পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঙ্কিম রচনাবলী করিও না। তোমার হক্সলী, টি-ডল অপেক্ষা ওরােপ এক জন ভাবকে আমার শ্রদ্ধার পাত্র। তুমি গৌণ ভক্তির কথা তুলিতেছ। ந் শিষ্য। আপনার পর্বকার কথায় ইহাই বঝিয়াছি যে, ইহাকে আপনি ভক্তি বলিয়া সবীকার করেন না। গর। ইহা মােখ্য ভক্তি নহে, কিন্তু গৌণ বা নিকৃষ্ট ভক্তি বটে। যে সকল হিন্দীশাস্ত্র অপেক্ষাকৃত আধনিক, ইহাতে সে সকল পরিপািণ। শিষ্য। গীতাদি প্রাচীন শাস্ত্রে মােখ্য ভক্তিতত্ত্বেরই প্রচার থাকাতেও আধনিক শাস্ত্রে গৌণ ভক্তি কি প্রকারে আসিল ? গর। ভক্তি জ্ঞানাত্মিকা, এবং কম্পমাত্মিকা, ভরসা করি, ইহা বঝিয়াছ। ভক্তি উভয়াত্মিকা বলিয়া, তাহার অনশীলনে মনষ্যের সকল ব্যক্তিগলিই ঈশ্বরে সমাপিত করিতে হয় } সকল ব্যক্তিগলিকে ঈশ্বরমখী করিতে হয়। যখন ভক্তি কৰ্ম্মমাত্মিকা এবং কৰ্ম্মম সকলই ঈশ্বরে সমপৰ্পণ করিতে হয়, তখন কাজেই কম্মেমন্দ্ৰিয় সকলই ঈশ্বরে সমপণ করিতে হইবে। ইহার তাৎপৰ্য্য আমি তোমাকে বঝাইয়াছি যে, যাহা জগতে অনন্ঠেয় অর্থাৎ ঈশ্বরানমোদিত কৰ্ম্মম , তাহাতে শারীরিক বাত্তির নিয়োগ হইলেই ঐ বত্তি ঈশ্বরমখী হইল। কিন্তু অনেক শাস্ত্রকারেরা অন্যরােপ বঝিয়াছেন। কি ভাবে তাঁহারা কম্পেমন্দ্ৰিয় সকল ঈশ্বরে সমপণ করিতে চান, তাহার উদাহরণস্বরপ কয়েকটি শ্লোক ভাগবতপরাণ হইতে উদ্ধত করিতেছি। হরিনামের কথা হইতেছে,- বিলে বতোরক্রমবিক্রমান যে ন শািন্বতঃ কণাপটে নরস্য। জিহবাসতী দান্দরিকেবা সতে নাযোেপগায়িত্যুরগায় গাথাঃ ॥ ভারঃ পরং পট্টকিরীটজস্টমপ্যুত্তমাঙ্গং ন নমেন্দ্মকুন্দং। শাবেী করেী নো কুর্যতঃ সপৰ্য্যাং হরেল্লসিৎকাঞ্চনকঙ্কণৌ বা৷ বহির্বায়িতে তে নয়নে নরাণাং লিঙ্গানি বিষ্ণোননিরীক্ষতে যে। পাদৌ নৰ্ণাং তো দ্রােমজন্মভাজোঁ ক্ষেত্রোণি নানৱজতো হরে যৌ৷ জীবস্তুবো ভাগবতাঙ্ঘিরেণ্য ন ন জাতু মত্যোভিলভোত ষান্তু। শ্ৰীবিষ্ণুপদ্যা মনজম্বুলস্যাঃ শ্বসঙ্কবো যন্ধু ন বেদ গন্ধং ॥ তদশমসারং হৃদয়ং বতেদং যদগাহ্যমানৈহরিনামধেয়ৈঃ। ন বিক্রিয়েতথা যদা বিকারো নেত্ৰে জলং গাত্রর হেষ, হর্ষঃ ॥ ভাগবত, ২ সক, ৩ অ, ২o-২৪ ৷৷ “যে মনীষ্য কণাপটে হরিগণানবাদ শ্রবণ না করে, হায়! তাহার কণা দাইটি ব্যথা গত্ত মাত্র। হে সত । যে হরিগাথা গান না করে, তাহার অসতী জিহবা ভেকজিহবাতুলা। যাহার মস্তক মাকুন্দকে নমস্কার না করে, তাহা পট্ট-কিরীট-শোভিত হইলেও বোঝা মাত্র। যাহার হস্তদ্বয় হরির সপষ্যা না করে, তাহা কনককঙ্কণে শোভিত হইলেও মড়ার হাত মাত্র। মনষ্যেদিগের চক্ষদ্বয় যদি বিষ্ণুমত্তি * নিরীক্ষণ না করে, তবে তাহা ময়ারপােচ্ছ মাত্র। আর যে চরণদ্বয় হরিতীথে পৰ্য্যটন না করে, তাহার বক্ষজন্ম লাভ হইয়াছে মাত্র। আর ষে ভগবৎপদরেণ। ধারণ না করে, সে জীবদ্দশাতেই শব। বিষ্ণুপাদাপিত তুলসীর গন্ধ যে মনষ্য না জানিয়াছে, সে নিশ্বাস থাকিতেও শব। হায়! হরিনামকীৰ্ত্তনে যাহার হৃদয় বিকারপ্রাপ্ত না হয়, এবং বিকারেও যাহার চক্ষে জল ও গাত্রে রোমাণ9 না হয়, তাহার হৃদয় লৌহময়।” এই শ্রেণীর ভক্তেরা এইরূপে ঈশ্বরে বাহেন্দ্ৰিয় সমপণ করিতে চাহেন। কিন্তু ইহা সাকারোপাসনাসাপেক্ষ। নিরাকারে চক্ষপাণিপাদের এরপ নিয়োগ অঘটনীয়। শিষ্য। কিন্তু আমার প্রশেনর উত্তর এখনও পাই নাই। ভক্তির প্রকৃত সাধন কি ? গর। তাহা ভগবান গীতার সেই দ্বাদশ অধ্যায়ে বলিতেছেন যে তু সব্বণি কম্পমণি ময়ি সংন্যস্য মৎপরাঃ । অনন্যেনৈব যোগেন মাং ধ্যায়ন্ত উপাসতে ৷

  • এখানে “লিঙ্গানি বিষ্ণোঃ” অর্থে বিফর মাত্তিসকল। অতি সঙ্গত অৰ্থ। তবে শিবলিঙ্গের কেবল সেই অৰ্থ না করিয়া, কদৰ্য্য উপন্যাস ও উপাসনাপদ্ধতিতে যাই কেন ?

V9 888