পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীমদ্ভগবদগীতা করে, তাহার পক্ষে ইহাই শ্রেষ্ঠ ধৰ্ম্মম; যে না করে, তাহার পক্ষেও ইহা শ্রেষ্ঠ ধৰ্ম্ম। যে শ্ৰীকৃষ্ণে ভক্তি করে, তাহার পক্ষে ইহা শ্রেষ্ঠ ধৰ্ম্মম; ষে ভক্তি না করে, তাহার পক্ষেও ইহা শ্রেদ্ঠ ধৰ্ম্মম। যে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, তাহার পক্ষে ইহা শ্রেষ্ঠ ধৰ্ম্ম ; যে ঈশ্বরে বিশ্বাস নাও করে, তাহার পক্ষেও ইহা শ্রেচণ্ঠ ধৰ্ম্মম ; কেন না, চিত্তশদ্ধি ও ইন্দ্ৰিয়সংযম অনীশ্বরবাদীর পক্ষেও শ্রেষ্ঠ ধৰ্ম্মম; সেই চিত্তশদ্ধি এই গীতার উদ্দেশ্য। এরপ বিশ্বলৌকিক ও সব্বব্যাপক ধৰ্ম্ম আব্ব কখন পথিবীতে প্রচারিত হয নাই। যাঁহার যতটকুতে অধিকার, তিনি ততটকু গ্ৰহণ করবেন। যেখানে যাহার বিশ্বাস নাই, সেখানে সে অনধিকারী। যাঁহার যাহাতে অধিকার, তিনি তাহা হইতে পাইবেন। মাত্রাস্পশােস্তু কৌন্তেয় শীতোষ্ণসখদঃখদাঃ । আগমাপায়িনোহনিত্যাস্তাংস্তিতিক্ষসব ভারত ৷৷ ১৪ ৷৷ হে কৌন্তেয! ইন্দ্ৰিয়গণ এবং ইন্দ্রিয়ের বিষয়ে তৎসংযোগ,* ইহাই শীতোষ্ণাদি সখদঃখজনক । সে সকলের উৎপত্তি ও অপায় আছে, অতএব তাহা অনিতা, অতএব হে ভারত ' न कक उ२) की । S8 ! একাদশ শ্লোকে বলা হইল যে, যাহার জন্য শোক করা উচিত নহে, তাহার জন্য তুমি শোক করিতেছ। দ্বাদশ শ্লোকে এরপে অনাযোগ কবিবার কারণ নিন্দেশ করা হইল। সে কারণ এই যে, কেহই তা মরিবে না; কেন না, আত্মা অবিনাশী। তুমি কাটিয়া পড়িলেও সে থাকিবে, কেন না, তাহার আত্মা থাকিবে। একাদশ শ্লোক পাঠে জানা যায় যে, যখন গীতা প্রণীত হয়, তখন জন্মান্তর জনসমাজে গহীত। একাদশ শ্লোকে অজ্ঞজনের আপত্তি আশঙ্কা করিষা, ভগবান তাহারই খন্ডন কবিতেছেন। অজ্ঞজনে বলিতে পারেন, আত্মা না হষ বহিল। কিন্তু যখন দৈত্য গেল, তখন আমার আত্মীয ব্যক্তি, যাহার জন্য শোক করিতেছি, সে আব বহিল কৈ ? দেহান্তর প্রাপ্ত হইলে সে ত ভিন্ন ব্যক্তি হইল। এই আপত্তির আশঙ্কা করিষা ভগবান ত্রযোদশ শ্লোকে বলিতেছেন যে, এবপ ভেদ কলপনা করা অনচিত; কেন না, যেমন কৌমার, যৌবন জবা এক ব্যক্তিরই অবস্থান্তর মাত্ৰ, তেমনি দেহান্তরপ্রাপ্তিও অবস্থান্তর মাত্র। ইহাতে, ও অজ্ঞজনে আপত্তি করিতে পারেন যে না হয় স্বীকার করা গেল যে, দেহান্তরেও