পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী যদিও এই ব্যাখ্যা প্রকৃত নহে এবং আদৌ অসাের ও দেব উভয় শব্দ একাৰ্থিবাচক ছিল, তথাপি শেষাবস্থায় দেবদ্বেষী দিগকেই ষে অসাের বলা হইত, ইহা যথার্থ। যখন বেদে পড়ি যে, বন্দ্ৰ নমচি শম্বর প্রভৃতি অসারগণ ইন্দ্রের দ্বেষক ছিল এবং ইন্দ্র ইহাদিগকে বজ্ৰদ্বারা বধ করিলেন তখন অনেক স্থানেই বঝিতে পারি যে, এই সকল অসাের বন্টির বিঘা মাত্র, বমিন্টনিরোধক প্রাকৃতিক ক্রিয়া মাত্র। আকাশ বজ্ৰপাত করিয়া বান্টি আরম্ভ করেন, অমনি সে অসরেরা মরিয়া যায়। অমনি ইন্দ্রের বজে বত্ৰি মরে। “বজেণ হত্বা নিরাপঃ সসজ” “বজেণ যানি অতৃণাং নদীনাং” “ইন্দ্রো অশো আপাং প্রৈরয়দহীহাচ্চ সমদ্রং” এমন কথা অনেক পাওয়া যায়। প্রথম মন্ডলের ৩২ সক্তের ২ ঋকে আছে যে, “বাশ্রা ইব ধেনবঃ স্যন্দমানঃ অঞ্জঃ সমদ্রমবজগমােরাপঃ” বত্রাসাের হত হইলে পর রদ্ধগতি নদী সকল বেগের সহিত সমন্দ্রে প্রবাহিত হইয়াছিল, যদ্রপে গো সকল হামবারব করিয়া সত্বর বংসের নিকট গমন করে। এই সকল কথার মৰ্ম্ম এই যে, বল্লাদি অসাের বধ হইলেই জল ছোটে। অতএব অসার-বধ আর কিছই নহে-বান্টির বিঘা সকল বিনাশ করিয়া বর্ষণ করা। সচরাচর দেখা যায় যে, গ্রীল্ডেমর পর প্রথম বাল্টিতে অধিক বজাঘাত হয়, এই জন্য বজের দ্বারা ইন্দ্ৰ অসাের বধ করেন। কিন্তু কেবল বজের দ্বারা নহে, “হিমেন অবিধাদকবন্দং" ৮ ৷৷ ৩২ ৷৷ ২৬, (হিমেন, হিমের দ্বারা অর্থাৎ আমরা যাহাকে শিল বলি তন্দ্বারা)। শঙ্ককালের পর প্রথম বন্টির সময়ে অনেক সময়ে শিল (hail) পড়ে। পানশাচ “অপাম ফেনেন নম চেঃ শির ইন্দ্ৰ উদবত্তীয়ৎ" ৮।। ১৪ । ১৩ জলের ফেনার দ্বারা ইন্দ্ৰ নমচির মস্তক উদ্বত্তন করিলেন। ঝড় বন্টির চোটে অসরটা মারা গেল । অতএব নমচি বত্র শম্বর অহি প্রভৃতি আসরেরা বান্টি-নিরোধক প্রাকৃতিক ক্রিয়া ভিন্ন অন্য কিছই যে নহে, ইহা সম্পন্টই দেখা যাইতেছে। কিন্তু ইহারা পরাণেতিহাসের অনেক মালমসলা যোগাইয়াছে। ইন্দ্র বাল্টিকারী আকাশ, শািন্ধ এই কথাটকু লইয়া পরাণেতিহাসের উপন্যাস সকল কি প্রকারে রচিত হইয়াছে, তাহার। আর একটা উদাহরণ দিতেছি। অহল্যার গলপ সকলেই জানেন। কথিত আছে, ইন্দ্র গৌতমপত্নী অহল্যাকে হরণ করেন এবং ঋষির শাপে তাঁহার অঙ্গ সহস্রধা বিকৃত হয়। তাহার পর আবার ঋষিবাক্যে সেই বিকার সহস্ৰ চক্ষে পরিণত হয়। উপন্যাসটা শনিতে অতি কদৰ্য্য এবং এইরহপ উপন্যাসের জন্যই হিন্দীশাস্ত্র লক্ষ গালি খাইয়াছে। আর এই সকল উপন্যাসই হিন্দধম্মেমর প্রতি শিক্ষিত সম্প্রদায়ের এত অভক্তির কারণ হইয়াছে। ইউরোপীয় পশিডত সাহেবরাও-অন্যে নয়, মর, মাক্ষমলার, লাসেন প্রভূতি, পড়িয়া শনিয়া স্থির করিয়াছেন যে, লাম্পট্যাপ্রিয় হিন্দীশাস্ত্রকারেরা লাম্পট্যুপ্রিয়তাবশতঃই, ইন্দ্রাদি দেবতাকে লম্পট বলিয়া চিত্রিত কারিয়াছে। কিন্তু কথাটা বড় সোজা। ইন্দ্ৰ সহস্রাক্ষ কিন্তু ইন্দ্ৰ আকাশ। আকাশের সহস্ৰ চক্ষ কে না। দেখিতে পায় ? সাহেবরা কি দেখিতে পান না যে, আকাশে তারা উঠে ? সহস্র তারাযজ্ঞ আকাশ, সহস্রােক্ষ ইন্দ্ৰ। কথাটা আমি নতেন গাড়িতেছি না-অনেক সহস্ৰ বৎসরের কথা। প্রাচীন গ্রীসেও এ কথা প্রচলিত ছিল। তবে আমরা বলি, ইন্দ্র সহস্রাক্ষ; তাহারা বলে, আগািস শতাক্ষ * পাঠক বলিতে পারেন, তাহা হউক, কিন্তু অহল্যার কথাটা আসিল কোথা হইতে ? সকলেই জানেন হল বলে। লাঙ্গলকে। অহল্যা অর্থাৎ যে ভূমি হলের দ্বারা কষিত হয় না-কঠিন,

  • Even where the tellers of legends may have altered or forgotten its earlier mythic meaning, there are often sufficient grounds for an attempt to restore it.'" For instance the Greeks had still present to their thought the meaning of Argos Panoptes, Io's hundred eyed all seeing guard, who slain by Hermes and changed into a peacock, for Macrobus writes as recognizing in him the star-eyed heaven itself, even as the Aryan Indra-the Sky-is the 'thousand eyed.'

Tylor's Primitive Culture, p. 230, Vol. I. GSO