পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দান করিলেই পরীকালে গতি, কিন্তু শদ্রের সেই দান গ্রহণ করিলেও ব্রাহ্মণ পতিত। ব্রাহ্মণের সেবা করিলেই শদ্রের পরকালে গতি। অথচ শব্দ্রও মনীষা, ব্ৰাহ্মণও মনষ্যে। প্রাচীন ইউরোপের, বন্দী এবং প্ৰভু মধ্যে যে বৈষম্য, তাহাও এমন ভয়ানক নহে। অদ্যাপি ভারতবষীবাসীরা কোন গরতের বৈষম্যের কথার উদাহরণস্বরপ বলে, “বামন শব্দ্র তফাৎ”। এই গারতের বর্ণবৈষম্যের ফলে ভারতবৰ্ষ অবনতির পথে দাঁড়াইল। সকল উন্নতির মািল জ্ঞানোন্নতি। পশ্বাদিবৎ ইন্দ্ৰিয়তৃপ্তি ভিন্ন পথিবীর এমন কোন একটি সখি তুমি নির্দেশ করিয়া বলিতে পারবে না, যাহার মািল জ্ঞানোন্নতি নহে। বৰ্ণবৈষম্যে জ্ঞানোন্নতির পথরোধ হইল। শব্দ্র জ্ঞানালোচনার অধিকারী নহে; একমাত্র ব্রাহ্মণ তাহার অধিকারী। ভারতবর্ষের অধিকাংশ লোক ব্ৰাহ্মণেতরবণ। অতএব অধিকাংশ লোক মািখ হইল। মনে কর, যদি ইংলন্ডে এরপ নিয়ম থাকিত যে, রসেল, কাবেন্দ্দিষ, স্তানলি প্রভৃতি কয়েকটি নিদিষ্ট বংশের লোক ভিন্ন আর কেহ বিদ্যার আলোচনা করিতে পরিবে না, তাহা হইলে ইংলন্ডের এ সভ্যতা কোথায় থাকিত ? কবি, দার্শনিক, বিজ্ঞানবিং দরে থাকুক, ওয়াট, স্টিবিনসন, আকােরাইট, কোথায় থাকিত ? ভারতবর্ষে প্রায় তাহাই ঘটিয়াছিল। কিন্তু কেবল তাহাই নহে। অনন্যসহায় ব্ৰাহ্মণেরা যে বিদ্যার আলোচনা একাধিকবার করিলেন, তাহাও বৰ্ণবৈষম্য দোষে কুফলপ্ৰদা হইয়া উঠিল। সকল বণের প্রভু হইয়া, তাঁহারা বিদ্যাকে প্ৰভুত্বরক্ষণীরাপে নিযক্ত করিলেন। বিদ্যার য্যেরােপ আলোচনায় সেই প্ৰভুত্ব বজায় থাকে, যাহাতে তাহার আরও বদ্ধি হয়, যাহাতে অন্য বৰ্ণ আরও প্রণত হইয়া ব্ৰাহ্মণপদরজ ইহজন্মের সারভূত করে, সেইরােপ আলোচনা করিতে লাগিলেন। আরও যাগযজ্ঞের সন্টি কর, আরও মন্ত্র, দান, দক্ষিণা, প্ৰায়শিচত্ত বাড়াও, আরও দেবতার মহিমাপণী মিথ্যা ইতিহাস কলপনা করিয়া এই অপসরানােপােরনিক্কণ নিন্দিত মধর আর্য্যভাষায় গ্ৰন্থিত কর, ভারতবাসীদিগের মােখতাবন্ধন আরও অস্টিয়া বাঁধ। দর্শন, বিজ্ঞান, সাহিত্য, সে সবে কাজ কি ? সেদিকে মন দিও না। আমােক ব্ৰাহ্মণখনির কলেবর বাড়াও-নাতন উপনিষদখানি প্রচার কর-ব্ৰাহ্মণের উপর ব্রাহ্মণ, উপনিষদের উপর উপনিষদ, আরণ্যকের উপর আরণ্যক, সত্রের উপর সত্ৰ, তার উপর ভাষ্য, তার টীকা, তার টীকা, তার ভাষ্য অনন্তশ্রেণী-বৈদিক ধন্মের গ্রন্থে ভারতবর্ষ আচ্ছন্ন কর। বিদ্যা ?--তাহার নাম ভারতবর্ষে লিপ্ত হউক! লোক বিষন্ন, ব্যস্ত, শঙ্কিত হইল। ব্রাহ্মণেরা লেখেন, সকল কাজেই পাপ-সকল পাপেরই প্রায়শ্চিত্ত কঠিন। তবে কি বিপ্ৰেতরবণের পাপ হইতে মাক্তি নাই-পারিত্রিক সখি কি এতই দল্লভ ? লোক কোথায় যাইবে ? কি করিবে ? এ ধৰ্ম্মশাস্ত্রপীড়া হইতে কে উদ্ধার করিবে ? সুপ্রিন্থনিরোধকারী ব্রাহ্মণের হাত হইতে কে রক্ষা করবে? ভারতবাসীকে কে জীবন দান তখন বিশদ্ধাত্মা শাক্যসিংহ অনন্তকালস্থায়ী মহিমা বিস্তার পর্বক, ভারতাকাশে উদিত হইয়া, দিগন্তপ্রাধাবিত রবে বলিলেন, “यानि ऎकाग्नरुन्निवे' उठाभ ऊाशाफ्रिका ऎकानिद्र বীজমন্ত্র দিতেছি, তোমরা সেই মন্ত্র সাধন করা। তোমরা সবই সমান। ব্ৰাহ্মণ শব্দ্র সমান। মনষ্যে মনষ্যে সকলেই সমান। সকলেই পাপী, সকলেরই উদ্ধার সদাচরণে। বৰ্ণবৈষম্য মিথ্যা। যাগ যজ্ঞ মিথ্যা। বেদ মিথ্যা, সত্র মিথ্যা, ঐহিক সখি মিথ্যা, কে রাজা, কে প্ৰজা, সব মিথ্যা। ধৰ্ম্মমই সত্য। মিথ্যা ত্যাগ করিয়া সকলেই সত্যধৰ্ম্মম পালন কর।” বৈষম্য-পীড়িত ভারত এ মহামন্ত্র শনিয়া হিমগিরি হইতে মহাসমদ্র পর্যন্ত বিচলিত হইল। বৌদ্ধধৰ্ম্ম ভারতবর্ষে প্রচলিত হইল-বৰ্ণবৈষম্য কতক দর বিলপ্ত হইল। প্রায় সহস্র বৎসর ভারতবর্ষে বৌদ্ধধৰ্ম্ম প্রচলিত রহিল। পরাবন্তজ্ঞ ব্যক্তিরা জানেন যে, সেই সহস্ৰ বৎসরই ভারতবর্ষের প্রকৃত সৌষ্ঠবের সময়। যে সকল সমাট হিমালয় হইতে গোদাবরী পৰ্যন্ত যথার্থই একচ্ছত্রে শাসিত করিয়াছেন-অশোক, চন্দ্রগঞ্জ, শিলাদিত্য প্রভৃতি—এই কালমধ্যেই তাঁহাদিগের অভু্যুদয়। এই সময়েই তক্ষশিলা হইতে তাম্রলিপ্তি পৰ্যন্ত বহজনসমাকীর্ণ মহাসমদ্ধিশালিনী সহস্ৰ সহস্ৰ নগরীতে ভারতবর্ষ পরিপরিত হইয়াছিল। এই সময়েই ভারতবর্ষের গৌরব ○もひ