দেহীর একতা থাকে৷ -কিন্তু মাতুব একটা দঃখ-কষ্টস্ট ত আছেই ? এই সর্বজনগণ সেই কম্পট পাইবে-তােহা সমবণ কবিসা শোক কাবিল না কেন ? তাহদের বিরহে কাতর হইব না কেন ? তাহার উত্তরে ভগবান এই চতুৰ্দশ শ্লোকে বলিতেছেন যে, যে সকলকে তুমি এই দঃখ বলিতেছ, তাহা ইন্দ্রিয়ের বিষয়ের সঙ্গে ইন্দ্রিয়ের সংযোগ-জনিত ।। যতক্ষণ সেই সংযোগ থাকে, ততক্ষণ সেই দঃখ থাকে, সংযোগের অভাবে আব্ব সে দঃখ থাকে না। যেমন যতক্ষণ ত্বকের সঙ্গে রৌদ্রাদি উত্তাপের বা হিমের শৈত্যের সংযোগ হয়, ততক্ষণ উষ্ণ বা শীতস্ববােপ যে দঃখ, তাহা অনভূত করি রৌদ্রাদির অভাব হইলে আর তাহা থাকে না। যাহা থাকিবে না, অনিতা, তাহা সহ্য করাই উচিত। যে দঃখ সহ্য করিলেই ফরাইবে, তাহালি জন্য কষ্ট বিবেচনা করিব কেন ? এই সহিষ্ণতা বা ধৈৰ্য্যগণ থাকিলেই জীবন মধর হয। অভ্যাস করিলে অভ্যাসগণে আব কোন দঃখকেই দঃখবোধ হয না। তার পর এই গীতোক্ত সব্বানন্দময়ী ভক্তিতে মনষ্যেব জীবন অপবিসীম সমুখে আপ্লত হয়। দঃখমাত্র থাকে না। জীবনকে সংখময় করিবােব জন্য, গোড়াতে এই দঃখসহিষ্ণুতা আছে-তােহা ব্যতীত কিছ হইবে না। ইন্দ্ৰিয়গণের সহিত বহিৰিবষযের-সংযোগজনিত যে সখ-ভোগবিলাসাদি, তাহাও দঃখের মধ্যে গণ্য করিতে হইবে; কেন না, তাহার প্রতি অন্যরাগ জন্মিলে, তাহার অভাবও দঃখ বলিযা বোধ হয। এই জন্য “শীতোষ্ণ সংখদঃখ” একত্র গণনা করা হইয়াছে। +

  • মাত্রাশচ সপশাশচ, ইতি শঙ্করাঃ ।

1। এখানে মলে যে মাত্রা শব্দ আছে ও মাত্রাসপশ পদ আছে, তাহাব দই প্রকাব অর্থ কৰা যায়। উহাের দ্বারা ইন্দ্ৰিয়গণকে বঝাইতে পারে, এবং ইন্দুিয়গণের বিষয়কেও বাবাইতে পারে। শঙ্করাচাৰ্য্য বলেন,-“মাত্ৰা আভিন্মীয়ন্তে শব্দাদয় ইতি শ্রোতাব্দীনীন্দুিয়াণি, মাত্রাণাং সপশাঃ শব্দাদিভিঃ সংযোগাঃ।” শ্ৰীধর সবামীও ঐরাপ বলেন, যথা-‘মীয়ন্তে জ্ঞায়ন্তে বিষয়া আভিাবিতি মাত্রা ইন্দ্রিীয়বক্তব্যস্তাসাং পপশা বিষয়ৈঃ সহ সম্পন্বন্ধঃ (মাত্রাস্পশাঃ) {” মধ্যসািদন সরস্বতীও ঠিক তাই বলেন। পক্ষান্তরে, বিশ্বনাথ চক্রবত্তীর্ণ বলেন, “মাত্রা ইন্দ্ৰিয়গ্রাহ্যবিষয়াঃ ।” তাতেও বড় আসিয়া যাইত না, কিন্তু একজন ইংরেজ অনাবাদক Dav1" সমরণ করাইয়া দিয়াছেন যে, এই মাত্রা শব্দ লাটিন ভাষায়: Materia ও ইংরাজিতে Գֆֆ