পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बभ्का ब्रष्नाबळ সংখ্যক, একশত আশী। এ দেশে ঝড়ের যে দৌরাত্ম্য, তাহাতে এক লক্ষ আশী হাজার বলিলেও অত্যুক্তি হইত না। ইহাদিগকে কখন কখন রন্দ্র বলা হইয়া থাকে। রািদ ধাতু চীৎকারার্থে রােব্দ ধাতু হইতে রোদন শব্দ হইয়াছে। রদ ধাতুর পর সেই “র” প্রত্যয় করিয়া র.দ্র শব্দ হইয়াছে। ঝড় বড় শব্দ করে, এই জন্য মরগণকে রন্দ্র বলা হইয়াছে সন্দেহ নাই। কোথাও বা মরগণকে রদের সন্ততি বলা হইয়াছে। তার পর অগ্নিদেবতা। অগ্নিও আমাদের নিকট এত সপরিচিত যে, তাঁহারও কোন পরিচয় দিবার প্রয়োজন নাই। কিছ পরিচয় দেওয়াই হইয়াছে। ঋগোিবদে আর একটি দেবতা আছেন, তাহাকে কখন বহিস্পতি কখন ব্ৰহ্মণসপতি বলা হইয়া থাকে। কেহ কেহ বলেন, ইনি অগ্নি, কেহ কেহ বলেন, ইনি ব্ৰহ্মণ্যদেব। সে যাহাই হউক, ব্রহ্মণসাপতির সঙ্গে আমাদের আর বড় সম্প্ৰবন্ধ নাই। বহিস্পতি এক্ষণে দেবগরে অথবা আকাশের একটি তারা। অতএব তাঁহার সম্পবন্ধে বড় বিশেষ বলিবার প্রয়োজন নাই। সোমকে এক্ষণে চন্দ্ৰ বলি, কিন্তু ঋগ্বেদে তিনি চন্দ্ৰ নহেন। ঋগ্বেদে তিনি সোমরসের दका । অশ্বীদ্বয় পরাণেতিহাসে অশ্বিনীকুমার বলিয়া বিখ্যাত। কথিত আছে যে, তাঁহারা সায্যের ঔরসে অশ্বিনীর গভে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। এই জন্য তাঁহাদিগের পৌরাণিক নাম অশ্বিনীকুমার। এমন বিবেচনা করিবার অনেক কারণ আছে যে, তাঁহারা শেষরাত্রির দেবতা; উষার পািব্বগামী দেবতা। আর একটি দেবতা তুষ্টা। পরাণেতিহাসে বিশ্বকৰ্ম্মমা যাহা, ঋগ্ৰেবাদে স্থােটা ত হই। অর্থাৎ দেবতাদিগের কারিগর। যমও ঋগ্বেদে আছেন। কিন্তু যমও আমাদিগের নিকট বিশেষ পরিচিত। যমদেবতার একটি গঢ় তাৎপৰ্য্য আছে, তাহা সময়ান্তরে বাবাইবার প্রয়োজন হইবে। ত্ৰিত আগুপ্ত্য অজ একপাদ প্রভৃতি দই একটি ক্ষদ্র দেবতা আছেন, কখন কখন বেদে তাঁহাদিগের নামোল্লেখ দেখা যায়। কিন্তু তাঁহাদের সম্প্ৰবন্ধে এমন কিছই কথা নাই যে তাঁহাদের কোন পরিচযা দিবার প্রয়োজন করে। বৈদিক দেবীদিগের মধ্যে অদিতি পথিবী এবং উষা এই তিনেরই কিঞ্চিৎ প্রাধান্য তাছে। অদিতি ও পথিবীর কিঞ্চিৎ পরিচয় দিয়াছি। উষার পরিচয় দিবােব প্রযোজন নাই, কেন না, যাহার ঘােম একটা সকালে ভাঙ্গিয়াছে সেই তাহাকে চিনে। সরস্বতীও একটি বৈদিক দেবী। তিনি কখন নদী কখন বাগদেবী। গঙ্গা-সিন্ধ প্রভৃতি ঋগ্বেদে স্তুত হাইসাছেন। ফলতঃ ক্ষদ্র বৈদিক দেবীদিগের সবিস্তার বণনে কালহবণ করিয়া পাঠকদিগকে আর কল্ট দিবার প্রয়োজন নাই। আমরা এইখানে বৈদিক দেবতাদিগের ব্যক্তিগত পরিচয় সমাপ্ত করিলাম। কিন্তু আমরা বৈদিক দেবতাতত্ত্ব সমাপ্ত করিলাম না। আমরা এখন বৈদিক দেবতাতত্ত্বের স্থলে মন্ম বঝিবার চেন্টা করিব। তার পর বৈদিক ঈশ্বরতত্ত্বে প্রবত্ত হইবার চেষ্টা করিব।--‘প্রচার, ১ম বর্ষ, * ミSS-Sb দেবতত্ত্ব আমরা দেখিয়াছি যে, বেদের ইন্দ্রাদি দেবতারা কেহ বা আকাশ, কেহ বা সােয্য, কেহ বা অগ্নি, কেহ বা নদী; এইরহপ অচেতন জড়পদার্থ মাত্র। বেদে এইরপ অচেতন জড়পদার্থের উপাসনা কেন ? এরপ উপাসনা কোথা হইতে আসিল ? ইহার উৎপত্তির কি কে ন কারণ আছে ? অদ্য এই বিষয়ের অন্যসন্ধানে প্রবত্ত হইব। বিস্ময়ের বিষয় এই যে, কেবল বৈদিক হিন্দরাই এই ইন্দ্রাদির উপাসনা করিতেন না। পথিবীর অনেক সভ্য এবং অসভ্য জাতি৷ ই হাদিগের উপাসনা করিত এবং এখনও করিয়া থাকে। সেই সকল জাতিমধ্যে এই দেবতাদিগের নাম ভিন্ন প্রকার বটে, কিন্তু উপাস্য দেবতা একই। আমরা কেবল প্রাচীন আৰ্য্যজাতিসম্পভূত যোন, রোমক প্রভৃতি জাতিদিগের কথা বলিতেছি না। হিন্দরা যে জাতি হইতে জন্মগ্রহণ করিয়াছে, তাহারাও সেই জাতি হইতে জন্মগ্রহণ করিয়াছিল; সতরাং একই বংশে একই দেবতার উপাসনা যে প্রচলিত থাকিবে ইহা বিস্ময়কর নহে। θOO