পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই অনাবাদ সম্পবন্ধে একটি কথা বক্তব্য এই যে, “রম’-ধাতুনিম্পন্ন শব্দের অর্থে আমি ক্রীড়ার্থে “রম” ধাতু বঝিয়াছি; যথা, “রতিপ্রিয়া” অর্থে আমি ক্রীড়ানরাগিণী বন্ধিয়াছি। আদৌ “রম” ধাতু ব্যবহৃত। উহার যে অর্থান্তর আছে, তাহা ক্রীড়াৰ্থ হইতেই পাশচাৎ নিম্পন্ন হইয়াছে। “রাতি’ ও ‘রতিপ্রিয়’ শব্দ এই অর্থে যে কৃষ্ণলীলায় সচরাচর ব্যবহৃত হইয়া থাকে, তাহার অনেক উদাহরণ আছে। পাঠক হরিবংশের সপ্তষষ্টিতম, পস্তকান্তরে অস্টিষষ্টিতম অধ্যায়ে এইরূপ প্রয়োগ দেখিবেন।*।। তথায় ক্রীড়াশীল গোপালগণকে ‘রতিপ্রিয় গোপাল বলা হইয়াছে। আর এই অর্থই এখানে সঙ্গত, কেন না, ‘রাস’ একটি ক্রীড়াবিশেষ। অদ্যাপি ভারতবর্ষের কোন কোন স্থানে ঐরােপ ক্রীড়া বা নিত্য প্রচলিত আছে। রাসের অর্থ কি, তাহা শ্ৰীধর সবামী বৰঝাইতেছেন। তিনি বলেন “অন্যোন্যব্যতিষক্তহস্তানাং সত্ৰীপাংসাং গায়তাং মন্ডলীর পোণ ভ্রমতাং নত্যবিনোদা রাসো "ן הקול অর্থাৎ স্ত্রীপরিষে পরস্পরের হাত ধরিয়া গায়িতে গায়িতে এবং মন্ডলীর পে ভ্ৰমণ করিতে করিতে যে নত্য করে, তাহার নাম রাস। বালকবালিকায়। এরপ নিত্য করে আমরা দেখিয়াছি, এবং যাহারা বাল্য অতিক্ৰম করিয়াছে, তাহারাও দেশবিশেষে এরপ নিত্য করে শনিয়াছি। ইহাতে আদিরসের নামগন্ধও নাই। ‘রাস’ একটা খেলা, এবং “রাতি’ শব্দে খেলা। অতএব রাসবশনে ‘রতি’ শব্দ ব্যবহৃত হইলে অনাবাদকালে তৎপ্রতিশব্দস্বরূপ ‘ক্রীড়া’ শব্দই ব্যবহার করিতে হয়। এই রাসলীলাবত্তান্ত কিয়ৎপরিমাণে দন্বোধ্য। ইহার ভিতরে যে গঢ়ি তাৎপৰ্য্য আছে, তাহা আমি গ্রন্থান্তরে পরিসফট করিয়াছি। কিন্তু এখানে এ তত্ত্ব অসম্পণে রাখা অনচিত এজন্য যাহা বলিয়াছি, তাহা পনরক্ত করিতে বাধ্য হইতেছি। আমি “ধৰ্ম্মতত্ত্ব” গ্রন্থে বলিয়াছি যে, মনীষ্যত্বই মনষ্যের ধৰ্ম্ম। সেই মনীষ্যত্ব বা ধন্মের উপাদান আমাদের ব্যক্তিগলির অনশীলন, প্রস্ফারণ ও চরিতার্থতা। সেই ব্যক্তিগলিকে শারীরিকী, জ্ঞানাজনী, কাৰ্য্যকারিণী এবং চিত্তরঞ্জিনী এই চারি শ্রেণীতে বিভক্ত করিয়াছি। বে সকল বত্তির দ্বারা সৌন্দৰ্য্যাদির পর্য্যালোচনা করিয়া আমরা নিৰ্ম্মল এবং অতুলনীয় আনন্দ অনভূত করি, সেই সকলের নাম দিয়াছি চিত্তরঞ্জিনী বত্তি। তাহার সম্যক অনশীলনে, সচিদানন্দময় জগৎ এবং জগন্ময় সচ্চিদানন্দের সম্পপণ স্বরূপানভূতি হইতে পারে। চিত্তরঞ্জিনীবত্তির অনশীলন অভাবে ধৰ্ম্মেমরি হানি হয়। যিনি আদশ মনষ্যে, তাঁহার কোন ব্যক্তিই অননশীলিত বা সাফাত্তিহীন থাকিবার সম্ভাবনা নাই। এই রাসলীলা কৃষ্ণ এবং গোপীগণ-কৃত সেই চিত্তরঞ্জিনীবত্তি অনশীলনের উদাহরণ। কৃষ্ণপক্ষে ইহা উপভোগমাত্র, কিন্তু গোপী-পক্ষে ইহা ঈশ্বরোপাসনা। এক দিকে অনন্তৰ সন্দরের সৌন্দৰ্য্যবিকাশ, আর এক দিকে অনন্তসন্দরের উপাসনা। চিত্তরঞ্জিনীবত্তির চরম অনশীলন সেই বত্তিগালিকে ঈশ্বরমখী করা। প্রাচীন ভারতে সত্ৰীগণের জ্ঞানমােগ নিষিদ্ধ; কেন না, বেদাদির অধ্যয়ন নিষিদ্ধ। সত্ৰীলোকের পক্ষে কৰ্ম্মম মাগা কণ্টসাধ্য, কিন্তু ভক্তিতে তাদের বিশেষ অধিকার। ভক্তি, কথিত হইয়াছে, “পরান-রক্তিরীশ্বরে” । অন্যরাগ নানা কারণে জমিতে পারে। কিন্তু সৌন্দর্য্যের মোহঘটিত যে অন্যরাগ, তাহা মনষ্যে সব্বাপেক্ষা বলবান। অতএব অনন্তসন্দরের সৌন্দয্যের বিকাশ ও তাহার আরাধনাই সত্ৰীজাতির জীবনসার্থকতার মােখ্য উপায়। এই তত্ত্বাত্মক র্যাপকই রাসলীলা। জড়প্রকৃতির সমস্ত সৌন্দৰ্যই তাহতে বত্তমান।

  • “স তন্ত্র বয়সী তুল্যৈাবৎসপালৈঃ সহানঘঃ।

রেমে বৈ দিবসং কৃকঃ পারা সবগলতো যথা৷৷ তং ক্রীড়মানং গোপালাঃ কৃষ্ণং ভান্ডীরবাসিনম । अभाखा बेश्वा गना, कोन्क्दनी