পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बभ्क्ष्म ब्रष्नावणी কয়টি এক্ষণে বাঙ্গালী শব্দ বলিয়া গণিত। অতএব ইহা অবশ্যই স্বীকার করিতে হইবে যে বাঙ্গালী শদ্রে সকল না হউক, কেহ কেহ অনাৰ্য্যবংশ। কেহ কেহ বলিতে পারেন যে, আমরা পািব্ব পরিচ্ছেদে যে সকল প্রমাণ দিয়াছি, তাহা সবগলি ছিদ্রশান্য নহে। তাহা আমরা কতক স্বীকার করি, কিন্তু এক প্রমাণ আচ্ছিদ্র, অখন্ডনীয় আছে। যেখানে বণ ও আকৃতি আৰ্যজাতীয় নহে, সেখানে যে অনাৰ্য্যশোণিত বত্তমান, তাহা নিশ্চিত। আমরা যে কয়টি উদাহরণ দিয়াছি, সকল কয় জাতি সম্পবন্ধেই অন্যান্য প্রমাণের উপর এই আকারগত প্রমাণ বিদ্যমান; অতএব ঐ কয়টি জাতির অনায্যত্ব সম্পবন্ধে কৃতনিশ্চয় হওয়া যাইতে পারে। আমরা মনে করিলে এরােপ উদাহরণ অনেক দিতে পারিতাম। দিনাজপর ও মালদহে পলি বা পলিয়াদিগের কথা লিখিতে পারিতাম। পলিয়ারা ভাষায় বাঙ্গালী ও ধৰ্ম্মে হিন্দ, সতরাং তাহারা বাঙ্গালী বলিয়া গণ্য। কিন্তু তাহদের আকার ও আচার অনায্যের ন্যায়। তাহারা কৃষ্ণকায়, খৰ্ব্বব্যাকৃত, শািকর পালে এবং শািকর খায়। সতরাং তাহাদিগের অনাৰ্য্যত্বে কোন সংশয় নাই। মন, মহাভারতান্দির পলিন্দ জাতি বৰ্ত্তমান পলিদিগের পকেবীপরাষ, এমন অনমান কতদর সঙ্গত, তাহা আমি এক্ষণে বলিতে পারিলাম না। কোন আৰ্য্যবংশীয় জাতি যে শািকর পালন করিয়া জীবিকা নিৰ্ব্ববাহ করিবে, ইহা সম্ভব নহে। কেন না, শািকর আর্য্যশাস্ত্রানসারে অতি অপবিত্র জন্তু; বাঙ্গালাজয়কারী আয্যেরা ঐ সকল ব্যবসায় যে অনাৰ্য্যদিগের হাতে রাখিবেন, ইহাই সম্ভব। বিশেষ, শািকর বা শািকরমাংস আযাদিগের কোন কাজে লাগে না। যদি এইরপে শংকরপালক জাতিদিগকে অনায্য বলিয়া স্থির করা যায়, তাহা হইলে দক্ষিণবাঙ্গালার কাওরারাও অনায্য বলিয়া বোধ হয়। কাওরাদিগের জাতীয় আকারও অনাৰ্য্যদিগের ন্যায়। কাওরারা কোন অনাৰ্য্যজাতিসম্ভবত, তাহা নিরাপণ করা যায় না। কিন্তু কতকগলি অনায্য জাতির সঙ্গে ইহাদিগের নামের সাব্দশ্য আছে। যথা-কোড়োয়া, খাড়োয়া, খাড়িয়া, কৌর ইত্যাদি। কিরাত শব্দ প্রাকৃততে কিরাও হইবে। কিরাও শব্দের অপভ্রংশে কাওরাও হওয়া অসম্ভব নহে। বাঙ্গালার উত্তরে কিরাতেরা কিরাতি বা কিরান্তি নামে অদ্যাপি বিত্তমান আছে। পাশ্চাত্ত্যেরা বাগদীদিগকেও অনায্যবংশ বলিয়া ধরিয়া থাকেন। বাস্তবিক বাগদীদিগের আকার ও বণ্য হইতে অনাৰ্য্যবংশ অনমান করা অসঙ্গত বোধ হয় না। অনেকে বাগদী ও বাউরী এক আদিম জাতি হইতে উৎপন্ন বলিয়া থাকেন। আমাদিগের এমত ইচ্ছা নহে যে, বাঙ্গালার হিন্দজাতিদিগের মধ্যে কোন কোন জাতি অনাৰ্য্যবংশ, তাহা একে একে নিঃশেষ করিয়া মীমাংসা করি। বাঙ্গালার শব্দ্রদিগের মধ্যে অনেকাংশ যে অনাৰ্য্যবংশ, ইহাই দেখান আমাদিগের উদ্দেশ্য। এবং পািব্ব পরিচ্ছেদে যে সকল উদাহরণ দিয়াছি, তাহাতে প্রমাণিত হইয়াছে যে, বাঙ্গালী শদ্রের মধ্যে অনাৰ্য্যবংশ অতিশয় প্রবল। কিন্তু কেহ কেহ বলিয়া থাকেন যে, শািন্দ্র মাত্রেই অনাৰ্য্যবংশ। প্রথম বৰ্ণভেদ উৎপত্তির সময়ে সকল শািন্দ্রই অনায্য ছিল বোধ হয়। কিন্তু ক্ৰমে আৰ্যসম্ভবত সঙ্কীণ বৰ্ণ ও অসঙ্কীণ আযাবণ যে এখন শদ্রের মধ্যে মিশিয়াছে, ইহা আমাদিগের দঢ় বিশ্বাস। মাির সকল শত্রই অনার্য, এই কথার অ্যােলকতা প্রতিপাদন করতে এক্ষণে প্রবত্ত প্রথম, কে আৰ্য আর কে অনাৰ্য্য, ইহা মীমাংসা করিবার দাইটি মাত্র উপায়। এক ভাষা, দ্বিতীয় আকার। দেখা যাইতেছে যে, কেবল ভাষার উপর নিভাির করিয়া বাঙ্গালার ভিতরে ইহার মীমাংসা হইতে পারে না। কেন না, সকল বাঙ্গালী শব্দই আৰ্যভাষা ব্যবহার করিয়া থাকে। তবে আকারই একমাত্র সহায় রহিল। কিন্তু ইহা অবশ্যই স্বীকার করিতে হইবে যে, কায়স্থ প্রভৃতি অনেক শদ্রের আকার আর্য্যপ্রকৃত। কায়স্থে ও ব্রাহ্মণে আকার বা বর্ণগত কোন বৈসদশ্য নাই। আকারে প্রমাণ হইতেছে, কতকগলি শব্দ্র আৰ্য্যবংশীয়। দ্বিতীয়, পর্বে অনালোম প্রতিলোম বিবাহের রীতি ছিল; ব্রাহ্মণ ক্ষত্ৰিয়কন্যাকে, ক্ষত্ৰিয় বৈশ্যকন্যাকে বিবাহ করিতে পারিত। ইহাকে অনালোম বিবাহ বলিত। এইরুপ অধঃস্থজাতীয় পরিষ শ্রেদ্ঠজাতীয় কন্যাকে বিবাহ করিলে, প্রতিলোম বিবাহ বলিত। ইহার বিধি মন্দবাদিতে আছে। যেখানে বিবাহ বিধি ছিল, সেখানে অবশ্য বৈধ বিবাহ ব্যতীতও অসবৰ্ণ সংযোগে সন্তানাদি জন্মিত। তাহারা চতুবৰ্গণের মধ্যে স্থান পাইত না। মন বলিয়াছেন, চতুবৰ্ণ ভিন্ন VO V O