পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী কুরক্ষেত্রের যন্ধে যে ইহার বড় বেশি পাবে হয় নাই, বরং কিছ: পরেই হইয়াছিল, তাহার এক অখন্ডনীয় প্রমাণ পাওয়া যায়। সকল প্রমাণ খন্ডন করা যায়-গণিত জ্যোতিষের প্রমাণ খন্ডন করা যায় না-“চন্দাকোঁ যত্ৰ সাক্ষিণেী।” ৰ সকলেই জানে যে, বৎসরের দাইটি দিনে দিবারাত্র সমান হয়। সেই দাইটি দিন একের ছয় মাস পরে আর একটি উপস্থিত হয়। উহাকে বিষাব বলে। আকাশের যে যে স্থানে ঐ দই দিনে সাহায্য থাকেন, সেইস্থান দাইটিকে ক্রান্তিপাতবিন্দ (Equinoctial point) বলে। উহার sBBLBBB B LLLLL BE S00 LLLLLCLLLLLLL BB BBB BBBBBBB SBBBBS SLLLLLLSS SSSS g LL অংশে উপস্থিত হইলে সায্য দক্ষিণায়ন হইতে উত্তরায়ণে বা উত্তরায়ণ হইতে দক্ষিণায়নে যান। মহাভারতে আছে, ভীমের ইচ্ছামত্যুে। তিনি শরশয্যাশায়ী হইলে বলিয়াছিলেন যে, আমি দক্ষিণায়নে মরিব না, (তাহা হইলে সদ্গতির হানি হয়); অতএব শরশয্যায় শাইয়া উত্তরায়ণের প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন। মাঘ মাসে উত্তরায়ণ হইলে তিনি প্রাণত্যাগ করলেন। প্রাণত্যাগের পর্বে ভীস্ম বলিতেছেন “মাঘোহয়ং সমনপ্রাপ্তো মাসঃ সৌম্যো। যধিষ্ঠির।” তবে, তখন মাঘ মাসেই উত্তরায়ণ হইয়াছিল। অনেকে মনে করেন, এখনও মাঘ মাসেই উত্তরায়ণ হয়, কেন না, ১লা মাঘকে উত্তরায়ণ দিন এবং তৎপৰবদিনকে মকর-সংক্রান্তি বলে। কিন্তু তাহা আর হয় না। যখন অশ্বিনী নক্ষত্রের প্রথম অংশে ক্রান্তিপাত হইয়াছিল, তখন অশ্বিনী প্রথম নক্ষত্র বলিয়া গণিত হইয়াছিল; তখন আশ্বিন মাসে বৎসর আরম্ভ করা হইত, এবং তখনই ১লা মাঘে উত্তরায়ণ হইত। এখনও গণনা সেইরােপ চলিয়া আসিতেছে, এখন ফসলী সন ১লা আশ্বিনে আরম্ভ হয়, কিন্তু এখন আর আশ্বিনী নক্ষত্রে ক্রান্তিপাত হয় না; এবং এখন ১লা মাঘে পকেবার মত উত্তরায়ণ হয় না। এখন ৭ই পৌষ বা ৮ই পৌষ (২১শে ডিসেম্বর) উত্তরায়ণ হয়। ইহার কারণ এই যে, ক্রোন্তিপাত-বিন্দর একটা গতি আছে, ঐ গতিতে ক্রান্তিপাত, সতরাং আয়নপরিবত্তনস্থানও, বৎসর বৎসর পিছাইয়া যায়। ইহাই পািব্বকথিত Precession of the Equinoxes- হিন্দনাম “অয়নচলন”। কত পিছাইয়া যায়, তাহারও পরিমাণ স্থির আছে। হিন্দরা বলেন, বৎসরে ৫৪ বিকলা, ইহাও পন্ধেব কথিত হইয়াছে। কিন্তু ইহাতে সামান্য ভুল আছে। ১৭২ খ্ৰীঃ-পৰ্ব্ববাব্দে হিপাকসানামা গ্ৰীক জ্যোতিবিদ ক্রান্তিপাত হইতে ১৭৪ অংশে চিত্রা নক্ষত্ৰকে দেখিয়াছিলেন। মাস্কেলাইন, ১৮ o২ খ্ৰীঃ অব্দে চিত্রাকে ২o১ অংশে ৪ কলা ৪ বিকলায় দেখিয়াছিলেন। ইহা হইতে হিসাব করিয়া পাওয়া যায়, ক্রান্তিপাতের বার্ষিক গতি সাড়ে পঞ্চাশ বিকলা। বিখ্যাত ফরাশী জ্যোতিবিদ I_everrier ঐ গতি অন্য কারণ হইতে ৫o • ২৪ বিকলা স্থির করিয়াছেন, এবং সব্বশেষে Stockwell, গণিয়া ৫o • ৪৩৮ বিকলা পাইয়াছেন। এই গণনা প্রথম গণনার সঙ্গে মিলে। অতএব ইহাই গ্রহণ করা যাউক । ভীমের মাতৃত্যুকালেও মাঘ মাসে উত্তরায়ণ হইয়াছিল, কিন্তু সৌর মাঘের* কোন দিনে, তাহা লিখিত নাই। পৌষ মাঘে সচরাচর ২৮ কি ২৯ দিন দেখা যায়। এই দই মাসে ৫৭ দিনের বেশী প্রায় দেখা যায় না। কিন্তু এমন হইতে পারে না যে, তখন মাঘ মাসের শেষ দিনেই উত্তরায়ণ হইয়াছিল। কেন না, তাহা হইলে “মাঘেহয়ং সমনপ্রাপ্তাঃ” কথাটি বলা হইত না। ২৮শে মাঘে উত্তরায়ণ ধরিলেও এখন হইতে ৪৮ দিন তফাৎ ৷৷ ৪৮ দিনে রবির গতি মোটামটি ৪৮ অংশ ধরা যাইতে পারে; কিন্তু ইহা ঠিক বলা যায় না, কেন না, রবির শীঘ্ৰগতি ও মন্দগতি আছে। ৭ই পৌষ হইতে ২৯শে মাঘ পৰ্যন্ত রবিসফট বাঙ্গালা পঞ্জিকা ধরিয়া গণিলে। ৪৪ অংশ ৪ কলা মাত্র গতি পাওয়া যায়। ঐ ৪৪ অংশ ৪ কলা হইলে খ্ৰীঃ পঃ ১২৬৩ বৎসর পাওয়া যায়। ৪৮ অংশ পরা লইলে খ্ৰীঃ পঃ ১৫৩o বৎসর পাওয়া যায়। ইহা কোন মতেই হইতে পারে না যে, ইহার পর্ক্সেব কুরক্ষেত্রের যাদ্ধ হইয়াছিল। বিষ্ণপরিাণ হইতে যে শ্ৰীঃ পঃ ১৪৩০ পাওয়া গিয়াছে, তাহাই ঠিক বোধ হয়। ভরসা করি, এই সকল প্রমাণের পর আর কেহই বলিবেন না যে, মহাভারতের যাদ্ধ দ্বাপরের শেষে, পাঁচ হাজার বৎসর পকেবা হইয়াছিল। তাহা যদি হইত, তবে সৌর চৈত্রে উত্তরায়ণ হইত। চান্দ্র মাঘও কখনও সৌর চৈত্রে হইতে পারে না।

  • সে কালেও সৌর মাসের নামই প্রচলিত ছিল, ইহা আমি প্রমাণ করতে পারি। ছয় ঋতুর কথা মহাভারতেই আছে। বার মাস নাহিলে ছয় ঋতু হয় না।

8S