পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী এই কাম কাহাকে আশ্রয় করিয়া থাকে ? ইন্দ্ৰিয় সকলকে এবং মন ও বদ্ধিকে। আত্মা হইতে পথক। আত্মাকে আশ্রয় করিতে পারে না। আত্মাকে বিমােন্ধ করিয়া রাখে। তস্মাতুমিন্দ্ৰিয়াণ্যাদৌ নিয়ম্য ভরতিষভ। পাপমানং প্ৰজহি হ্যেনং জ্ঞানবিজ্ঞাননাশনম ৷৷ ৪১ ৷৷ অতএব হে ভরতশ্রেষ্ঠ ! তুমি আগে ইন্দ্ৰিয়গণকে নিয়ত করিয়া, জ্ঞানবিজ্ঞানবিনাশী পাপস্বরপ কামকে বিনন্ট (বা ত্যাগ) করা। ৪১ ৷৷ যদি ইন্দ্ৰিয়গণই কামের অধিষ্ঠানভূমি, তবে আগে ইন্দ্ৰিয়গণকে নিয়ত করিতে হইবে। তাহা হইলে কামকে বিনন্ট করা হইবে। জ্ঞান বা বিজ্ঞানে প্ৰভেদ কি ? শ্ৰীধর বলেন, জ্ঞান আত্মবিষয়ক, বিজ্ঞান শাস্ত্রীয় অথবা “জ্ঞান শাস্ত্রাচায্যের উপদেশজাত, বিজ্ঞান নিদিধ্যাসজাত।” শঙ্করাচায্য বলেন, “জ্ঞান শাস্ত্র হইতে আচাৰ্য্যলব্ধ আত্মাদির অবরোধ। আর তাহার বিশেষ প্রকার অনভবই বিজ্ঞান।" পাঠক এই ব্যাখ্যা অপেক্ষা শ্ৰীধর স্বামীর ব্যাখ্যা প্রাঞ্জল বলিয়া গ্রহণ করিবেন। আমি বঝি যে, ইটকু বঝিতে পারিলেই আমাদের মত লোকের পক্ষে যথেষ্ট হইবে যে, কাম সব্বপ্রকার জ্ঞান আত্মার উন্নতির বিনাশক। r ইন্দ্ৰিয়াণি পর্যােণ্যাহরিান্দ্রিয়েভ্যঃ পরং মনঃ। মনসস্তু পরা বদ্ধিবদ্ধেযঃ পরতন্তু সঃ ৷৷ ৪২ ৷৷ এবং ব্যুদ্ধেঃ পরং বদ্ধবা সংস্তভ্যাত্মানিমাত্মনা। জহি শত্ৰং মহাবাহো কামরপং দারাসদম ৷৷ ৪৩ ৷৷ ইন্দ্ৰিয় সকল শ্রেষ্ঠ বলিয়া। কথিত: ইন্দ্ৰিয় সকল হইতে মন শ্রেদ্ঠ ; মন হইতে বদ্ধি শ্রেদ্ঠ : বদ্ধি হইতে তিনি শ্রেষ্ঠ । ৪২ ৷৷ এই রােপ বদ্ধির দ্বারা পরমাত্মাকে বঝিয়া আপনাকে স্তম্ভিত করিয়া, হে মহাবাহো! তুমি কামরূপ দরাসাদগ্ধ শত্রকে জয় কর । ৪৩ ৷৷ পাঠক প্রথম ৪২ শ্লোকের প্রতি মনোযোগ করন। ইহা অনাবাদে দাবোধ্য। বলা হইতেছে যে, ইন্দ্ৰিয়গণ শ্রেণীঠ বলিয়া কথিত । মন ইন্দ্রিয় হইতে শ্রেশঠ, ইত্যাদি। তবে ইন্দ্ৰিয়গণ কাহা হইতে শ্রেণীঠ ? ভাষ্যকারেরা বলেন, দেহাদি হইতে। তাহাই শ্লোকের অভিপ্ৰায় বটে, কিন্তু আধনিক পাঠক জিজ্ঞাসা করিতে পারেন, ইন্দ্ৰিয় কি দেহাদি হইতে সর্বতন্ত্ৰ ? অতএব প্রথমে বঝিতে হয়, ইন্দ্রিয় কি। দর্শনশাস্ত্ৰে কহে, চক্ষঃশ্রবণাদি পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্ৰিয়, হস্তপদাদি পাঁচটি কম্মেমন্দ্ৰিয়, এবং মন অন্তরিান্দ্রিয়। কিন্তু এ শ্লোকে মনকে ইন্দ্রিয় হইতে পথক। বলা হইতেছে। সতরাং জ্ঞানেন্দ্রিয় ও কমেন্দ্ৰিয়ই এখানে অভিপ্রেত। দেহাদি হইতে ইহা শ্রেষ্ঠ হইল কিসে? ভাষ্যকারেরা বলেন, ইন্দ্ৰিয় সকল সক্ষম ও প্রকাশক, দেহাদি ইন্দ্ৰিয়ের গ্রাহ্য। কিন্তু এ কথা কেবল জ্ঞানেন্দ্ৰিয় সম্পবন্ধেই সত্য। আর জ্ঞানেন্দ্রিয় সকল দেহাদি হইতে সর্বতন্ত্র নহে। তবে সািপম্পৰ্টতঃ ভাষ্যকারেরা দেহাদি শব্দের দ্বারা স্থলে পদাৰ্থ বা স্থলে ভূত অভিপ্ৰেত করিয়াছেন। স্থলে কথা এই যে, ইন্দ্ৰিয়ের বিষয় হইতে ইলিন্দ্ৰয় শ্রেশঠ। বক্তার অভিপ্রায় কি, তাহা মলে যে “আহঃ” পদ আছে, তাহার প্রতি মনোযোগ করিলে সন্ধান পাওয়া যাইবে। বক্তা নিজের মত বলিয়া ইহা বলিতেছেন না, এইরুপ কথিত হইয়াছে বলিয়া বলিতেছেন। কে এরপে বলিয়াছে ? সাংখ্যদর্শন সমরণ করিলেই এ প্রশেনর উত্তর পাওয়া যাইবে। তাহা বঝাইতেছি। সাংখ্যদর্শনে সমস্ত পদাৰ্থ পঞ্চবিংশতি গণে বিভক্ত হইয়াছে। পয্যায়ক্রমে পঞ্চবিংশতি গণ এইরুপ। ১ । প্রকৃতি । ৪ হইতে ১৯ । পঞ্চ তন্মাত্র ও একাদশ ইন্দ্রিয়। २ । भ२९ । २O-२8 1 **8 छब्न ट्रऊ । ৩ । অহঙকার । ২৫ । পরিষ।

  • দরাসাদ শব্দে দৰিবজ্ঞেয়, শ্ৰীধর সবামী বঝিয়াছেন।

a V8