পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবতত্ত্ব ও হিন্দধৰ্ম্ম-হিন্দযন্ম হিন্দ নয়? যদি না হয়—তবে কেন নয় ? ইহাদের মধ্যে তও যদি হিন্দয়ানি তবে হিন্দধৰ্ম্মম কি ? এক ব্যক্তি ধৰ্ম্মম ভ্ৰহ্মট, দ্বিতীয় আচার :”ಕ್ಹ ধৰ্ম্ম ? যদি আচার ধৰ্ম্ম না হয়, ধৰ্ম্মই ধৰ্ম্ম হয়, তবে এই আচারভ্রস্ট ধাৰ্ম্মিক ব্যক্তিকেই হিন্দ दळ८ऊ श्श ! उशऊ ऊा°ख कि? 皓 ইহার উত্তরে অনেকে বলিবেন যে, এ ব্যক্তি হিন্দীশাস্ত্ৰবিহিত আচারবান নহে, এজনী এ হিন্দ; নহে। কোথায় এ হিন্দধমের স্বরপ পাইব ? এ সকল লোকের বিশ্বাস যে, হিন্দীশাস্ত্ৰেই হিন্দধাম আছে। এই হিন্দীশাস্ত্র কি ? শাস্ত্ৰ তো অনেক। যে সকল গ্রন্থকে শাস্ত্র বলা যায়, তাহার যেখানে যাহা আছে, সকলই কি হিন্দ পশ্চিম ? যদি কোন গ্রন্থ হিন্দীশাস্ত্র বলিয়া এ দেশে মান্য হয়, তবে সে ‘মন সংহিতা' । মনতে আছে যে, যাদ্ধকালে শত্র“সেনা যে তাড়াগপঙ্করিণ্যাদির জলে স্নান পানাদি করে, তাহা নম্ৰাট করিবে।” যে হিন্দধমে তৃষিতকে এক গন্ডষে জলন্দানের অপেক্ষা আর পণ্য নাই বলে, সেই হিন্দধমেরই এই গ্রন্থে বলিতেছে যে, সহস্ৰ সহস্ৰ লোককে জলপিপাসাপীড়িত করিযা প্ৰাণে মারিবে। এটা কি হিন্দধৰ্ম্ম ? যদি হয়, তবে এরপে নিশংস ধর্মের পনেজীবনে কি ফল ? বস্তুতঃ এ হিন্দধৰ্ম্মম নহে, যাদ্ধনীতি মাত্র---কি উপায়ে যাদ্ধে জয়লাভ করিতে পারা যায়, তদ্বিষযক উপদেশ। যদি ইহা হিন্দধম্মী হয, তবে এ হিন্দধৰ্ম্মে মন্দবাদি অপেক্ষা মোলতকে ও নেপোলিয়ন অধিক অভিজ্ঞ। স্থল কথা এই মনতে যাহা কিছ আছে, তাহাই যে ধৰ্ম্ম নহে, ইহা এক উদাহরণেই সিদ্ধ হইতেছে। এ সকলকে যদি ধৰ্ম্মম বলা যায়, তবে সে ধৰ্ম্মম: শব্দের অপব্যবহার। যখন বলি, চোরের ধৰ্ম্মম লকোচুরি, তখন যেমন ধৰ্ম্ম শব্দ অর্থান্তরে প্রযক্ত হয়, এ সকল বিধিকে “রাজধৰ্ম্ম৷” ইত্যাদি বলা, সেইরূপ। তবে মনতে যাহা যাহা পাই, তাহাই যদি ধৰ্ম্ম নহে, তবে জিজ্ঞাস্য, মনগ্ন কোন উক্তিগলিতে হিন্দধৰ্ম্ম আছে এবং কোন গলিতে নাই, এ কথা কে মীমাংসা করিব ? যদি মন্দবাদি ঋষিরা অভ্রান্ত হন, তবে তাঁহাদের সকল উক্তিগলিই ধৰ্ম্ম-যদি তাঁহাই ধৰ্ম্মম হয়, তবে ইহা মক্তকণ্ঠে বলা যাইতে