পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবতত্ত্ব ও হিন্দী ধৰ্ম্ম-হিন্দী ধৰ্ম্ম সম্পবন্ধে একটি স্থলে কথা ahli হয় নাই, তাহার পক্ষে ঈশ্বরজ্ঞান অসম্ভব। বহি না পড়িলে যে চিত্তব্বত্তি সকল অনশীলিত হয় না। এমন নহে। কিন্তু যে প্রকারেই হউক, বদ্ধি, ভক্তি প্রভৃতির সম্যক অনশীলন ভিন্ন ঈশ্বরজ্ঞান অসম্ভব। তাহা না থাকিলে, ঈশ্বর নামে কেবল দেবদেবীর উ उठद । অতএব বদ্ধির মাডিজতাবস্থা ভিন্ন মনীষাহাদয়ে ঈশ্বরজ্ঞানোদয়ের সম্ভাবনা নাই। কোন জাতি যে পরিমাণে সভ্য হইয়া মাজিজািতবদ্ধি হয়, সেই পরিমাণে ঈশ্বরজ্ঞান লাভ করে। এ কথার প্রতিবাদে যদি কেহ প্রাচীন যিহদীদিগের দলটান্ত দেখাইয়া বলেন যে, তাহারা প্রাচীন গ্ৰীক প্রভৃতি জাতির অপেক্ষায় সভ্যতায় হীন হইয়াও ঈশ্বরজ্ঞান লাভ কবিযাছিল, তদ, ওয়ে বক্তব্য এই যে, য়িহদীদিগের যে ঈশ্বরজ্ঞান বস্তুতঃ ঈশ্বরজ্ঞান নহে। জিহোবা এক অগা-রো আমাদের পাশচাত্ত্য শিক্ষকদিগের কৃপায় ঈশ্বর বলিয়া বিশ্বাস করিতে শিখিয়াছি, কিন্তু জিাহানা য়িহদশদিগের একমাত্র উপাস্য দেবতা ও ইলেও ঈশ্বর নহেন। তিনি রাগদ্বেষপরতন্ত্র পক্ষপাতী মনয্যেপ্রকৃত দেবতামাত্র। পক্ষান্তরে সশিক্ষিত গ্রাকেয়, ইহার অপেক্ষা উন্নত ঈশ্বরজ্ঞানে উপস্থিত হইযছিলেন। খািল্টধৰ্ম্মাবলম্বীদিগেব যে ঈশ্বরজ্ঞান, যিশ, যিহদী হইলেও, সে জ্ঞান কেবল য়িহদীদিগেরই নিকট প্রাপ্ত নহে। খািল্টধর্মের যথাৰ্থ প্রণেতা সেন্ট পল। ৩নি গ্রীকদিগের শাস্ত্রে অত্যন্ত সশিক্ষিত ছিলেন। সব্বাপেক্ষা বৈদিক হিন্দরাই অলপকালে সভ্যতার পদবীতে আপঢ়ি হইয়া ঈশ্বরজ্ঞানে উপস্থিত হইয়াছিলেন। আমবা এ পধি স্ত বৈদিক ধক্ষেণের বেবিল দেবতl৩ওঁই সমালোচনা করিয়াছি। কেন না সেইটা গোড়া, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পরিপক্ক যে বৈদিক ধৰ্ম্ম, তাহা অতি উন্নত ধৰ্ম্মম , এবং এক ঈশ্বরের উপাসনাই তাহার স্থল মৰ্ম্মম। তবে বলিবাব। কথা এই যে, প্রথম হিন্দরো, একেবারে গোড়া হইতে ঈশ্বরজ্ঞান প্রাপ্ত হয। নাট । জাতিকতৃক ঈশ্ববজ্ঞান প্রাপ্তির সচরাচর ইতিহাস এই যে, আগে নৈসর্গিক পদাৰ্থ বা শক্তিতে ক্রিযমান চৈতনা আরোপ করে, অচেতনে চৈতন্য আরোপ করে। তাহাতে কি প্রকারে দেলোৎপত্তি হয় তাহ পাবে দেখাইয়াছি। এই প্রণালী অনসারে, বৈদিকেরা কি প্রকাবে ২) "দ্রাদি দেব পাইবাছিলেন, তাহা দেখাইয়াছি। এই