পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্ৰবন্ধ-লোকশিক্ষা আমাদিগের আধনিক দার্শনিকদিগের মস্তকের ঘৰ্ম্ম চরণকে আদ্র করে; মক্ষমােলর যে তাহা বঝিতে পারেন নাই, কলিকাতা রিবিউতে তাহার প্রমাণ আছে। সেই কীটতত্ত্বময়, নিৰবাণবাদী, অহিংসাত্মা, দন্বোধ্য ধৰ্ম্ম, শাক্যসিংহ এবং তাঁহার শিষ্যগণ সমগ্ৰ ভারতবর্ষকে-গহস্থ, পরিব্রাজক, পশিডত, মাখ, বিষয়ী, উদাসীন, ৱাহ্মণ, শব্দ্র, সকলকে শিখাইয়াছিলেন। লোকশিক্ষার কি উপায় ছিল না ? শঙ্করাচাৰ্য্য সেই দঢ়বদ্ধমলে দিগ্বিজয়ী সাম্যময় বৌদ্ধধৰ্ম্ম বিলপ্ত করিয়া আবার সমগ্র ভারতবর্ষকে শৈবধৰ্ম্মম শিখাইলেন-লোকশিক্ষার কি উপায় ছিল না ? সে দিনও চৈতন্যদেব সমগ্র উৎকল বৈষ্ণব করিয়া আসিয়াছেন। লোকশিক্ষার কি উপায়। হয় না ? আবার এ দিকে দেখি, রামমোহন রায় হইতে কলেজের ছেলের দল পৰ্যন্ত সাড়ে তিন পুৰুত্ব ব্রাহ্মধর্ম ঘৰিতেছেন। কিন্তু লােকে ত শিখে না। লােকশিক্ষার উপায় ছিল, এখন আর একটা লোকশিক্ষার উপায়ের কথা বলি-সে দিনও ছিল-আজ আর নাই। কথকতার কথা বলিতেছি। গ্রামে গ্রামে, নগরে নগরে, বেদী পিাড়ির উপর বসিয়া, ছোড়া তুলট, না দেখিবার মানসে সমখে পাতিয়া, সগন্ধি মল্লিকামালা শিরোপরে বেন্টিত করিয়া, নাদস নদীস কালো কথক সীতার সতীত্ব, অজ্ঞজনের বীরধৰ্ম্মম, লক্ষণের সত্যব্রত, ভীমের ইন্দ্ৰিয়জয়, রাক্ষসীর প্রেমপ্রবাহ, দধীচির আত্মসমপণবিষয়ক সসংস্কৃতের সদ্ব্যাখ্যা সকণ্ঠে সদলঙ্কার সংযক্ত করিয়া আপামর সাধারণ সমক্ষে বিবত করিতেন। যে লাঙ্গল চাষে, যে তলা পেজে, যে কাটনা কাটে, যে ভাত পায় না পায়, সেও শিখিত-শিখিত যে ধৰ্ম্মম নিত্য, যে ধৰ্ম্ম দৈব, যে আত্মান্বেষণ আশ্রদ্ধেয়, যে পরের জন্য জীবন, যে ঈশ্বর আছেন, বিশ্ব সজেন করিতেছেন, বিশ্ব পালন করিতেছেন, বিশ্ব ধবংস করিতেছেন, যে পাপ পণ্য আছে, যে পাপের দন্ড পণ্যের পরিস্কার আছে, যে জন্ম আপনার জন্য নহে, পরের জন্য, যে অহিংসা পরম ধৰ্ম্মম , যে লোকহিত পরম কাৰ্য্য-সে শিক্ষা কোথায় ? সে কথক কোথায় ? কেন গেল ? বঙ্গীয় নব্য যািবকের কুরচির দোষে। গলকি কাওরাণী শয়ার চরাইতে অপারগ হইয়া কুপথ অবলম্বন করিয়াছে। তাহার গান বড় মিস্ট লাগে, কথকের কথা শনিয়া কি হবে ? দক্ষযজ্ঞে, বিশ্বযজ্ঞে, ঈশ্বরের জন্য ঈশ্বরীর আত্মসমপণ শনিয়া কি হইবে ? চল ভাই, ব্রাপিড টানিয়া থিয়েটারে গিয়া কাওরাণীর টপা শনিয়া আসি। এই অলপ ইংরেজিতে শিক্ষিত সাবধৰ্ম্মমন্দ্ৰিন্ট, কদাচার, দারাশয়, আসার, অনালাপ্য, বঙ্গীয় যবকের দোষে লোকশিক্ষার আকর কথকতা লোপ পাইল। ইংরেজি শিক্ষার গণে লোকশিক্ষার উপায় ক্রমে লপ্ত ব্যতীত বদ্ধিত হইতেছে না। কিন্তু আসল কথা বলি। কেন যে এ ইংরেজি শিক্ষা সত্ত্বেও দেশে লোকশিক্ষার উপায় হ্রাস ব্যতীত বদ্ধি পাইতেছে না, তাহার স্থল কারণ বলি-শিক্ষিতে অশিক্ষিতে সমবেদনা নাই। শিক্ষিত, অশিক্ষিতের হৃদয় বঝে না। শিক্ষিত, অশিক্ষিতের প্রতি দণ্টিপাত করে না। মরকে রামা লাঙ্গল চাষে, আমার ফাউল কারি সসিদ্ধ হইলেই হইল। রামা কিসে দিনযাপন করে, কি ভাবে, তার কি অসখ, তার কি সখি, তাহা নদের ফটিকচাঁদ তিলাদ্ধ মনে স্থান দেন না। বিলাতে কাণা ফসেট সাহেব, এ দেশে সার অসলি ইডেন, ইহারা তাঁহার বক্তৃতা পড়িয়া কি বলিবেন, নদের ফটিকচাঁদের সেই ভাবনা। রামা চুলোয় যাক, তাহাতে কিছ আসিয়া যায় না। তাঁহার মনের ভিতর যাহা আছে, রামা এবং রামার গোঠী-সেই গোষ্ঠী ছয় কোটি ষাটি লক্ষের মধ্যে ছয় কোটি উনষাটি লক্ষ নব্বই হাজার নয় শ’-তাহারা তাঁহার মনের কথা বঝিল না। যশ লইয়া কি হইবে ? ইংরেজি ভাল বলিলে কি হইবে ? ছয় কোটি ষাটি লক্ষের ক্ৰন্দনধৰনিতে আকাশ যে ফাটিয়া যাইতেছে-বাঙ্গালায় লোক যে শিখিল না। বাঙ্গালায় লোক বে। भिकिऊ नाई, शैश न-भिक्रिऊ बदन ना। সশিক্ষিত যাহা বাঝেন, অশিক্ষিতকে ডাকিয়া কিছ কিছ, বৰঝাইলেই লোক শিক্ষিত হয়। এই কথা বাঙ্গালার সব্বত্রে প্রচারিত হওয়া আবশ্যক। কিন্তু সশিক্ষিত, অশিক্ষিতের সঙ্গে না। মিশিলে তাহা ঘটিবে না। সশিক্ষিতে অশিক্ষিতে সমবেদনা চাই। ea