পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী উক্তি বিবেচনা করা যায়। শ্ৰীষক্ত কাশীনাথ হ্যািবক, নিজকৃত অনাবাদের যে দীঘ উপক্ৰমণিকা লিখিয়াছেন, তাহাতে সন্তোষজনক প্রমাণ প্রয়োগের দ্বারা এই সিদ্ধান্তে উপস্থিত হইয়াছেন যে, অনগীতা, গীতার অনেক শতাব্দী পরে রচিত হইয়াছিল। সে প্রমাণের বিস্তারিত আলোচনার আমাদের প্রয়োজন নাই। কৃষ্ণচরিত্রের কোন অংশই অনাগীতার উপর নিভাির করে না। তবে, অনগীতা ও ব্রাহ্মণগীতা (বা ব্ৰহ্মগীতা) যে প্রকৃত পক্ষে প্রক্ষিপ্ত, তাহার প্রমাণার্থ ইহা বলিলেই যথেস্ট হইবে যে, পকাব্যসংগ্ৰহাধ্যায়ে ইহার কিছমাত্র প্রসঙ্গ নাই । অজ্ঞজনকে উপদিষ্ট করিয়া, কৃষ্ণ অন্তজািন ও যাধিস্ঠিরাদির নিকট বিদায় গ্রহণপব্বক দ্বারকা যাত্রা করিলেন। এই বিদায় মানবপ্রকৃতিসলভ স্নেহাভিব্যক্তিতে পরিপািণ । কৃষ্ণের মানবিকতার পন্ধেব পাবে আমরা অনেক উদাহরণ দিয়াছি। অতএব ইহার সবিস্তার বণন নিম্প্রয়োজন। পথিমধ্যে উতওঁক মানির সঙ্গে কৃষ্ণের সাক্ষাৎ বাণিত হইয়াছে। কৃষ্ণ যাদ্ধ নিবারণ করেন। নাই, বলিয়া। উতঙ্ক তাঁহাকে শাপ দিতে প্ৰস্তৃত। কৃষ্ণ বলিলেন, শাপ দিও না, দিলে তোমার তপঃক্ষিয় হইবে, আমি সন্ধিস্থাপন করিবার চেন্টা করিয়াছিলাম, আর আমি জগদীশ্বর। তখন উতওঁক তাঁহাকে প্ৰণাম করিয়া স্তব করিলেন। কৃষ্ণের বিশ্বরপ দেখিতে চাহলেন ; কৃষ্ণও বিশ্বরপ দেখাইলেন। তার পর জোর করিয়া। উতঙ্ককে অভিলষিত ববদান করিলেন। তাহার পর চণ্ডডাল আসিল, কুকুর আসিল, চণ্ডডাল উতঙ্ককে কুকুরের প্রস্রাব খাইতে বলিল, ইত্যাদি, ইত্যাদি নানারপ বীভৎস ব্যাপার আছে। এই উতঙ্কসমাগম বক্তান্ত মহাভারতের পািব্বসংগ্রহ।াধ্যায়ে নাই; সতরাং ইহা মহাভারতের অংশ নহে। কাজেই এ সম্পবন্ধে আমাদের কোন কথা বলিবার প্রয়োজন নাই। সম্পািন্টতঃ এখানে তৃতীয স্তর দেখা যায়। দ্বারকায় গিয়া কৃষ্ণ বন্ধ বান্ধবের সঙ্গে মিলিত হইলে বসদেব তাঁহার নিকট যাদ্ধবক্তান্ত শনিতে ইচ্ছা করিলেন। কৃষ্ণ যাদ্ধবত্তান্ত পিতাকে যাহা শনাইলেন, তাহা সংক্ষিপ্ত, অত্যুক্তিশন্য, এবং কোন প্রকার অনৈসগিক ঘটনার প্রসঙ্গদোেষরহিত। অথচ সমস্ত স্থলে ঘটনা প্রকাশিত করিলেন। কেবল অভিমন্যবধ গোপন করিলেন। কিন্তু সভদ্ৰা তাঁহার সঙ্গে দ্বারকায় গিয়াছিলেন, সভদ্ৰা অভিমন্যবধের প্রসঙ্গ স্বয়ং উত্থাপন করিলেন। তখন কৃষ্ণ সে বক্তান্তও সবিস্তারে বললেন। এদিকে যাধিস্ঠির, কৃষ্ণের বিদায়কালে তাঁহাকে অননুরোধ করিয়াছিলেন যে, অশ্বমেধ যজ্ঞকালে পনেকবার আসিতে হইবে। এক্ষণে সেই যজ্ঞের সময় উপস্থিত। অতএব তিনি যাদবগণপরিবত হইয়া পানব্বার হস্তিনায় গমন করিলেন। কৃষ্ণ তথায় আসিলে, অভিমন্যপত্নী উত্তরা একটি মত পত্র প্রসব করিলেন। কৃষ্ণ তাহাকে পািনজীবিত করিলেন। কিন্তু ইহা হইতে এমন সিদ্ধান্ত করা যায় না যে, কৃষ্ণ ঐশী শক্তির প্রয়োগদ্বারা এই কাৰ্য সম্পাদন করিলেন। এখনকার অনেক ডাক্তারই মত সন্তান ভূমিষ্ঠ হইলে তাহাকে পািনজীবিত করিতে পারেন ও করিয়া থাকেন এবং কিরাপে করিতে পারেন, তাহা আমরা অনেকেই জানি। ইহা দ্বারা কেবল ইহাই প্রমাণিত হইতেছে যে, তাহা তখনকার লোক আর কেহ জানিত না, কৃষ্ণ তাহা জানিতেন। তিনি আদশ মনষ্যে, এজন্য সম্পব প্রকার বিদ্যা ও জ্ঞান তাঁহার অধিকৃত হইয়াছিল। তার পর নিবিঘে যজ্ঞ সম্পন্ন হইল। কৃষ্ণও দ্বারকায় পািনরাগমন করিলেন। তার পর আর পান্ডবগণের সঙ্গে তাঁহার সাক্ষাৎ হয় নাই। &A y