পারে যে, হিন্দধম্মানসারে সমাজ চলা অসাধ্য। মন হইতেই একটা উদাহরণ দিয়া আমরা দেখাইতেছি। মনে কর, কাহারও পিতৃশ্ৰাদ্ধ উপস্থিত। হিন্দীশাস্ত্ৰমতে শ্রাদ্ধে ব্ৰাহ্মণভোজন করাইতে হইবে। কাহাকে নিমন্ত্ৰণ করিবে ? মনতে নিষেধ আছে যে, যে রাজার বেতনভুক তাহাকে খাওয়াইবে না; যে বাণিজ্য করে, তাহাকে খাওয়াইবে না ; যে টাকার সােদ খায়, তাহাকে খাওয়াইবে না; যে বেদাধ্যয়নশন্য, তাহাকে খাওয়াইবে না; যে পরলোক মানে না, তাহাকে খাওয়াইবে না; যাহার অনেক যজমান, তাহাকে খাওয়াইবে না; যে চিকিৎসক, তাহাকে খাওয়াইবে না; যে শ্রেণীতসমাত্তি অগ্নি পরিত্যাগ কবিয়াছে তাহাকে খাওয়াইবে না; যে শদ্রের নিকট অধ্যয়ন করে, কি শদ্রেকে অধ্যয়ন করায়, যে ছল করিয়া ধৰ্ম্মম কম করে, যে দন্তজািন, যে পিতামাতার সহিত বিবাদ করে, যে পতিত লোকের সহিত অধ্যয়ন করে, ইত্যাদি বহবিধ লোককে খাওয়াইবে না। এমন কথাও আছে যে, মিত্র ব্যক্তিকেও ভোজন করাইবে না। ইহা মক্তকণ্ঠে বলা যাইতে পারে যে, মনর এই বিধি অনসারে চলিলে শ্ৰাদ্ধকলোিম আজিকার দিনে একটিও ব্রাহ্মণ পাওয়া যায় না। সতরাং শ্ৰাদ্ধাদি পিতৃকাৰ্য্য পরিত্যাগ করিতে হয়। অথচ যে বাপের শ্রাদ্ধ করিল না, তাহাকেই হিন্দ বলি কি প্রকারে ? এইরােপ ভুরি ভুরি উদাহরণেব দ্বাৰা প্রমাণ করা যাইতে পারে যে, সব্বাংশে শাস্ত্রসম্মত যে হিন্দধাম, তাহা কোনরপে এক্ষণে পািনঃসংস্থাপিত হইতে পারে না; কখন হইয়াছিল কি না, የጫ তদ্বিষযে সন্দেহ। আর হইলেও সেরাপ হিন্দধমে এক্ষণে সমাজের উপকার হইবে না, ইহা এক প্রকার নিশ্চিত বলা যাইতে পারে। যদি সমস্ত শাস্ত্রের সঙ্গে সব্বাংশে সংমিলিত যে হিন্দধৰ্ম্ম তাহা পািনঃসংস্থাপনের সম্ভাবনা না থাকে, তবে এক্ষণে আমাদিগের কি করা কত্তব্য? দইটি মাত্র পথ আছে। এক, হিন্দধৰ্ম্ম একেবারে পরিত্যাগ করা, আর এক হিন্দধমের সারভাগ অর্থাৎ যেটকু লইয়া সমাজ চলিতে পারে, এবং চলিলে সমাজ উন্নত হইতে পারে, তাহাই অবলম্বন করা। হিন্দধৰ্ম্ম একেবারে পরিত্যাগ করা আমরা ঘোরতর অনিষ্টকর মনে করি। যাঁহারা হিন্দধৰ্ম্ম একেবারে পরিত্যাগ ভিসন্দ্যাচ্চৈািব তাড়াগানি প্রাকারৌপরিখাস্তথা ইত্যাদি। ৭ম অধ্যায়, ১৯৬। a Ga