্যের পর্বগামী। কিন্তু তাহার পরে চৈতন্যের পরবত্তিানী যে বাঙ্গালা কৃষ্ণবিষয়িণী কবিতা, তাহা অপরিমেয় তেজস্বিনী, জগতে অতুলনীয়া; সে কোথা হইতে ? আমাদের এই Renaissance কোথা হইতে ? কোথা হইতে সহসা এই জাতির এই মানসিক উদ্দীপ্তি হইল ? এ রোশনাইয়ে কে কে মশাল ধরিয়াছিল ? ধৰ্ম্মমবেত্তা কে ? শাস্ত্রবেত্তা কে, দশানবেত্তা কে ? ন্যায়বেত্তা কে ? কে কবে জন্মিয়াছিল ? কে কি লিখিয়াছিল ? কাহার জীবনচরিত কি ? কাহার লেখায় কি ফল ? এ আলোক নিবিল কেন ? নিবিল বঝি মোগলের শাসনে। হিন্দ রাজা তোড়লমল্পের আসলে তুমার জমার দোষে। সকল কথা প্রমাণ করা। প্রমাণ কারবার আগে বল যে, যে বাঙ্গালা ভাষা, বিদ্যাপতি, চন্ডীদাস, গোবিন্দদাসের কবিতায় এ ভাসাবতী কিরণমালা বিকীৰণ করিয়াছিল, এ বাঙ্গালা ভাষা কোথা হইতে আসিল । বাঙ্গালা ভাষা আত্মপ্রসােতা নহে। সকলে শনিয়াছি, তিনি সংস্কৃতের কন্যা; কুললক্ষণ কথায় কথায় পরিস্ফাট। কেহ কেহ বলেন, সংস্কৃতের দৌহিত্রী মাত্র। প্রাকৃতই এর মাতা। কথাটায় আমার বড় সন্দেহ আছে। হিন্দী, মারহাট্টা প্রভৃতি সংস্কৃতের দৌহিত্রী হইলে হইতে পারে, কিন্তু বাঙ্গালা যেন সংস্কৃতের কন্যা বলিয়া বোধ হয়। প্রাকৃতে কায্যের স্থানে কাজ বলিত। আমাদের চাষার মেয়েরাও কায্যের স্থানে কায্যি বলে। বিদ্যতের স্থলে বিজ্ঞজলেও বলি না, বিজলিও বলি না। চাষার মেয়েরাও বিদ্যুৎ বলে। অধিকাংশ শব্দই প্রাকৃতের অননগামী। অতএব বিচার করা আবশ্যক-প্রথম, বাঙ্গালার অনায্য ভাষা কি ছিল ? দ্বিতীয়, কি প্রকারে তাহা সংস্কৃতমালক ভাষার দ্বারা কত দর স্থানচ্যুত হইল ? তৃতীয়, সংস্কৃতমালাক যে ভাষা, তাহা একেবারে সংস্কৃত হইতে প্রাপ্ত, না প্রাকৃত হইতে প্রাপ্ত ? বোধ হয় খাজিয়া ইহাই পাইবে যে, কিয়দংশ সংস্কৃত হইতে প্রাপ্ত, কিয়দংশ প্রাকৃত হইতে প্রাপ্ত। চতুৰ্থ, সেই সংস্কৃতমালক ভাষার সঙ্গে অনায্য ভাষা কত দর মিশ্রিত হইয়াছে। ঢেকি, কুলো ইত্যাদি শব্দ কোথা হইতে আসিল ? পঞ্চম, ফারসী, আরবী, ইংরেজি কোন সময়ে কত দর মিশিয়াছে ? মোগল বাঙ্গালা জয় করিয়া শাসন একটি কঠিনতর করিয়াছিল, সেটকু কত দৱ ?? রাজ্যও একটি অধিক দর বিস্তৃত করিয়াছিল, সেটাকুই বা কত দার ? তোড়লমল্লের রাজস্ব-বন্দোবস্ত 99S