অবস্থায় জ্ঞানেব উন্নতি হইলে উপাসকেরা দেখিতে পান যে, আকাশের উপাসনা করি, বায়রই উপাসনা করি, মেঘেরই উপাসনা করি, আর অগ্নিরই উপাসনা করি, এই সকল পদার্থই নিয়মের অধীন। এই নিয়মেও সর্বত্র একত্ব, এক স্বভাব দেখা যায়। ঘোল মিউনির তাড়নে ঘোল, আর বাতাতাড়িত সমদ্র এক নিয়মে বিলোড়িত হয়; যে নিযমে আমার হাতের গ’ড ষের জল পড়িয়া যায়, সেই নিয়মেই আকাশের নৃস্টি পথিবীতে পড়ে। এক নিয়তি সকলকে শাসন করিতেছে; সকলই সেই নিয়মের অধীন হইযা আপন আপন কৰ্ম্মম সম্পাদন করিতেছে, কেহই নিয়মকে ব্যতিক্ষণ করিতে পারেন না। তবে ইহাদেরও নিশমকত্তা, শাস্তা এবং কারণসাবরােপ আর একজন আছেন। এই বিশ্বসংসারে যাহা কিছল আছে সকলই সেই এক নিয়মে চালিত; অতএব এই বিশ্বজগতের সকাংশই সেই নিয়মকৰ্ত্তার প্রণীত এবং শাসিত। ই এদি হইতে রেণী:কণা পৰ্য্যন্ত সকলই এক নিয়মের অধীন, সকলই এক জােনর সম্পট ও রক্ষিত, এবং এক জনই তাহার লয়কত্তা। ইহাই সরল ঈশ্বরজ্ঞান। জড়েল উপাসনা হইতেই ইহা অনেক সময়ে উৎপন্ন হয়, কেন না, জড়ের একতা ও নিয়মাধীনতা ক্ৰমশঃ উপাসকের হৃদয়ঙ্গম হয়। তবে ঈশ্বরজ্ঞান উপস্থিত হইলেই যে দেবদেবীর উপাসনা লিপ্ত হইবে এমন নহে। যাহাদিগকে চৈতন্যবিশিষ্ট বলিয়া পর্বে বিশ্বাস হইয়াছে, জ্ঞানের আরও অধিক উন্নতি না হইলে, বিজ্ঞানশাস্ত্রের বিশেষ আলোচনা ব্যতীত, তাহাদিগনেক জড় ও অ৮ে গ্রন বলিয়া বিবেচনা হয় না। ঈশ্বরজ্ঞান এই বিশ্বাসের প্রতিষেধক হম না। ঈশ্বর জগৎসুলটা হউন, কিন্স ইন্দ্রাদিও আছে, এই বিশ্বাস থাকে- তবে ঈশ্বরজ্ঞান হইলে উপাসক। ইহা বিবেচনা করে সে, এই ইন্দ্রাদিও সেই ঈশ্বরের সল্ট, এবং তাঁহার নিয়োগানসারেই সব সব ধৰ্ম্মম পালন করে। ঈশ্বর যেমন মনষ্যে ও জীবগণকে সন্টি করিয়াছেন, তেমনি ইন্দ্রাদিকেও করিয়াছেন; এবং মনষ্যে ও জীবগণকে যেমন পালন ও কলেপ কলেপ ধবংস করে, ইন্দ্রাদিকেও সেইরাপ করিয়া থাকেন। তবে ইন্দ্রাদিও মনষ্যের উপাস্য, এ কথাতেও বিশ্বাস থাকে, কেন না, ইন্দ্রাদিকে লোকোত্তর শক্তিসম্পন্ন ও ঈশ্বর কত্ত্বক লোক রক্ষায় নিযক্ত বলিয়া বিশ্বাস থাকে। এই কারণে ঈশ্বরজ্ঞান জন্মিলেও, জাতি মধ্যে দেবদেবীর উপাসনা উঠিয়া যায় না। হিন্দধৰ্ম্মে তাহাই ঘটিয়াছে। ইহাই প্রচলিত সাধারণ হিন্দধৰ্ম্ম-অৰ্থাৎ লৌকিক হিন্দধৰ্ম্ম, বিশদ্বন্ধ হিন্দধাম নহে। লৌকিক হিন্দধৰ্ম্ম এই যে,