বঙ্কিম রন্ধ, সৰলীi বাঝাইলাম, ইহার ভিতরেই তাহার কত উদাহরণ পাওয়া যাইতে পারে। হিন্দীদিগের জাগতিক প্রীতি যাহা তোমাকে বঝাইয়াছি, তাহাতেই ইহার চমৎকার উদাহরণ পাইয়াছ। অন্য ধর্মেও সব্বলোকে প্রীতিষক্ত হইতে বলে বটে, কিন্তু তাহার উপযক্ত মল কিছই নিন্দেশ করিতে পারে না। হিন্দধমের এই জাগতিক প্রীতি জগত্তত্ত্বে দািঢ় বদ্ধমলে। ঈশ্বরের সব্বব্যাপকতায় ইহার ভিত্তি। হিন্দীদিগের দম্পতিপ্ৰীতি সমালোচনায় আর একটি এই শ্রেষ্ঠতার প্রমাণ পাওয়া প্রীতি অন্য জাতির আদর্শস্থল; হিন্দধমের বিবাহপ্রথা ইহার কারণ।।* আমি এক্ষণে প্ৰীতিতত্ত্বঘটিত আর একটি প্রমাণ দিব। ঈশ্বর সব্বভূতে আছেন। এই জন্য সৰ্ব্বভুতে সমদৰ্দিষ্ট করিতে হইবে। কিন্তু সব্বভূত বলিলে কেবল মনষ্য বকায় না। সমস্ত জীব সব্বভূতান্তগত। অতএব পশগণও মনষ্যের প্রীতির পাত্র। মনষ্যেও যেরপে প্রীতির পাত্র, পশগণও সেইরােপ প্রীতির পাত্র। এইরূপ অভেদজ্ঞান আর কোন ধৰ্ম্মে নাই, কেবল হিন্দধমৌ ও হিন্দধৰ্ম্মম হইতে উৎপন্ন বৌদ্ধধৰ্ম্মে 可厄变1 শিষ্য। কথা বৌদ্ধধৰ্ম্মম হিন্দধৰ্ম্মম হইতে পাইয়াছে, না হিন্দধৰ্ম্মম বৌদ্ধধৰ্ম্মম হইতে পাইয়াছে ? গর। অর্থাৎ তোমার জিজ্ঞাস্য যে, ছেলে বাপের বিষয় পাইয়াছে, না বাপ ছেলের বিষয পাইয়াছে ? শিষ্য। বাপ কখন ছেলের বিষয় পায় ? যে প্রকৃতির গতিবিরদ্ধে পক্ষ সমর্থন করে, প্রমাণের ভার তাহার উপর। বৌদ্ধ পক্ষে প্রমাণ কি ? শিষ্য। কিছই না বোধ হয়। হিন্দী পক্ষে প্রমাণ কি ? গর। ছেলে বাপের বিষয় পায়, এই কথাই যথেস্ট। তা ছাড়া বাজসনেয় উপনিষৎ শ্রীতি উদ্ধত করিয়া প্রমাণ দিয়াছি যে, সব্বভূতের যে সাম্য, ইহা প্রাচীন বেদোক্ত ধৰ্ম্মম। শিষ্য। কিন্তু বেদে ত অশ্বমেধাদির বিধি আছে। গর। বেদ যদি কোন এক ব্যক্তিবিশেষ-প্রণীত একখানি গ্রন্থ হইত, তাহা হইলে না হয় বেদের প্রতি অসঙ্গতি দোষ দেওয়া যাইত । Thomas Acquinas) সঙ্গে হবাট পেন্সরের সঙ্গতি খোঁজা যত দীর সঙ্গত, বেদের ভিন্ন ভিন্ন অংশের সঙ্গতির সন্ধানও তত দীর সঙ্গত। হিংসা হইতে অহিংসার ধর্মের উন্নতি। যাক। হিন্দধৰ্ম্মম বিহিত “পশদিগের প্রতি অহিংসা।” পরম রমণীয় ধৰ্ম্ম । যত্নে ইহার অনশীলন করিবে। অহিন্দরা যত্নে ইহার অনশীলন করিয়া থাকে। খাইবার জন্য বা চাষের জন্য বা চড়িবার জন্য যাহারা গো মেষ অশ্বাদির পালন করে, আমি কেবল তাহদের কথা বলিতেছি না। কুকুরের মাংস খাওয়া যায় না, তথাপি কত যত্নে খািমটানেরা কুকুর পালন করে! তাহাতে তাহদের কত সখি! আমাদের দেশে। কত সত্ৰীলোক বিড়াল পিষিয়া অপত্যহীনতার দঃখ নিবারণ করে। একটি পক্ষী পষিয়া কে না সখী হয় ? আমি একদা একখানি ইংরাজি গ্রন্থে পড়িয়ছিলাম।--যে বাড়ীতে দেখিবে-পিঞ্জরে পক্ষী আছে, জানিবে- সেই বাড়ীতে একজন বিজ্ঞ মানষ আছে। গ্রন্থখানির নাম মনে নাই, কিন্তু বিজ্ঞ মানষের কথা বটে। পশদিগের মধ্যে গো হিন্দীদিগের বিশেষ প্রীতির পাত্র। গোেরর তুল্য হিন্দরে পরমোপকারী আর কেহই নাই। গোদােন্ধ হিন্দরে দ্বিতীয় জীবন স্বরুপ। হিন্দ, মাংস ভোজন করে না। যে অন্ন আমরা ভোজন করি, তাহতে পন্টিকর (nitrogenous) দ্রব্য বড় অলপ, গোেরর দন্ধ না খাইলে সে অভাব মোচন হইত না। কেবল গোরীর দগ্ধ খাইয়াই আমরা মানষে এমন নহে; যে ধান্যের উপর আমাদের নিভাির, তাহার চাষও গোেরর উপর নিভাির-গোরই আমাদের অন্নদাতা। গোর কেবল ধান্য উৎপাদন করিয়াই ক্ষান্ত নহে; তাহা মাঠ হইতে গোলায়, গোলা হইতে বাজারে, বাজার হইতে ঘরে বহিয়া দিয়া যায়। ভারতবষের সমস্ত বহনকাৰ্য্য গোরই করে। গোর মরিয়াও দ্বিতীয় দধীচির ন্যায়, অস্থির দ্বারা, শঙ্গের দ্বারা ও চামড়ার দ্বারা উপকার করে। মাখে বলে, গোর হিন্দরে দেবতা; দেবতা নহে, কিন্তু দেবতার ন্যায় উপকার করে।
- যাব চন্দ্রনাথ বসা প্রণীত হিন্দবিবাহ বিষয়ক পন্ডিকা দেখ।
R
