পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

5 উপপ্লব্য সৰ্ব্বভূতাত্মভূতায় ভূতাদিনিধানায় চ। অক্রোধদোহমোহয় তস্মৈ শান্তাত্মনে নমঃ ॥ শান্তিপব্ব, ৪৭ অধ্যায়ঃ। প্রথম পরিচ্ছেদ-মহাভারতের যাদ্ধের সেনোদ্যোগ এক্ষণে উদ্যোগপন্ধের্বর সমালোচনায় প্রবত্ত হওয়া যাউক । সমাজে অপরাধী আছে। মনষ্যেগণ পরস্পরের প্রতি অপরাধ সৰ্ব্বদাই করিতেছে। সেই অপরাধের দমন সমাজে একটি মােখ্য কাৰ্য্য। রাজনীতি রাজদণ্ডড ব্যবস্থশাস্ত্র ধৰ্ম্মশাস্ত্র আইন আদালত সকলেরই একটি মােখ্য উদ্দেশ্য তাই। অপরাধীর পক্ষে কিরােপ ব্যবহার করিতে হইবে, নীতিশাস্ত্রে তৎসম্বন্ধে দাইটি মত আছে। এক মত এই যে :-দন্ডের দ্বারা অর্থাৎ বলপ্রয়োগের দ্বারা দোষের দমন করিতে হইবে-আর একটি মত এই যে, অপরাধ ক্ষমা করিবে। বল এবং ক্ষমা দাইটি পরস্পর বিরোধী-কাজেই দাইটি মত যথার্থ হইতে পারে না। অথচ দাইটির মধ্যে একটি যে একেবারে পরিহার্য্য, এমন হইতে পারে না। সকল অপরাধ ক্ষমা করিলে সমাজের ধবংস হয়, সকল অপরাধ দণিডত করিলে মনষ্যে পশত্ব প্রাপ্ত হয়। অতএব বল ও ক্ষমার সামঞ্জস্য নীতিশাস্ত্রের মধ্যে একটি অতি কঠিন তত্ত্ব। আধনিক সসভ্য ইউরোপ ইহার সামঞ্জস্যে অদ্যপি পৌছিতে পারিলেন না। ইউরোপীয়দিগের খীস্টধৰ্ম্মম বলে, সকল অপরাধ ক্ষমা কর; তাহাদিগের রাজনীতি বলে, সকল অপরাধ দন্ডিত কর। ইউরোপে ধৰ্ম্মম অপেক্ষা রাজনীতি প্রবল, এজন্য ক্ষমা ইউরোপে লপ্তপ্রায়, এবং বলের প্রবল প্ৰতাপ। বল ও ক্ষমার যথার্থ সামঞ্জস্য এই উদ্যোগপৰ্ব্ববর্মধ্যে প্রধান তত্ত্ব। শ্ৰীকৃষ্ণই তাহার মীমাংসক, প্রধানতঃ শ্ৰীকৃষ্ণই উদ্যোগপকেবাের নায়ক। বল ও ক্ষমা উভয়ের প্রয়োগ সম্পবন্ধে তিনি যেরপে আদশ কাৰ্য্যতঃ প্রকাশ করিয়াছেন তাহা আমরা পর্বে দেখিয়াছি। যে তাঁহার নিজের অনিষ্ট করে, তিনি তাহাকে ক্ষমা করেন, এবং যে লোকের অনিন্ট করে, তিনি বলপ্রয়োগপৰ্যন্ত্ৰক তাহার প্রতি দন্ডবিধান করেন। কিন্তু এমন অনেক স্থলে ঘটে, যেখানে ঠিক এই বিধান অনসারে কার্ষ্য চলে না, অথবা এই বিধানানসারে বল কি ক্ষমা প্রযোজ্য, তাহার বিচার কঠিন হইয়া পড়ে। মনে কর, কেহ আমার সম্পত্তি কাড়িয়া লইয়াছে। আপনার সম্পত্তি উদ্ধার সামাজিক ধৰ্ম্ম। যদি সকলেই আপনার সম্পত্তি উদ্ধারে পরামখ হয়, তবে সমাজ অচিরে বিধবন্ত হইয়া যায়। অতএব অপহৃত সম্পত্তির উদ্ধার করিতে হইবে। এখনকার দিনে সভ্য সমাজ সকলে, আইন আদালতের সাহায্যে, আমরা আপন আপনি সম্পত্তির উদ্ধার করিতে পারি। কিন্তু যদি এমন ঘটে যে, আইনআদালতের সাহায্য প্রাপ্য নহে, সেখানে বলপ্রয়োগ ধৰ্মসঙ্গত কি না ? কল ও ক্ষমার সামঞ্জস্য সম্পবন্ধে এই সকল কািট তক উঠিয়া থাকে। কাৰ্য্যতঃ প্রায় দেখিতে পাই যে, যে বলবান, সে কলপ্রয়োগের দিকেই যায়। যে দৰবল, সে ক্ষমার দিকেই যায়। কিন্তু যে বলবান, অথচ ক্ষমাবান, তাহার কি করা কীৰ্ত্তব্য, অর্থাৎ আদর্শ পরিষের এরপে স্থলে কি কৰ্ত্তব্য? তাহার মীমাংসা উদ্যোগপন্বের আরম্ভেই আমরা কৃষ্ণবাক্যে পাইতেছি। 再,鹉 ভরসা করি, পাঠকেরা সকলেই জানেন যে, পাণ্ডবেরা দািতক্ৰীড়ায় শকুনির নিকট হারিয়া এই পণে বাধ্য হইয়াছিলেন যে, আপনাদিগের রাজ্য দায্যোধনকে সম্প্রদান করিয়া দ্বাদশ বর্ষ বনবাস করবেন। তৎপরে এক বৎসর অজ্ঞাতবাস করিবেন; যদি অজ্ঞাতবাসের ঐ এক বৎসরের মধ্যে কেহ। তাঁহাদিগের পরিচয় পায়, তবে তাঁহারা রাজ্য পািনশবার প্রাপ্ত হইবেন না, পানববার দ্বাদশ বিষ জন্য বনগমন কান্নিবেন। কিন্তু যদি কেহ পরিচয় না পায়, তবে তাঁহারা দিযোধনের নিকট আপনাদিগের রাজ্য পানঃপ্রাপ্ত হইবেন। এক্ষণে তাঁহারা দ্বাদশ বর্ষ বনবাস সম্পর্শ করিয়া, বিরাটরাজের পরীমধ্যে এক বৎসর অজ্ঞাতবাস সম্পন্ন করিয়াছেন; ঐ বৎসরের মধ্যে কেহ তাঁহাদিগের পরিচয় J, ייו